গণফোরামে পাল্টাপাল্টি বহিষ্কার

 

গণফোরামজাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন গণফোরামে বাড়ছে অসন্তোষ। একপক্ষ আরেক পক্ষকে দল থেকে পাল্টাপাল্টি বহিষ্কার করছে। তবে উভয় পক্ষই বলছে, তাদের বহিষ্কার আদেশে দলীয় সভাপতির সম্মতি রয়েছে। কিন্তু গণমাধ্যমে পাঠানো কোনও সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে কামাল হোসেনের স্বাক্ষর ছিল না।

গতকাল সোমবার (২ মার্চ) ক্রমাগতভাবে সাংগঠনিক শৃঙ্খলাভঙ্গ ও দলীয় স্বার্থবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে গণফোরামের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট হেলাল উদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক লতিফুল বারী হামিম, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক খান সিদ্দিকুর রহমান এবং প্রবাসীকল্যাণ সম্পাদক আব্দুল হাছিব চৌধুরীকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়।

দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোশতাক আহমেদ স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

পরে মঙ্গলবার (৩ মার্চ) ওই বহিষ্কৃত চার নেতা দলের সাধারণ সম্পাদক রেজা কিবরিয়া, সহ-সভাপতি মহসীন রশীদ, সহ-সভাপতি শফিকউল্লাহ ও যুগ্ম সাধারণ মোস্তাককে দল থেকে বহিষ্কার করেন। তাদের বিরুদ্ধে দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গ, উপদলীয় কোন্দল, দলীয় অর্থ তছরুপের অভিযোগ আনা হয়।

বহিষ্কার আদেশের প্রসঙ্গে জানতে চাইলে রেজা কিবরিয়া বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘কেউ চাইলে কাউকে বহিষ্কার করতে পারেন না। মোশতাক আহমেদ সভাপতি কামাল হোসেন ও আমার অনুমতি সাপেক্ষে চার জনকে বহিষ্কার করেছেন। এই বহিষ্কার আদেশ গ্রহণযোগ্য। কিন্তু আজকে যারা আমাদেরকে বহিষ্কার করেছে তাদের সঙ্গে ড. কামাল হোসেনের কোনও সম্পর্ক নেই। তাদের বহিষ্কার আদেশ গ্রহণযোগ্য নয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘আগামী ১-২ দিনের মধ্যে কামাল হোসেনসহ সবাইকে নিয়ে বৈঠক করবো। এরপর এদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। দলকে গণতান্ত্রিক ধারায় শক্তিশালী করতে যারা দলের মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে তাদের বিরুদ্ধে আরও কঠোর অবস্থানে যাবো আমরা।’

এদিকে রেজা কিবরিয়ার পক্ষ থেকে যাদের বহিষ্কার করা হয়েছে তাদের একজন সাংগঠনিক সম্পাদক লতিফুল বারী হামিম। তিনি বলেন, ‌‘মোস্তাক আহমেদ গণফোরামে অবাঞ্ছিত। তিনি কাউকে বহিষ্কার করতে পারেন না। দলীয় শৃঙ্খলা ও গঠনতন্ত্রের ৪৩ (কর্মকর্তা অপসারণ) ধারা অমান্য ও অবজ্ঞা করে রাজনৈতিক চরিত্র হননের উদ্দেশ্যে ও দলীয় ঐক্য বিনষ্ট করার হীন স্বার্থে আমাকেসহ চার কেন্দ্রীয় নেতার নামে মিথ্যা, বানোয়াট ও উদ্দেশ্যমূলক তথ্য উল্লেখ করে বহিষ্কার করা হয়েছে। যা সভাপতি পরিষদ, সম্পাদকমণ্ডলী, স্থায়ী কমিটি, কেন্দ্রীয় কমিটির সভায় আলোচনা হয়নি। এই বহিষ্কার গ্রহণযোগ্য নয়।’

তবে আপনারা কীভাবে দলের সাধারণ সম্পাদকসহ চার জনকে বহিষ্কার করেছেন, জানতে চাইলে লতিফুল বারী বলেন, ‘আমরা ড. কামাল হোসেনের সম্মতি নিয়েই তাদেরকে বহিষ্কার করেছি। দলের সাধারণ সম্পাদককে মৌখিক ও একাধিকবার লিখিতভাবে কেন্দ্রীয় কমিটির সভা ডাকতে আহবান করা হলেও তিনি তা না করে মাসের পর মাস বিদেশে অবস্থান করে অফিসের বাইরে উপদলীয় কোন্দল সৃষ্টি করেছেন। গণফোরাম কখনও পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতা আসার রাজনীতি করে না। কিন্তু সাধারণ সম্পাদক তা করার চেষ্টা করছেন। তিনি ষড়যন্ত্র করে আমাদেরকে বহিষ্কার করেছেন।’

এদিকে একাধিকবার চেষ্টা করেও সার্বিক বিষয়ে ড. কামাল হোসেনের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

আরও পড়ুন:
গণফোরামের চার কেন্দ্রীয় নেতাকে বহিষ্কার