ভোলায় স্থানীয় জনতা ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষে চার জন নিহতের ঘটনায় প্রতিবাদ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘ভোলার হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে বিএনপির উদ্যোগে ২৩ অক্টোবর ঢাকা মহানগরীর থানায় থানায় এবং জেলা ও মহানগরীতে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালিত হবে।’
সোমবার (২১ অক্টোবর) বেলা ১২টায় নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কর্মসূচির ঘোষণা করেন।
প্রতিবাদ কর্মসূচির ধরন কী হবে জানতে চাইলে খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘আমাদের থানা পর্যায়ের নেতারা পরিস্থিতি বুঝে কর্মসূচির ধরন ঠিক করবেন। সেটা বিক্ষোভ মিছিল বা বিক্ষোভ সমাবেশও হতে পারে।’
প্রশাসন সুকৌশলে ভোলায় মানুষের প্রতিবাদকে সাম্প্রদায়িক রূপ দেওয়ার ঘৃণ্য চক্রান্ত চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘অথচ ভোলা হত্যাকাণ্ডের পর সরকার ও প্রশাসনের বক্তব্য এবং মন্তব্য শুনলে অনুধাবন করতে পারবেন যে, তারা দুঃখ প্রকাশ না করে হত্যার পক্ষে সাফাই গাইছে। আর প্রধানমন্ত্রী তার স্বভাবসুলভ ভাষায় প্রতিবাদকারীদের প্রতি হুমকি-ধমকি দিচ্ছেন।’
ভোলার ঘটনা পূর্ব পরিকল্পিত
ভোলায় স্থানীয় জনতা ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা পূর্ব পরিকল্পিত বলে দাবি করে খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘কোনও ধর্মকে কটাক্ষ করা বা কারও ধর্ম বিশ্বাস নিয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত মন্তব্য করা এই দেশের আবহমানকালের ঐতিহ্যে নেই। আমরা মনে করি, ভোলার ঘটনা পূর্ব পরিকল্পিত। যে কারণে ভোলাকে রক্তে রঞ্জিত করা হয়েছে, তার সুষ্ঠু তদন্ত ও দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি।’
ঘটনার পর পুলিশের দেওয়া ব্যাখ্যায় মনে হয়, তারা পুরো বিষয়টি আগে থেকেই জানতো বলে উল্লেখ করে মোশাররফ আরও বলেন, ‘তাহলে এত সময় পেয়েও পুলিশ পরিস্থিতি সামাল দিতে পারলো না কেন? এর কারণ সরকার ও পুলিশের কাছে জনমতের কোনও মূল্য নেই। তাদের বিশ্বাস জন্মেছে— মানুষকে খুন, গুম, অপহরণ করেই যেকোনও পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যায়।’
সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, ‘মহান আল্লাহ ও মহানবী (সঃ)-কে নিয়ে কটূক্তির প্রতিবাদে এক প্রতিবাদ সমাবেশে পুলিশের নির্বিচার গুলিবর্ষণ ও ভয়াবহ পৈশাচিকতায় চার জন নিহত ও শতাধিক আহত হয়েছেন। পুলিশের এমন মারমুখী আচরণ ও নিষ্ঠুরতা ক্ষমার অযোগ্য। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে জবাবদিহিতা করতে হয় না বলেই সামান্য কিছুতেই নির্বিচারে গুলি করে মানুষ হত্যা যেন এখন নিত্যদিনের ঘটনা।’
বিক্ষোভটি করতে দিলে কি সরকারের পতন হয়ে যেত? এমন প্রশ্ন রেখে মোশাররফ বলেন, ‘প্রতিবাদকারীরা কোনও ভাঙচুর করেনি। কারও ক্ষতি করেনি। দেশে কোনও ঘটনা ঘটলেই অসহিষ্ণু আচরণ করে পুলিশ বাহিনী। ক্ষমতা হারানোর শঙ্কায় প্রতিনিয়ত অস্থির সরকার এবং তাদের রক্ষাকারী বাহিনী।’
সংবাদ সন্মেলন উপস্থিত ছিলেন— বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী প্রমুখ।