শিশু-কিশোরদের নিয়ে জাফরুল্লাহ’র খেলাফতের কাউন্সিল

মাওলানা জাফরুল্লাহ খান

নির্ধারিত সময় মেনেই কাউন্সিল শুরু করে বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন (একাংশ)। বুধবার (২৭ নভেম্বর) দুপুর ২টায় রাজধানীর ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এ কাউন্সিলের মধ্যমনি ছিলেন দলটির আমির মাওলানা জাফরুল্লাহ খান। এসময় মঞ্চে তার অনুরাগী ধর্মভিত্তিক দলের কয়েকজন নেতাও ছিলেন। কিন্তু মঞ্চের সামনে দর্শক সারিতে দলের নেতাকর্মীদের চেয়ে বিভিন্ন কওমি মাদ্রাসার শিশু-কিশোরদেরই উপস্থিতি ছিল বেশি। সব মিলিয়ে মাদ্রাসার শতাধিক শিক্ষক ও ছাত্র নিয়েই দলের প্রথম কাউন্সিল সম্পন্ন করেন জাফরুল্লাহ খান। আর এই কাউন্সিলে বড় দুটি পদে আসেনি কোনও পরিবর্তন।পুনরায় আমির হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন মাওলানা জাফরুল্লাহ খান।

ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে খেলাফত আন্দোলন বেশ পুরনো একটি দল। দলের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন মাওলানা মুহাম্মদুল্লাহ হাফেজ্জী হুজুর। তার দুই নাতির দ্বন্দ্বে দলটি দু’ভাগ হয় ২০১৭ সালের ৬ এপ্রিল। সেসময় মাওলানা জাফরুল্লাহ খানকে আমির ও মুহিব্বুল্লাহ আশরাফকে মহাসচিব করে কমিটি ঘোষণা করা হয়।

কাউন্সিলে শিশু-কিশোরদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। সম্মেলন চলাকালে শিশু-কিশোরদের অনেককে মিলনায়তনের ভেতরে ঘুমাতে দেখা গেছে।শিশু-কিশোরদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেলো, তাদের বেশির ভাগ এসেছে মহাখালীর মদিনাতুল উলুম মাদ্রাসা থেকে। তারা জানান,ওই মাদ্রাসার শিক্ষক তাদের এই কাউন্সিলে নিয়ে এসেছেন। মাদ্রাসাটিতে কেউ মিজান জামাত, কেউবা  তাইসির  জামাতে পড়ছে। কাউন্সিলে খেলাফত আন্দোলনের নেতারা ছাড়াও ১২০ জনের মতো মানুষ অংশ নেয়। তবে এরমধ্যে অর্ধেকই ছিল বিভিন্ন মাদ্রসার শিশু-কিশোর শিক্ষার্থী।

খেলাফতের কাউন্সিলে অংশ নেয় মাদ্রাসার শিশু-কিশোর শিক্ষার্থীরা

কাউন্সিলে শিশু-কিশোরদের উপস্থিতি সম্পর্কে মাওলানা জাফরুল্লাহ খান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘তারা (শিশু-কিশোর) কাউন্সিলর না। তারা এসেছে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে। আমার মাদ্রাসার ছাত্ররাও উৎসুক হয়ে চলে এসেছে।’

এদিকে, কাউন্সিলে ২০২০-২১ সালের জন্য দুই বছর মেয়াদি দলের কেন্দ্রীয় কমিটির খসড়া তালিকা তুলে ধরা হয়। কণ্ঠভোটে ওই তালিকা পাস করা হয়। সেখানে মাওলানা মুহাম্মদ জাফরুল্লাহ খানকে আমির ও মাওলানা মহিব্বুল্লাহ ইবনে আহমাদুল্লাহ্ আশরাফ দলটির মহাসচিব হিসেবে পুনর্নির্বাচিত হন। একইসঙ্গে বিভিন্ন সম্পাদকীয় পদে  আরও  ৩৮ জনের নাম ঘোষণা করা হয়।

সভাপতির বক্তব্যে মাওলানা জাফরুল্লাহ খান বলেন, ‘দ্বিনি প্রতিষ্ঠানগুলো কারও ব্যক্তিগত বা পারিবারিক সম্পদ নয়। এগুলো হচ্ছে— উম্মতের সম্পদ। তাই এর পরিচালনা ব্যক্তিগত খেয়াল-খুশির পরিবর্তে আল্লাহর আইন ও রাসুল (সা.) এর আদর্শ মোতাবেক,পরামর্শ ও সমঝোতার ভিত্তিতে পরিচালিত হবে। ইনসাফের নীতিতে অভ্যস্ত হতে পারলে অচিরেই দেশে ইনসাফতন্ত্র তথা খেলাফত কায়েম করা সম্ভব।’

জনসেবা আন্দোলনের আমির মাওলানা ফকরুল ইসলাম বলেন, ‘যেখানে আল্লাহর আইন ও ইনসাফ নাই, সেখানে জাতির মধ্যে আত্মকলহ থাকবেই। আমাদের রাজনীতিতে একদল আরেক দলকে পিষে ফেলতে চায়। এই রাজনীতিতে দেশে কখনও শান্তি আসবে না।’

কাউন্সিলে আরও  উপস্থিত ছিলেন— দলটির নায়েবে আমির মাওলানা আবু জাফর কাসেমী, মাওলানা আব্দুল কাদের খাদেমুল ইসলামী, মাওলানা মুহাম্মদ হোসাইন আখন্দ প্রমুখ।