পাঁচ মাস বকেয়া খালেদা জিয়ার বাসা ভাড়া

গুলশানে খালেদা জিয়ার ভাড়া বাড়ি ‘ফিরোজা’গুলশান ২-এর ৭৯ নম্বর সড়কের ১ নম্বর বাসা ‘ফিরোজা’য় বসবাস করতেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। গত বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি এ বাসা থেকেই আদালতে গিয়ে দণ্ডপ্রাপ্ত হওয়ার পর কারাগারে আছেন তিনি। ওদিকে, গত বছরের নভেম্বরে বাড়িটির ভাড়ার চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ায় শেষ ৫ মাস ধরে ভাড়া পরিশোধ হচ্ছে না। তবে বাড়িটির মালিক তানভীর ইসলামের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনও নালিশ করা হয়নি। তার বাবা বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা মেজর (অব.) কামরুল ইসলামও বলছেন, বাড়ি ভাড়া বকেয়া পড়া নিয়ে মালিকপক্ষের কোনও সমস্যা নেই।

খালেদা জিয়ার একান্ত সচিব আবদুস সাত্তার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ভাড়া পরিশোধ হচ্ছে না, এটা সঠিক নয়। আসল বিষয় হচ্ছে, বেগম জিয়া কারাগারে থাকায় চুক্তি নবায়ন করা যাচ্ছে না। এছাড়া কোনও সমস্যা নেই। আমরা তো ভাড়া দিতে চাই, কিন্তু এগ্রিমেন্ট নবায়ন করা না গেলে তো হচ্ছে না।’

২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে খালেদা জিয়া কারাগারে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় কারাভোগ করছেন। গত বছরের নভেম্বরের দিকে বাড়িভাড়ার চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়। ২০১২ সালের ২১ এপ্রিল গুলশান-২ এর ৭৯ নম্বর রোডের বাসভবন ‘ফিরোজা’য় ওঠেন খালেদা জিয়া। এই বাড়িটি বিএনপি নেতা মেজর (অব.) কামরুল ইসলামের ছেলে তানভীর ইসলামের। বাড়িটিতে প্রায় সাতটি বেডরুম, লিভিং রুম, একটি সবুজ লন, বাগানসহ আধুনিক সুযোগ-সুবিধা আছে। ক্যান্টনমেন্টের মঈনুল হোসেন রোডের বাড়িটি আদালতের রায়ে হারানোর পর কিছুদিন খালেদা জিয়া তার ভাই শামীম ইস্কান্দারের বাড়িতে ছিলেন। এরপর ফিরোজায় বসবাস শুরু করেন।

অসমর্থিত একাধিক সূত্র বলছে, ২০১১ সালে মোসাদ্দেক আলী ফালু মাসিক ৩ লাখ টাকা ভাড়ায় ৩ বছরের জন্য ফিরোজা ভাড়া নেন। এরপর দু’দফায় চুক্তি আবার নবায়ন করা হয়। সর্বশেষ চুক্তিটি নবায়নের পর গত বছরের নভেম্বরে এর মেয়াদ শেষ হয়।

তবে দলীয় চেয়ারপারসন বাড়িটি ব্যবহার করায় এ নিয়ে বাড়ির মালিকপক্ষ ভাড়া নিয়ে কোনও মাথা ঘামাচ্ছেন না। বাড়ির মালিক তানভীর ইসলাম দেশে না থাকায় তার সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।

তবে তার বাবা বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা মেজর (অব.) কামরুল ইসলাম ভাড়া বকেয়া পড়ার বিষয়টিকে পাত্তাই দিচ্ছেন না। বাড়িটি তারই এবং ছেলের নামে দিয়েছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বাড়িটি আমার ছেলে তানভীর ইসলামের নামে দিয়েছি। সে তো এখন তার মেয়েকে নিয়ে বিদেশে চিকিৎসার কাজে। ১৫-২০ দিন আগে গেছে। ফিরবে কবে এখনও ঠিক হয়নি।’

বাড়ি ভাড়া বকেয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বাড়িটি ব্যবহার করতেন আমাদের দলের চেয়ারপারসন। তিনি এক বছর ধরে কারাগারে আছেন। এ নিয়ে কী বলার আছে? আমার ছেলে বিদেশ থেকে ফিরে আসুক, এরপর বলা যাবে। আর এ নিয়ে কথা বলারও কিছু নেই।’

খালেদা জিয়ার আইনজীবী ব্যারিস্টার নওশাদ জমির বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বাড়িটি বিএনপির একজন নেতার সন্তানের। এ বিষয়ে তো আর কিছু বলার নেই। আমাদের দলীয় প্রধান কারাগারে, আর আমরা বাড়িভাড়া নিয়ে চিন্তা করবো?’