রোহিঙ্গাদের ফেরার পথ সুগম হবে: আ. লীগ

টেকনাফে টিভিতে রায়ের ঘোষণা শুনছেন রোহিঙ্গারারোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমারকে গণহত্যা-নির্যাতন বন্ধের আহ্বান জানিয়ে দেওয়া আন্তর্জাতিক আদালতের (আইসিজে) রায়কে স্বাগত জানিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। দলটির নেতারা বলছেন, এর মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার পথ সুগম হবে।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ‘মিয়ানমারে গণহত্যা হয়েছে। বিষয়টি আমলে নিয়ে আইসিজে দেশটিকে কিছু পদক্ষেপ নিতে বলেছে, এটাতে আমি খুশি। কিন্তু, রোহিঙ্গাদের ফেরত নেওয়া বা মিয়ানমারকে কোনও শাস্তি দেওয়া হলে বিষয়টি আরও যথোপযুক্ত হতো।’ তবে, এ রায়ে রোহিঙ্গাদের দেশে ফেরানোর প্রক্রিয়া এগিয়ে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘আইসিজে মিয়ানমারকে কোনও শাস্তি না দিলেও হত্যা-নির্যাতন বন্ধ করতে বলেছে। এ বিষয়ে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তা চার মাসের মধ্যে জানাতে বলেছে। আদালতের চূড়ান্ত পদক্ষেপের জন্য হয়তো সে পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। তবে যে রায় দেওয়া হয়েছে, তার ভিত্তিতে রোহিঙ্গাদের সম্মান, নিরাপত্তা ও সুরক্ষা দিয়ে নিজ দেশে ফিরিয়ে নিতে হবে।’

দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ আন্তর্জাতিক আদালতের এ রায়কে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের বিচার প্রতিষ্ঠার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি মিয়ানমার তাদের দেশ থেকে পালিয়ে আসা ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে অতিদ্রুত ফিরিয়ে নেবে এবং পূর্ণ নাগরিকত্ব দেবে।’

আরেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এ রায়ের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপরে গণহত্যা হয়েছে। আইসিজে সেটা বন্ধ করতে বলেছে এবং পরিস্থিতির উন্নতিতে কী কী করেছে মিয়ানমারকে তা জানাতেও বলেছে। এখন মিয়ানমারকে রোহিঙ্গাদের পরিপূর্ণ নাগরিকের মর্যাদা দিয়ে আন্তর্জাতিক বিধিবিধান মেনে ফিরিয়ে নিতে হবে। এটা মিয়ানমারের দায়িত্ব। বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে। এখন তাদের ফিরে যেতে আন্তর্জাতিক মহলকেও সহযোগিতা নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে। এ রায়ের মাধ্যমে মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ফেরার পথ প্রশস্ত হলো।’

আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন এ রায়কে রোহিঙ্গা ইস্যুতে বড় ধরনের অগ্রগতি উল্লেখ করে বলেন, ‘এতে মানবতার জয় হয়েছে। এখন মিয়ানমারকে হত্যা-নির্যাতন বন্ধ করে তাদের নাগরিকদের সসম্মানে ফেরত নিতে হবে। আর এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক শক্তিগুলো অব্যাহত নজর রাখলে রোহিঙ্গারা নিজের দেশে সম্পূর্ণ অধিকার নিয়ে নিরাপদে ফিরতে পারবে।’

প্রসঙ্গত, মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ সংক্রান্ত মামলায় চারটি অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ দিয়েছেন জাতিসংঘের সর্বোচ্চ আদালত ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিস (আইসিজে)। এ রায়ে রোহিঙ্গাদের ওপর শারীরিক-মানসিক নিপীড়ন ও হত্যাকাণ্ড বন্ধ করে তাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা, গণহত্যা থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।