বিএনপি নেতাকর্মীদের ‘এক ঢিলে’ সংঘর্ষের সূত্রপাত

6রাজধানীতে হাইকোর্টের সামনের ব্যস্ত সড়ক অবরোধ করে দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে অবস্থান করছিল বিএনপির নেতাকর্মীরা। সোয়া এক ঘণ্টার এই অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে রাস্তা উন্মুক্ত করে দেওয়ার জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে বারবার বলা হয়। কিন্তু দলটির নেতাকর্মীরা এতে কর্ণপাত না করে কর্মসূচি পালন করতে থাকে। ফলে তাদের রাস্তা থেকে সরিয়ে দিতে পুলিশ পদক্ষেপ নিলে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের জটলা থেকে পুলিশকে লক্ষ্য করে একটি ঢিল ছুড়ে মারলে সংঘর্ষ বাধে। এই সংঘর্ষ গাড়ি ভাঙচুরের মধ্য দিয়ে শেষ হয়।

মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) দুপুর ১টার দিকে হাইকোর্টের সামনের সড়ক অবরোধ করেন বিএনপির নেতকার্মীরা। পরে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের মধ্য দিয়ে বেলা ২টা ১০ মিনিটের দিকে তারা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত পুলিশের পক্ষ থেকে কোনও মামলা দেওয়ার খবর পাওয়া যায়নি।
3সরেজমিনে দেখা যায়, অবস্থান কর্মসূচি শুরুর প্রায় ৭০ মিনিট পর ডিএমপির রমনা বিভাগের উপকমিশনার সাজ্জাদুর রহমান বিএনপির নেতাকর্মীদের সড়ক ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ করেন। এসময় হঠাৎ বিএনপি নেতাকর্মীদের ভেতর থেকে কেউ একজন পুলিশকে লক্ষ্য করে ঢিল ছোড়ে। এর জবাবে পুলিশ সদস্যরা তাদের ধাওয়া দেয়। বিএনপি নেতাকর্মীরা রাস্তার পাশে থাকে ইট-পাথরের টুকরা ছুড়তে ছুড়তে প্রেস ক্লাব হয়ে পল্টনের দিকে পিছু হটতে থাকে। এসময় সড়কে থাকা অন্তত ৮টি প্রাইভেটকার ও মাইক্রোবাস ভাঙচুর করা হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ কয়েক রাউন্ড টিয়ারশেল ছোড়ে। এতে সাধারণ পথচারীদের মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। অনেককে দৌড়ে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিতে দেখা যায়।
পথচারী আকরাম কবির বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ফুটপাত ধরে প্রেস ক্লাবের দিকে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ শুনলাম হই হই আওয়াজ করে কারা যেন আসছিল। তাকিয়ে দেখি পুলিশ কাদের যেন ধাওয়া করেছে। পরে আমি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের গেটের কাছে আশ্রয় নিই।’
4এদিন আপিল বিভাগে খালেদা জিয়ার জামিনের শুনানির জন্য দিন নির্ধারিত ছিল। এজন্য দুপুর ১টা থেকে বিএনপির নেতাকর্মীরা খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে হাইকোর্টের সামনে জড়ো হতে থাকে। এসময় তারা সড়ক অবরোধ করে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করে।
অবস্থান কর্মসূচি থেকে আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, ‘রাস্তায় নামা কোনও অসাংবিধানিক নয়, আইনবিরোধীও নয়। রাষ্ট্রক্ষমতার মালিক জনগণ। জনগণ রাষ্ট্রক্ষমতার মালিক হয়েও আজ তারা অত্যাচারিত। আমরা কোনও কথা বলতে পারি না। বললে অপরাধ হয়ে যায়। কিন্তু, সরকারের নেতারা ক্যাসিনোর সঙ্গে সম্পর্কিত থাকলেও কোনও অপরাধ হয় না।’
7তিনি আরও বলেন, ‘পেঁয়াজের দাম আকাশচুম্বী, যা মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে। বিরোধী দল হিসেবে আমরা এ নিয়ে আন্দোলন সংগ্রাম করতেই পারি। এটা আমাদের সাংবিধানিক অধিকার। আন্দোলন থেকেই বলতে চাই, আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেওয়া হোক।’
এদিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসার পর ডিএমপির রমনা বিভাগের উপকমিশনার সাজ্জাদুর রহমান বলেন, ‘বেআইনিভাবে বিএনপির নেতাকর্মীরা হাইকোর্টের সামনের সড়ক অবরোধ করে রেখেছিল। এটি মহনগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক। আমরা তাদের কয়েকবার বুঝিয়েছি সড়কটি ছেড়ে দেওয়ার জন্য, কিন্তু তারা ছাড়েনি। একপর্যায়ে তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট ছোড়ে। পরে তারা গাড়ি ভাঙচুর করতে করতে চলে যায়।’ সড়কটিতে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে বলে জানান তিনি।