ডাকসু নির্বাচন

গণমাধ্যমকর্মীদের বিধি-নিষেধকে যেভাবে দেখছেন প্রার্থী ও পর্যালোচকরা

ডাকসুঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনে গণমাধ্যমকর্মীদের চলাচলের ওপর বেশ কিছু বিধি-নিষেধ আরোপ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ভোট কেন্দ্র থেকে সরাসরি সম্প্রচার না করা এবং কেন্দ্রে মোবাইল ফোনসহ সব ধরনের ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার নিষিদ্ধ যার মধ্যে অন্যতম। এ ধরনের বিধি-নিষেধ নির্বাচনের স্বচ্ছতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করবে বলে মনে করছেন প্রার্থী ও জাতীয় নির্বাচন পর্যালোচকরা।

নির্বাচনি বিধিমালায় বলা আছে, নির্বাচনের দিন গণমাধ্যমকর্মীরা চিফ রিটার্নিং অফিসারের ইস্যু করা পরিচয়পত্র দেখিয়ে সংশ্লিষ্ট হলের রিটার্নিং অফিসারের অনুমতি নিয়ে ভোট কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবেন। আবেদন সাপেক্ষে একটি টেলিভিশন চ্যানেলের জন্য সর্বোচ্চ চারটি ক্যামেরা ইউনিট এবং প্রতিটি প্রিন্ট মিডিয়ার জন্য সর্বোচ্চ দুজন সাংবাদিককে ভোট কেন্দ্রে প্রবেশের পরিচয়পত্র দেওয়া হবে। তবে কেন্দ্র থেকে সরাসরি সম্প্রচার করা যাবে না। ভোট কেন্দ্রে মোবাইল ফোনসহ কোনও ধরনের ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার করতে পারবেন না সাংবাদিকরা।

বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক পদ প্রার্থী উম্মে হাবিবা বেনজির এ বিষয়ে বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘গণমাধ্যমের ক্ষেত্রে যে বিধি-নিষেধ রাখা হয়েছে, তাতে আমরা বুঝতে পারছি যে, একটি সংগঠনকে বিজয়ী করার জন্য প্রশাসন নির্বাচনে কারচুপির পাঁয়তারা করছে। এ ধরনের বিধি-নিষেধগুলো আমাদের মনে শঙ্কা তৈরি করছে।’

ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) প্রার্থী আনিসুর রহমান অনিক বলেন, ‘গণমাধ্যমকর্মীদের ক্ষেত্রে যে বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়েছে, তা একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য হুমকি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এটির মাধ্যমে নিজেদের দেউলিয়াত্বের প্রমাণ করছে। কারণ তাদের যদি নির্বাচন সুষ্ঠু করার ইচ্ছা থাকতো, তাহলে তারা গণমাধ্যমের ওপর কেন বিধি-নিষেধ আরোপ করবে? সুতরাং আমরা প্রশাসনকে অনুরোধ করবো, আপনারা এ ধরনের বিধি-নিষেধ থেকে সরে আসুন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস, ঐতিহ্য নিয়ে খেলবেন না। এ সব কারণে যদি অপ্রীতিকর কোনও ঘটনা ঘটে তাহলে তার দায় আপনাদেরই নিতে হবে।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের শিক্ষক ও জাতীয় নির্বাচন পর্যালোচক অধ্যাপক কাজী মারুফুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য কিছু বিধি-নিষেধ তো থাকেই। কিন্তু গণমাধ্যমের ক্ষেত্রে যে নিয়ন্ত্রণগুলো আরোপ করা হয়েছে। আমার কাছে মনে হয়, এটি অপ্রয়োজনীয়। এগুলো নির্বাচনের স্বচ্ছতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করবে। মিডিয়ার উপস্থিতি থাকলে নির্বাচনের স্বচ্ছতা বুঝা যায়। তখন শিক্ষার্থীরাও তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারে।’

ডাকসু নির্বাচনের প্রধান রিটার্নিং অফিসার এস এম মাহফুজুর রহমানের কাছে এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে তিনি কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি। শুধু বলেছেন, এ ব্যাপারে আমাদের প্রেস রিলিজে বিস্তারিত জানানো হয়েছে।