জাপা নেতারা বলছেন, এরশাদের মৃত্যুর পর তার নির্বাচনি আসন রংপুর-৩-এর উপনির্বাচনে অংশ নিতে চেয়েছিলেন স্থানীয় কয়েকজন নেতা। কিন্তু সেখানে নির্বাচন করেন এরশাদের ছেলে সাদ এরশাদ। এরপর থেকে স্থানীয় নেতাকর্মীদের বড় একটি অংশ তাকে এমপি হিসেবে মেনে নিতে পারছেন না। এরা নির্বাচনে সরাসরি সাদের বিরোধিতা করেছিলেন। এ কারণে তারাই এলাকাবাসীকে দিয়ে এরশাদের বাড়ি ঘেরাও ও ত্রাণের দাবিতে বিক্ষোভ করিয়েছেন।
উল্লেখ্য, করোনাভাইরাস দুর্যোগের মধ্যে অসহায় ও গরিব মানুষদের ত্রাণ না দেওয়া, ভোটের পর এলাকাবাসীর খোঁজ না নেওয়ার অভিযোগ এনে বৃহস্পতিবার (১৬ এপ্রিল) সাদ এরশাদের পৈতৃক বাড়ি ঘেরাও ও বিক্ষোভ করেন শত শত মানুষ।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেন, ‘এটা আমরা সমাধান করেছি। স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে যারা ত্রাণ পায়নি, তাদের তালিকা তৈরি করতে বলেছি। তারপর আমরা ত্রাণ দেবো। মানুষ ত্রাণ না পেলে জনপ্রতিনিধির বাড়িতে আসবে এটা স্বাভাবিক।’
তিনি আরও বলেন, ‘করোনাভাইরাস মোকাবিলায় আমাদের দলের কোনও তহবিল নেই। তহবিল গঠন করার চেষ্টা করেছিলাম, কিন্তু কেউ এগিয়ে আসেনি। আসলে বর্তমান অবস্থায় সবাই একটা অনিশ্চয়তার মধ্যে আছেন। তাই যাদের অর্থ আছে তারাও সেভাবে খরচ করছেন না। তবে দলের প্রত্যেক এমপি ও নেতাকর্মীকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যার যার সামর্থ্য অনুযায়ী এলাকায় দলীয় নেতাকর্মী, আত্মীয়-স্বজন ও মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য।’
বিক্ষোভের সময় রংপুরে ছিলেন উল্লেখ করে জাপার মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা বলেন, ‘আসলে এ ঘটনা দলের জন্য অস্বস্তিকর তো বটেই। আমার নিজের জন্য আরও বেশি অস্বস্তিকর। কারণ, আমি নিজেই তখন রংপুরে ছিলাম।’
রাঙ্গা বলেন, ‘এলাকার কিছু লোক যারা এখনও ত্রাণ পায়নি, তারা মনে করেছেন এমপিরা ত্রাণ দেয়। তাই তারা বাড়ি ঘেরাও করেছেন। তবে এরা সরাসরি জাতীয় পার্টি করে না। এদের কেউ ২০-৫০ হাজার টাকা দিয়ে নিয়ে এসে এটা করিয়েছে। মনে হয় আমাদের দলের কিছু লোক এর সঙ্গে জড়িত আছে। কেউ কেউ একটু পানি ঘোলা করার চেষ্টা করছেন। বিক্ষোভকারীদের বড় একটা অংশ, যারা সাদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেনি। যদিও এটা তাদের ব্যক্তিগত বিষয়।’
সংসদ সদস্য সাদ এরশাদ বলেন, ‘অভিযোগ করা হচ্ছে আমি নাকি রংপুরে যাই না। আমি তো রংপুরেই ছিলাম। এটা আসলে ষড়যন্ত্র। ৯ মার্চ থেকে ২৬ মার্চ পর্যন্ত আমি রংপুরেই ছিলাম। কতজন এমপি এরকম থাকেন আমি জানি না। এর আগেও রংপুরে আমি ১৭ দিন ছিলাম। আমি নিজের তহবিল খরচ করে ত্রাণও দিয়েছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি এটা জানি যে কারও যখন ক্ষোভ থাকে, সেটা প্রকাশ করার একটাই জায়গা আছে। সেটা হলো রংপুরের পল্লী নিবাস। রংপুরের মানুষ সব সময় এরশাদ ও তার পরিবারের কাছে এসেছেন। এজন্য আমি তাদের ধন্যবাদ জানাই যে তারা আমার পাশে আছে। আসলে মেয়র ও রংপুরের ডিসির মাধ্যমে ঠিকভাবে ত্রাণ যায়নি। এজন্য তারা আমার কাছে এসেছেন। মেয়র ও ডিসি ছাড়া এমপিরাও কেউ ত্রাণ পাচ্ছেন না। আমি যতটুকু করেছি, সেটা নিজের তহবিল থেকেই করছি। দলের কোনও তহবিল নেই।’