প্রধানমন্ত্রী ১৬ কোটি মানুষকে জিম্মি করে রেখেছেন: খন্দকার মোশাররফ

বক্তব্য রাখছেন খন্দকার মোশাররফ হোসেনবর্তমান সরকার নির্বাচন কমিশনকে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেন, ‘সরকারকে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত হতে হবে। গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত হওয়ার মানে হচ্ছে, জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হওয়া। আজকের যে প্রধানমন্ত্রী তার যে ব্যক্তিগত লোভ, ব্যক্তিগত যে শাসন তা চরিতার্থ করার জন্য বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষকে জিম্মি করে রেখেছেন।’

মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের মাওলানা মোহাম্মদ আকরাম খাঁ হলে ডেমোক্রেটিক মুভমেন্ট আয়োজিত ‘খালেদা জিয়া এবং বাংলাদেশের গণতন্ত্র’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘এই সরকার নির্বাচন কমিশনকে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে দিয়েছে। কেন করেছে? কারণ, আজকের যে প্রধানমন্ত্রী তার যে ব্যক্তিগত লোভ, ব্যক্তিগত যে শাসন তা চরিতার্থ করার জন্য বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষকে জিম্মি করে রেখেছেন। শুধুমাত্র আজকের প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করার জন্য।’

তিনি বলেন, ‘আজকের জনগণ নির্বাচন থেকে সম্পূর্ণ বিমুখ। কয়েকদিন আগে ঢাকা শহরে নির্বাচন দেখেছি, আসলে সেখানে ১০ শতাংশ মানুষও ভোট দিতে আসেনি। মানুষ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে আসেন, ভোট দিতে আসেনি। ইভিএম তো তারা ম্যানুপুলেট করে উত্তরে ২৫ শতাংশ এবং দক্ষিণে ২৯ শতাংশ ভোট কাস্ট দেখিয়েছে। আসলে ১০ শতাংশ মানুষও ভোট দিতে আসেনি।’

২৪ ফেব্রুয়ারি সুজনের একটি রিপোর্ট উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সোমবার সুজনের একটি রিপোর্টে দেখলাম, এই ঢাকা শহরে ৯৪ শতাংশ লোক মনে করে, এটা কোনও নির্বাচন হয়নি। এটা দেশের মানুষ জানে, সাংবাদিকরা জানে। গণতন্ত্রের প্রধান একটি অংশ নির্বাচন, সেটাকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দিয়েছে। ওটা ধ্বংস হলে গণতন্ত্রের জন্য অন্য যে ব্যবস্থা থাকার কথা, সেগুলো কিন্তু অটোমেটিক ধ্বংস হয়ে যায়। আজকে যেমন গণতন্ত্র ধ্বংস একইসঙ্গে আমাদের অর্থনীতিরও একই অবস্থা।’

প্রধানমন্ত্রী জনগণকে বিভ্রান্ত করছেন মন্তব্য করে বিএনপি নেতা বলেন, ‘‘আজকে প্রধানমন্ত্রী অর্থনীতি নিয়ে  আতঙ্কিত। তিনি মানুষকে আওয়ামী কায়দায় চাপাবাজি করে আবারও বিভ্রান্ত করার জন্য বলেছেন— ‘বাংলাদেশের অর্থনীতি সিঙ্গাপুরের অর্থনীতি চেয়ে শক্তিশালী’। বাস্তবতা হচ্ছে আজকে ৯ থেকে ১১টি ব্যাংক দেউলিয়া হয়ে আছে। শুধুমাত্র সরকার টিকে থাকার জন্য তারা ব্যাংকগুলোকে সচল রেখেছে। আজকে বলতে হয়, এই ব্যাংকগুলো থেকে যে পরিমাণ অর্থ লুট হয়েছে, তা হয়েছে দুটি উপায়ে। একটি হচ্ছে, ভুয়া এলসি তৈরি করে আরেকটি হচ্ছে ভুয়া শিল্পপ্রতিষ্ঠান দেখিয়ে। এসব করে তারা টাকা বিদেশে পাচার করেছে।’

খালেদা জিয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ভোট ডাকাতি করে সরকারে এসে শেখ হাসিনা গণতন্ত্রকে হত্যা করেছেন। তাদের পক্ষে তো গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করা সম্ভব নয়।  খালেদা জিয়া একমাত্র, যিনি গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতেন। সে আন্দোলনে তিনি আগেও ছিলেন, এখনও আছেন। এজন্যই আওয়ামী লীগের আক্রোশের শিকার তিনি, সেজন্যই খালেদা জিয়া কারাগারে আছেন।’

আয়োজক সংগঠনের সভাপতি শাহাদাত হোসেন সেলিমের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক ড. এমাজউদ্দিন আহমেদ, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।