দোকানপাট চালু করায় করোনা ব্যাপক আকার ধারণ করতে পারে: ১৪ দল

১৪ দলীয় জোট

লকডাউন শিথিলের সুযোগ নিয়ে এক শ্রেণির দোকানি স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিধি না মেনেই তাদের দোকানপাট চালু রেখেছে বলে মন্তব্য করেছে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট। দোকানপাট চালু করায় ক্রম ঊর্ধ্বমুখী করোনাভাইরাস আরও ব্যাপক আকার ধারণ করতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে ক্ষমতাসীন এই জোট।

বুধবার (১৩ মে) এক যৌথ বিবৃতিতে ১৪ দলের পক্ষ থেকে এই আশঙ্কা ব্যক্ত করা হয়।

বিবৃতিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্মহীন শ্রমজীবী মানুষকে নগদ অর্থ প্রদানের কর্মসূচিকে মানবিক পদক্ষেপ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। ১৪ দলের নেতারা বলেন, করোনাভাইরাসে বিপর্যস্ত দেশের এক ক্রান্তিকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের একটি হলো— বৃহস্পতিবার দরিদ্র, কর্মহীন ও শ্রমজীবী মানুষের জন্য নগদ অর্থ প্রদানের কর্মসূচি উদ্বোধন। একজন  মানবিক প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে দেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য নগদ আর্থিক সহায়তা প্রদান কর্মসূচি গ্রহণ করা সম্ভব। অতি দরিদ্র শ্রমজীবী মানুষের মাঝে নগদ আড়াই হাজার টাকা করে দেওয়া হবে। এটি আসন্ন পবিত্র ঈদকে সামনে রেখে শুধু তাদের মধ্যে স্বস্তিই দেবে না, তাদের মনে একটি আত্মবিশ্বাস সৃষ্টি হবে যে, তাদের জন্য একজন দরদি প্রধানমন্ত্রী আছেন। এজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ১৪ দলের পক্ষ থেকে আন্তরিক অভিনন্দন জানানো হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, একটি বিষয়ে আমরা খুবই উদ্বিগ্ন। লকডাউন শিথিল হওয়ার সুযোগে এক শ্রেণির দোকানদার ব্যবসায়ী স্বাস্থ্য সুরক্ষা না মেনে ব্যবসা চালু রেখেছে ঢাকা এবং বিভিন্ন জেলা ও মফস্বল শহরে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিধি না মানার কারণে আমরা আশঙ্কা করছি, এর মাধ্যমে ক্রম ঊর্ধ্বমুখী করোনাভাইরাস আরও ব্যাপক আকার ধারণ করতে পারে। বিশেষজ্ঞদের অভিমত অনুযায়ী চলতি মাসটি খুবই বিপজ্জনক। যারা সারাবছর ব্যবসা করেছে, সেই দোকানদার ব্যবসায়ীরা ঈদ বাজারের নামে আরও বড় ধরনের ব্যবসা করার সুযোগ নিয়ে সাধারণ মানুষকে আরও বিপদের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।

প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে ১৪ দলীয় জোটের নেতারা বলেন, যারা স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিধি মানবে না, দোকানদার বা যেকোনও ব্যবসা হোক, তাদের সিল করে দিন। প্রয়োজনে অতি উৎসাহী ক্রেতাদের বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।

এতে আরও বলা হয়, এর পূর্বে আমরা দেখেছি, এক শ্রেণির গার্মেন্টস ব্যবসায়ী গার্মেন্টস খোলার নামে শ্রমিক ও সাধারণ মানুষকে করোনার মতো ভয়ঙ্কর ভাইরাস ছড়িয়ে দেওয়ার বিপজ্জনক খেলায় মেতেছিল। আজকের ঈদ বাজারের নামে ঢাকা ও বিভিন্ন জেলা শহরে হাজার হাজার মানুষ ঘর থেকে বের হওয়ায় ক্রমবর্ধমান করোনাভাইরাস আরও ভয়ঙ্কর আকারে যেতে পারে। এটা খুবই দুঃখজনক ও দুর্ভাগ্যজনক। প্রথম থেকে যখন সরকার বিভিন্ন আর্থিক প্রণোদনার ব্যবস্থা করেছে এবং করে যাচ্ছে, সেখানে স্বাস্থ্য সুরক্ষা না মেনে বাজার ও মার্কেট খোলার ব্যবস্থা— করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতিকে আরও ভয়াবহ করছে। এখনই এর প্রতিরোধে কঠোরভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ ছাড়া কোনও বিকল্প নেই।

১৪ দলের যৌথ বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন— আওয়ামী লীগ প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ১৪ দলের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিম, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, জাতীয় পার্টির (জেপি) সাধারণ সম্পাদক শেখ শহীদুল ইসলাম, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী, বাংলাদেশ জাসদের সভাপতি শরীফ নুরুল আম্বিয়া, গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক ডা. শাহাদাত হোসেন, গণআজাদী লীগের সভাপতি এস কে শিকদার, ন্যাপের সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন, কমিউনিস্ট কেন্দ্রের ডা. ওয়াজেদুল ইসলাম খান ও বাসদের রেজাউর রশীদ খান।