শিশুরা কুশিক্ষা-অপসংস্কৃতির রোষানলে আবদ্ধ: মির্জা ফখরুল

বক্তব্য রাখছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

দেশের শিশুরা আজ  অধিকার বঞ্চিত ও অমানুষিক নির্যাতনের শিকার হয়ে কুশিক্ষা ও অপসংস্কৃতির রোষানলে আবদ্ধ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর আইডিইবি ভবনে শিশুদের এক অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন। জাতীয় শিশুশিল্পী প্রতিযোগিতা ‘শাপলাকুঁড়ি-২০১৯’ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে জিয়া শিশু অ্যাকাডেমি।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘জিয়াউর রহমান চেয়েছিলেন শিশুরা পাখির মতো ডানা মেলে উড়বে, সুশিক্ষা ও দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে জীবন গড়ার মাধ্যমে বিশ্বকে দেবে এক নতুন বাংলাদেশ। কিন্তু আজ  শিশুরা অধিকার বঞ্চিত, অমানুষিক নির্যাতনের শিকার হয়ে কুশিক্ষা ও অপসংস্কৃতির রোষানলে আবদ্ধ।’

প্রতিনিয়ত শিশুদের ওপর পৈশাচিক নির্যাতন চলছে দাবি করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘যা ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে বিরাট অন্তরায়।’ 

আমরা আজকে কোন সমাজ নির্মাণ করছি প্রশ্ন রেখে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘যে সমাজে ফুলের মতো শিশুদের আমরা ভালোবাসতে পারছি না। তাদের জন্য সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়ে দিতে পারছি না। চারদিকে অনিশ্চয়তা, অস্থিতিশীলতা। একটা ভয় কাজ করছে।’

তিনি বলেন, ‘যখন মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম, তখন যুবক ছিলাম। আজ  আমি প্রায় বৃদ্ধ। ৪৮ বছর হয়েছে আমাদের স্বাধীনতার। এই স্বাধীনতার স্বপ্ন কিন্তু আমরা দেখিনি। বাংলাদেশের এই চিত্র আমরা আশা করিনি, সেজন্য আমরা অস্ত্র তুলে যুদ্ধও করিনি। যুদ্ধ করেছিলাম সত্যিকার অর্থে ‘একটি ফুলকে বাঁচাবো বলে’ গানটিকে প্রেরণা হিসেবে সামনে রেখে। ফুল ফোটাতে চেয়েছিলাম আমরা। এমন একটি বাসযোগ্য ভূমি তৈরি করতে চেয়েছিলাম— যেখানে সবাই সুখে-শান্তিতে ও আনন্দে বাস করতে পারবো। কিন্তু, আমাদের সেই স্বপ্ন সফল হয়নি।’

দেশে অনেক রাস্তাঘাট ও অট্টালিকা তৈরি হয়েছে বলে উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমাদের জীবনযাত্রার মান অনেক বদলে গেছে। তারপরও আমরা নিরাপদ যে বাসভূমি তা দেখতে পাইনি। এর চেয়ে বড় লজ্জা আর কিছু হতে পারে না।’

শিশুরা পর্যন্ত আজ  ঘৃণা ও সন্ত্রাসের বাইরে থাকতে পারছে না বলে উল্লেখ করে ফখরুল  বলেন, ‘আমাদের শিশুরা অহরহ নির্যাতন ও হত্যার শিকার হচ্ছে। একটা ফুলের মতো নিষ্পাপ শিশুকে কীভাবে নির্যাতন ও হত্যা করা যায়, এটা আমাদের বোধগম্য নয়।’

জিয়াউর রহমান সম্পর্কে অনেক খারাপ কথা আমাদের শুনতে হয়, যা আসলে সঠিক নয় বলে দাবি করেন মির্জা ফখরুল।  তিনি বলেন, ‘তিনি (জিয়া) সেই ব্যক্তি, যিনি মানুষকে স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে অনুপ্রাণিত করেছিলেন। আমরা কাউকে ছোট করতে চাই না, সবাইকে ওপরেই রাখতে চাই। কিন্তু যে মানুষটির অবদান আছে, তাকে ছোট করার অধিকার কারও নেই। যার যা অবদান, জাতি তা সবসময় স্মরণ রাখে ও তার মূল্য দেয়।’