প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে (সিইসি) স্মারকলিপি দেওয়ার পর সংবাদ সম্মেলন করেছেন ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র ও বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি সংবাদ সম্মেলনে স্মারকলিপি পড়ে শোনান।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, ‘বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় ভয়ভীতির পরিবেশে ভোটারদের মাঝে আস্থা ফিরিয়ে আনার কাজে সেনাবাহিনীর ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। ডিসেম্বরের ১৫ তারিখে সেনাবাহিনী মাঠে নামবে বলে ঘোষণা দেওয়া হলেও কোনও অদৃশ্য কারণে সে তারিখ পরিবর্তন করে ২৪ ডিসেম্বর মাঠে নামানো হয়। শুধু তাই নয়, ২৪ তারিখে সেনাবাহিনী মাঠে নামলেও তাদেরকে নিষ্ক্রিয় করে রাখা হয়। ফলে ওইদিন থেকে বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টের নেতাকর্মীদের ওপর অত্যাচার-নির্যাতন, হামলা-মামলার পরিমাণ আরও বেড়ে যায় এবং নির্বাচনের দিন পর্যন্ত তা অব্যাহত থাকে। কিন্তু এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছ থেকে কোনও প্রতিকারই পাওয়াই যায়নি।’
স্মারকলিপিতে দাবি করা হয়, ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় নির্বাচনের আগের রাত ১টার মধ্যে সব দোকানপাট বন্ধ করে সারাদেশে ভুতুড়ে পরিবেশ তৈরি হয়। নির্বাচনের আগের রাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং ভোটগ্রহণ কর্মকর্তার সহায়তায় আওয়ামী কর্মীরা ৩০ থেকে ৬০ শতাংশ ভোট কেটে ব্যালট বাক্স ভর্তি করে। নির্বাচনের দিন সকালে ভোটকেন্দ্র এবং কেন্দ্রের আশপাশের মোড়ে লাঠিয়াল বাহিনী মহড়া এবং ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে যেতে বাধা দেয়। এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সবস্তরের সদস্যদের কাছে সহযোগিতা চাইলেও তারা কোনও পদক্ষেপ নেয়নি, অনেক ক্ষেত্রে ভোটারদের ভোট না দিয়ে ফিরে যেতে বাধ্য করা হয়।’
স্মারকলিপিতে অভিযোগ করা হয়, ‘অসংখ্য ভোটকেন্দ্রে ১০০ শতাংশ ভোট সংগ্রহ করা হয় যা ছিল নজিরবিহীন এবং বাস্তবে একেবারেই অসম্ভব। বিদেশি পর্যবেক্ষক ও গণমাধ্যমকর্মীদের দেখানোর জন্য ঢাকাসহ অন্যান্য মেট্রোপলিটন এলাকায় লোকজন এনে জড়ো করে লাইনে দাঁড় করিয়ে রাখে কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তারা সংশ্লিষ্ট এলাকার ভোটার নয়।’
স্মারকলিপির শেষে দাবি করা হয়, ‘বর্ণিত অবস্থায় দীর্ঘ দশ বছর ভোটাধিকার বঞ্চিত জনগণকে প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে আবারও বঞ্চিত করার দায় নির্বাচন কমিশনকেই বহন করতে হবে। এজন্য অনতিবিলম্বে নির্বাচন বাতিল করে নিরপেক্ষ সরকারের অধীন জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জোরালো দাবি জানাচ্ছি।’