ত্রাণ বিতরণ সেনাবাহিনীর হাতে দেওয়ার প্রস্তাব ড. মোশাররফের

 

খন্দকার মোশাররফ হোসেনদেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর তালিকা প্রণয়ন এবং ত্রাণ বিতরণের দায়িত্ব সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ন্যস্ত করার প্রস্তাব করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

মঙ্গলবার (১৪ এপ্রিল) বিকালে ইন্টারনেটে এক ব্রিফিয়ে তিনি এই প্রস্তাব করেন। দলের চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইং সদস্য শায়রুল কবির খান বাংলা ট্রিবিউনকে এ কথা জানান।

ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আমার প্রস্তাব, আজকে ত্রাণ যেন বেশি মানুষের কাছে পৌঁছে, সেজন্য তালিকা সম্প্রসারণ করতে হবে। সরকারের কাছে সব এলাকার ভিজিডি-টিআর-বৃদ্ধ-মুক্তিযোদ্ধাদের লিস্ট আছে। এখন যারা খেটে খাওয়া মানুষ, যারা নিম্ন-মধ্যবিত্ত এবং যারা গরিব তাদের এই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা সম্ভব। যদি সরকার সেনাবাহিনীসহ সশস্ত্রবাহিনী এবং পুলিশ বাহিনীকে এই দায়িত্ব পুরোপুরি দেন, তাহলে তারা চিরুনি অভিযান করে সারাদেশে এই তালিকা তৈরি করবে। এরপর থেকে যত রকমের সাহায্য, যত রকমের ত্রাণ, ভিজিএফ-ভিজিডি, এবং বয়স্ক ভাতা সবকিছু সেনাবাহিনীসহ সশস্ত্র বাহিনীর তত্ত্বাবধানে করতে হবে। এছাড়াও পুলিশ বাহিনীর মাধ্যমে সরাসরি যদি বিতরণ করা হয়, তাহলেই মানুষকে আমরা এ অবস্থা থেকে বাঁচাতে পারবো।’
তিনি বলেন, ‘করোনাভাইরাস থেকে বাঁচানো যেমন আমাদের দায়িত্ব, তেমনি না খেয়ে মানুষ যাতে না মরে সেটার দায়িত্ব প্রথম সরকারের এবং আমাদের সবাইকে এই দায়িত্ব গ্রহণ করতে হবে।’

ত্রাণ বিতরণে অব্যবস্থাপনা ও ক্ষমতাসীনদের লুটপাটের প্রসঙ্গ টেনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘যেভাবে বর্তমান সরকার যে মাধ্যমে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করছে, এটা বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে যে, সেখানে চাল চুরির হিড়িক লেগেছে। কারা করছেন? চেয়ারম্যান-মেম্বার-উপজেলা চেয়ারম্যানরা। তারা কারা? তারা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী। তারা গত ১২ বছর ধরে এসব কর্মকাণ্ডে অভ্যস্ত। তাদের দিয়ে এই কাজ করা সম্ভব হবে না।’

‘সরকার এটা উপলব্ধি করতে পেরে সোমবার (১৩ এপ্রিল) ওপেন মার্কেট সেল (ওএমএস) বন্ধ করে দিয়েছে। এটা বন্ধ করে দিলে হবে ন। এই মার্কেট থেকে যারা ক্রয় করে—তারা হচ্ছে মধ্যবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্ত।”

বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে খন্দকার মোশাররফ হোসেন সবার সুস্থতা কামনা করেন।

করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতির প্রসঙ্গ টেনে খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘আমি আগেও বলেছিলাম, যত টেস্ট করা যাবে আমাদের দেশে রোগীর সংখ্যা, আক্রান্তের সংখ্যা ততই বেশি পাওয়া যাবে। আমরা এটা অবহেলা করায় আসলে অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে। যে ব্যক্তিটি চিহ্নিত ছিল, সে কিন্তু অনেককে সংক্রমিত করে ফেলেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই বর্তমান প্রেক্ষাপটে আমি বলতে চাই, পত্রপত্রিকার খবরে বলা হচ্ছে আমাদের বর্তমানে টেস্ট করার সক্ষমতা ৫ হাজার জনের। আমরা তাও করছি না। এ ব্যাপারে সরকার কোনও ব্যাখ্যাও দিচ্ছে না। আমি আবারও প্রত্যাশা করবো, যাতে এই টেস্ট বা পরীক্ষা আরও সম্প্রসারিত করা হয়, আরও বেশি করার ব্যবস্থা করা যায়। তাহলে দেখা যাবে বাংলাদেশে প্রকৃতপক্ষে আক্রান্তের সংখ্যা কত এবং কতজন মৃত্যুবরণ করেছে।’

হাসপাতালগুলোতে আইসিইউ বেড ও ভেন্টিলেটর স্থাপনের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা শুধু হাসপাতাল প্রস্তুত করার খবর পাচ্ছি। কিন্তু আইসিইউ ও ভেন্টিলেটর স্থাপন করার সুযোগ যদি সৃষ্টি করা না হয় তাহলে এই হাসপাতালগুলো কোনও কাজে আসবে না।’