বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন গণফোরামের সভাপতি কামাল হোসেন, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জেএসডির সভাপতি আসম আবদুর রব, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, গণস্বাস্থ্যকেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, বিকল্পধারা বাংলাদেশের একাংশের সভাপতি অধ্যাপক নুরুল আমিন বেপারী। ঐক্যফ্রন্টের দফতর প্রধান জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
এদিকে গণমাধ্যমে পাঠানো ঐক্যফ্রন্টের প্রথম বিবৃতিতে আসম রবের পরে মির্জা ফখরুলের নাম দেওয়া হয়। এ নিয়ে জোটের নেতাদের মধ্যে অন্তোষ দেখা দেয়। পরে বিবৃতিটি সংশোধন করে আবার গণমাধ্যমে পাঠানো হয়। সেখানে রবের নামের আগে মির্জা ফখরুলের নাম দেওয়া হয়।
বিবৃতিতে ঐক্যফ্রন্টের ৫ দফা প্রস্তাবনায় বলা হয়- সব রাজনৈতিক দল ও শ্রেণি-পেশার সামাজিক সংগঠন, বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিশেষজ্ঞগণ দল-মত নির্বিশেষে জাতির সব অংশের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে ‘জাতীয় ঐকমত্য’ গড়ে তুলতে হবে। প্রায়-যুদ্ধকালীন এক পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বাস্থ্য সেবাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে সর্বদলীয় টাস্কফোর্স গঠন এবং জাতীয়-আঞ্চলিক কর্ম পরিকল্পনা গ্রহণ করার পাশাপাশি করোনা বিস্তাররোধে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তার জন্য বিশেষ উদ্যোগ নিতে হবে।
কর্মহীন শ্রমিক, বিশেষ করে গার্মেন্টস নারী শ্রমিক, হতদরিদ্র দিনমজুর, প্রান্তিক কৃষক, প্রতিবন্ধী, ছিন্নমূল শিশুসহ অসহায় জনগোষ্ঠীর জন্য অবিলম্বে খাদ্য সামগ্রীর ন্যায্যমূল্যে রেশনিং চালু করার দাবি জানিয়েছে ঐক্যফ্রন্ট। ফ্রন্টের পক্ষ থেকে করোনা পরবর্তী আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতি নিয়ে জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে ‘আপৎকালীন অর্থনৈতিক কাউন্সিল’ গঠনের কথাও বলা হয়েছে।
ঐক্যফ্রন্টের বিবৃতিতে দাবি করা হয়- করোনার ভয়াবহতা ইতোমধ্যে এক বৈশ্বিক সংকটে পরিণত হয়েছে। এই সংকট ক্রমাগতভাবে বাংলাদেশেও বিস্তার লাভ করছে, এ আশংকা এখন সবার মনে। সরকার কর্তৃক করোনার ঝুঁকিতে পড়া ১৮ কোটি মানুষের জীবন রক্ষাকারী প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা এবং ব্যাপকভিত্তিতে করোনা টেস্টিং কার্যক্রম সারাদেশে বিস্তৃত করা এখন সর্বাগ্রে প্রয়োজন। কেননা এই প্রেক্ষিতে স্পষ্ট প্রতীয়মান যে, এখন এক অপ্রতিরোধ্য গতিতে করোনা সংক্রমণ বিস্তার লাভ করার পরিস্থিতি আগতপ্রায়। এতে করে জনগণ এই মুহূর্তে এক অনিশ্চয়তার ভেতর কালাতিপাত করছে।
গার্মেন্টস সেক্টর খোলা এবং বন্ধ রাখার সমন্বয়হীন আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত বলে উল্লেখ করে বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এই সিদ্ধান্ত শাটডাউনের কার্যক্রমকে চূড়ান্তভাবে বিপর্যস্ত করায় জনগণের আস্থা বিনষ্ট হয়েছে। কোনও সংকীর্ণ ও দলীয় দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে এ দুর্যোগ মোকাবিলা সম্ভব নয় বলে জাতীয় ঐকমত্যের ওপর গুরুত্বারোপ করেছে ঐক্যফ্রন্ট।