শ্রমজীবী গরিব-দুঃখী মানুষের পাশে দাঁড়ান: ১৪ দল

১৪ দলীয় জোটশ্রমজীবী, গরিব ও দুঃখী মানুষের পাশে সাধ্য অনুযায়ী সবাইকে দাঁড়াতে আহ্বান জানিয়েছে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট। শুক্রবার (২৭ মার্চ) ১৪ দলের পক্ষ থেকে দেওয়া এক যৌথ বিবৃতিতে এ আহ্বান জানিয়ে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী সরকার যথাসাধ্য চেষ্টা করছে। কিন্তু সরকারের একার পক্ষে সবকিছু করা সম্ভব না। তাই আসুন, সবাই দৈনিক উপার্জনের ওপর নির্ভরশীল দরিদ্র মানুষদের পাশে দাঁড়াই।

বিবৃতিতে বলা হয়, শেখ হাসিনার নির্দেশনা মেনে সবাই মানবতার এই সেবায় ঝাঁপিয়ে পড়ুন। এখন আর রাজনীতি নয়। প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে মহাযুদ্ধকে মোকাবিলা করাই এখন মহারাজনীতি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যদি জাতীয় ঐক্যের লক্ষ্যে উদারতার মহৎ দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারেন, তাহলে আমরা কেন সব ধর্ম-বর্ণ-পেশার মানুষ একসঙ্গে কাজ করতে পারবো না?

১৪ দলের যৌথ বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য, কেন্দ্রীয় ১৪ দলের সমন্বয়ক ও খাদ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ নাসিম এমপি, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন এমপি, জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু এমপি, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, জাতীয় পার্টির (জেপি) সাধারণ সম্পাদক শেখ শহীদুল ইসলাম, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম এমপি, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী এমপি, বাংলাদেশ জাসদের সভাপতি শরীফ নুরুল আম্বিয়া, গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক ডা. শাহাদাত হোসেন, গণআজাদী লীগের সভাপতি এস কে শিকদার, ন্যাপের সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন, কমিউনিস্ট কেন্দ্রের ডা. ওয়াজেদুল ইসলাম খান ও বাসদের রেজাউর রশীদ খান।

বিবৃতিতে বলা হয়, গত ২৫ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির উদ্দেশে এক দিকনির্দেশনামূলক ভাষণ দিয়েছেন। তার এই ভাষণকে আমরা স্বাগত জানাই। আমরা মনে করি, প্রধানমন্ত্রীর এই ভাষণ মহাবিপর্যয়ের সম্মুখীন জাতিকে সাহস ও আত্মবিশ্বাস জোগাবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের পাশাপাশি দেশবাসীকেও ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন। করোনা প্রতিরোধে দেশে কার্যত এখন লকডাউন চলছে। করোনা থেকে বাঁচতে সব মানুষই এখন ঘরে বন্দি হয়ে আছেন। যাদের আর্থিক সঙ্গতি আছে, তারাই সাময়িকভাবে দুর্যোগ কাটিয়ে উঠতে পারছেন এবং পারবেন। কিন্তু যারা শ্রমজীবী মানুষ, যাদের দিনের আয়ের ওপর নিজ পরিবারের খাবার জোগাড় করতে হয়, তাদের সামনে এখন খুবই দুঃসময়। আমরা মনে করি, আওয়ামী লীগসহ ১৪ দলের সব নেতাকর্মীর যার যার সাধ্য অনুযায়ী এই শ্রমজীবী মানুষ, যেমন— রিকশাচালক, ভ্যানচালক, দিনমজুর, যারা গ্রামে ঝুপড়িঘরে বা শহরে বস্তিতে বসবাস করেন, তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে। এসব মানুষের পাশে দাঁড়ানোই এখন আমাদের প্রধান কর্তব্য। আমরা যারা রাজনৈতিক কর্মী, তারা যদি নিজেরা নিজস্ব খরচে এলাকাভিত্তিক কয়েক বেলা বা কয়েক দিনের জন্য চাল, ডাল, তেল, লবণসহ নিত্যপণ্য তাদের জন্য সরবরাহ করতে পারি, তাহলে এসব শ্রমজীবী, গরিব, দুঃখী মানুষের পেটে খাবার যাবে। করোনার কারণে শ্রমজীবী মানুষ এখন দুর্বিষহ জীবনযাপন করছেন। রাজনৈতিক কর্মীদের পাশাপাশি যারা বিত্তবান, যাদের সামর্থ্য আছে, এমন বিভিন্ন পেশার মানুষ যদি শক্তি-সামর্থ্য অনুযায়ী প্রত্যেকের নিজের গ্রাম বা শহরের আশপাশের গরিব দুঃখী ও শ্রমজীবী মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারি, তাহলে এর চেয়ে বড় কাজ আর কিছু হতে পারে না। ইতোমধ্যে মাস্ক, পিপিই, হ্যান্ড স্যানিটাইজারসহ বিভিন্ন সামগ্রী বিতরণে বিভিন্ন সামাজিক প্রতিষ্ঠান এগিয়ে এসেছে। এখন কর্মজীবী শ্রমজীবী বেকার মানুষদের, যাদের দিন আয় করে খেতে হয়, তাদের পাশে দাঁড়ানো রাজনৈতিক কর্মীদের বড় করণীয়। সব জনপ্রতিনিধি (সংসদ সদস্য, পৌরসভার মেয়র, উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, সদস্য ও কাউন্সিলর)-সহ ১৪ দলের নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মেনে মানবতার এই সেবায় এই মুহূর্তে নেমে পড়ুন। এই শ্রমজীবী মানুষদের বাঁচাতে আর কোনও বিলম্ব বা কালক্ষেপণ করা যাবে না।