দরকারের সময় ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের রাজপথে দেখতে চায় তৃণমূল



সমাবেশ যোগ দিতে আসা নেতাকর্মীরা (ছবি: ফোকাস বাংলা)জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সাত দফা দাবি আদায়ে আগামী দিনের আন্দোলন-সংগ্রামে কেন্দ্রীয় ও শীর্ষ নেতাদের রাজপথে দেখতে চান তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। মঙ্গলবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সমাবেশে যোগ দেওয়া ঐক্যফ্রন্টভুক্ত দলগুলোর নেতাকর্মীরা বলেন, নেতারা মঞ্চে যেভাবে আন্দোলনের কথা বলেন, তেমনি আগামী দিনের আন্দোলনেও তারা যেন সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন।


তৃণমূল নেতাকর্মীদের ভাষ্য, বিগত দিনের মতো পালিয়ে বা বোরকা পরে বা অসুস্থতার নামে অনুপস্থিত থাকলে আগামী দিনের আন্দোলনও ব্যর্থ হবে।
মঙ্গলবারের জনসভাকে কেন্দ্র করে সকাল থেকেই উদ্যানে জড়ো হতে থাকেন ঢাকার আশপাশসহ বিভিন্ন জেলার নেতাকর্মীরা।
সমাবেশে আসা ঢাকার সাভারের বাকরতা ইউনিয়নের যুবদল নেতা উজির হোসেন বলেন, ‘আগামী দিনের আন্দোলনে কেন্দ্রীয় নেতাদের পেছনে থাকবো। তারা আমাদের নেতৃত্ব দেবেন। জয় আমাদের হবেই। ঘরে বসে আন্দোলন হয় না। আমরা মাঠে মরবো, নেতারা ঘরে বসে আয়েশ করবেন, এটা হতে পারে না। আমরা চাই কেন্দ্রীয় নেতারা সামনে থেকে আন্দোলন করবেন। আমরা তাদের পেছনে থাকবো।’
পথে পথে বাধার মুখে পড়েও সমাবেশে যোগ দেন মুন্সিগঞ্জ জেলা বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা— এমন দাবি করে মুন্সিগঞ্জ জেলা বিএনপির সহসভাপতি জসিম উদ্দিন বলেন, ‘শত কষ্ট সহ্য করে নেতাকর্মীরা রাজপথে রয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা সবসময় মাঠে ছিলাম, আছি। ভবিষ্যতেও থাকবো। শুধু আমরা থাকলেই হবে না। কেন্দ্রীয় নেতাদেরও রাজপথে থাকতে হবে। আমরা তাদের সঙ্গে নিয়ে, তাদের নেতৃত্বে গণতন্ত্র মুক্তির আন্দোলন করবো। আশা করি, অতীতের মতো নেতারা ঘরে বসে থাকবেন না। তারাও মাঠে থাকবেন। তাদের রক্ষা করার দায়িত্ব আমাদের।’
কর্মীরা রাজপথে থাকবে, তাদের সঙ্গে কেন্দ্রীয় নেতাদের আন্দোলনের অগ্রভাগে থাকবেন বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন নাগরিক ঐক্যের কর্মী নাজমুল ইসলাম। মিরপুর কালশি থেকে আসা এই কর্মী বলেন, ‘নেতারা সামনে না থাকলে কর্মীরা ভরসা পান না। তারা মাঠে থাকলে আন্দোলন বেগবান হয়। ভবিষ্যৎ আন্দোলনে নেতারা নেতৃত্ব দেবেন, আমরা রাজপথে নেমে অধিকার আদায় করবো।’
লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জের একটি ওয়ার্ড সেচ্চাসেবক দলের নেতা করিম চোকিয়া অভিযোগ করে বলেন, মঞ্চ থেকে আন্দোলনের ডাক দিয়ে রাস্তায় কেন্দ্রীয় নেতারা থাকেন না। তিনি বলেন, ‘আমাদের রাস্তায় নামিয়ে আপনারা (কেন্দ্রীয় নেতা) ঘরে বসে থাকবেন, এটা হতে দেওয়া যাবে না। তাহলে আমরাও মাঠে থাকবো না।’ নেতারা মাঠে থাকলে তারা জীবন দিতেও প্রস্তুত বলে মন্তব্য করেন তিনি।
জনগণের স্বার্থে রাজপথে জীবন দেবো বলে মন্তব্য করেন সুনামগঞ্জ বিএনপির সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য কলিম উদ্দিন আহম্মেদ মিলন। তিনি বলেন, ‘এটা গণতন্ত্র রক্ষার শেষ আন্দোলন। আমাদের রাজপথে থাকতেই হবে। আমরা সবাইকে নিয়ে রাজপথে আন্দোলন করে দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনবো, মানুষের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনবো আমরা।’
টাঙ্গাইল থেকে আসা কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের কর্মী রফিক উদ্দিন বলেন, ‘জনগণ এই সরকারের ওপর আস্থা হারিয়েছে। কেউ তাদের কথা বিশ্বাস করে না। সাত দফা দাবি আদায়ে আমরা জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে যোগ দিয়েছি। আমরা রাজপথে থাকবো। অধিকার আদায় করবো। আমাদের নেতারা নিশ্চই মাঠে থেকে নেতৃত্ব দেবেন।’
ঢাকার বংশাল থানা বিএনপির কর্মী আলী আব্বাস বলেন, ‘আমরা কর্মীরা রাজপথে বেইমানি করি না। বরং নেতাদের পাওয়া যায় না। কেন্দ্রীয় নেতারা পালিয়ে বেড়ান।’
নারায়ণগঞ্জ আড়াইহাজারের যুবদল নেতা মো. শাহ পরান বলেন, ‘আমাদের সাত দফা মানতে হবে। না মানলে রাজপথে আন্দোলন হবে। সেই আন্দোলনে আগের মতো কেন্দ্রীয় নেতারা ঘরে থাকলে গণতন্ত্র মুক্তি পাবে না। আমাদের নেত্রীও (খালেদা জিয়া) মুক্তি পাবে না। রাজপথে থেকে সবাইকে আন্দোলন করতে হবে।’