বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ বলেছেন, ‘যারা ফেসবুকে লাল করেছিল, তাদের জীবন লাল করে দেবে আওয়ামী লীগ। তিনি বলেন, দেশের চার থেকে পাঁচ কোটি মা মনে করেন, আওয়ামী লীগ আসলে তাদের সন্তানদের মেরে ফেলা হবে। সে সময় যারা মিছিলে ছিল, তারা মনে করেন— তাদের সেই ভিডিও দেখে দেখে তাদের বের করে খুন করা হবে।
মঙ্গলবার (১ জুলাই) রাজধানীর চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে জুলাই অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে বিএনপির আলোচনা সভায় আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে তিনি এসব কথা বলেন।
আন্দালিব রহমান পার্থ বলেন, আওয়ামী লীগ মেধার রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না। প্রতিশোধের রাজনীতিতে বিশ্বাস করে। তাই তাদের ব্যাপারে পুরো জাতিকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
তিনি বলেন, খুব শিগগিরই আওয়ামী লীগের আওয়াজ নরম হয়ে যাবে। বলবে, আন্দোলনকারীরা জঙ্গি। আসুন, আমরা একসঙ্গে কাজ করি। এমনটি যারা উপলব্ধি করছেন, আমি বলবো এই ট্রাপে পড়বেন না। একটা জায়গায় এক হতে হবে। সেটি হচ্ছে—আওয়ামী লীগ যেন আর রাজনীতিতে না আসতে পারে।
বিজেপি চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের মনে রাখতে হবে— স্পেশাল ক্রিমিনালের জন্য স্পেশাল আইন থাকতে হবে। সাধারণ আইন দিয়ে স্পেশাল ক্রিমিনালের বিচার করা যাবে না।
তারা ক্ষমা চাওয়া তো দূরের কথা, কোনও অনুশোচনাও নেই। আজকেও এক কেন্দ্রীয় নেতা জুলাইকে দাঙ্গা বলে আখ্যায়িত করেছেন।
আবু সাঈদ মরার পর বলেছিল—ড্রাগ এডিকটেড। তাদের পরাজয়টা এখনও মেনে নিতে পারছে না।
তিনি বলেন, আল্লাহ যদি নারাজ হন, তাহলে তিনি জিবরাইলকে সেই কূল-কায়েনাতে ধ্বংস করার নির্দেশ দেন। বিষয়টি আমি আসলেই চিন্তা করি। এ থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে।
আন্দালিব রহমান পার্থ আরও বলেন, গত ১৭ বছরের ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের ক্ষমতায় থাকার ভিত্তি হিসেবে মানুষের ভালোবাসা নয়, বা ভোটও নয়, ছিল ভীতি। গত ১৭ বছর গুম-খুন করে মানুষকে ভয়ের মধ্যে রেখেছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ উপলব্ধি করতে পারেনি, এ ভীতিটা এক সময় ঘৃণায় রূপান্তরিত হবে। বুঝতে পারেনি এটি গণঅভ্যুত্থানে গিয়ে ঠেকবে। আমি আরেকটি কথা সবসময় বলি, আমি বিশ্বাস করি—তাই আমি বলি। কত বড় একটি রাজনৈতিক দল, কীভাবে বাংলাদেশের মানুষের মন থেকে উঠে গেলো। কেমনভাবে এত বড় একটা ঘৃণার পাত্র হিসেবে পরিণত হলো।
বাংলাদেশের ইতিহাসে আর কোনও রাজনৈতিক দলের এমন পতন হয়নি। এমনকি এরশাদের পতনের দুই দিনের মাথায়ও তাদের নেতারা মাঠে ছিলেন।
অথচ আজকে ১০ মাসের মাথায় আওয়ামী লীগ একটি মুরগির খোপ থেকে বের হয়েও নিজেদের পরিচয় দিতে পারেনি।
পার্থ বলেন, আগামীতে যারাই রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পাবেন, তাদেরকে আওয়ামী লীগের বৈঠা হাতে রাখতে হবে। মনে রাখতে হবে, আমরা আর যাই করি—আওয়ামী লীগের মতো মানুষের হৃদয় থেকে যেন ওঠে না যাই।
একটি রাজনৈতিক দল কীভাবে একটি ক্রিমিনাল এন্টারপ্রাইজে পরিণত হয়, তা চিন্তার বিষয়।
তিনি বলেন, বিএনপিকে ছোট্ট একটি অনুরোধ করবো—যদি বিএনপি সামনে ক্ষমতায় যায়, গত ৯ মাসে বিএনপির মধ্যে দেখেছি, সবাইকে নিয়ে কাজ করার মানসিকতা। আমি এটিকে সাধুবাদ জানাই।
তিনি জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নিহতদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন এবং আহতদের সুস্থতা কামনা করেন।