প্রধানমন্ত্রীর সবুজায়নের ডাক পৃথিবীর জন্য উদাহরণ: ওয়েবিনারে বক্তারা

৪৪আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপ-কমিটি আয়োজিত ওয়েবিনারে বক্তারা বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবুজায়নের ডাক দিয়ে পরিবেশ রক্ষায় যে কাজ করে যাচ্ছেন, তা পৃথিবীর জন্য একটি উদাহরণ। পৃথিবীর অনেক দেশ ও মানুষ জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে হুমকির মুখে আছেন। একমাত্র সুষ্ঠু পরিবেশ ও প্রকৃতিই এই হুমকি থেকে মানুষকে রক্ষা করতে পারে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের পরিবেশ রক্ষায় নেতৃত্ব দেওয়ার পাশাপাশি বিশ্বব্যাপী এ আহ্বান ছড়িয়ে দিয়েছেন। আর তার এই আহ্বানকে ধারণ করে দেশব্যাপী বৃক্ষরোপণ করে প্রশংসনীয় কাজ করে যাচ্ছে আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপ-কমিটি।

বৃহস্পতিবার (৩০ জুলাই) আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ উপ-কমিটির আয়োজনে অনুষ্ঠিত ‘মুজিববর্ষে বাংলাদেশ: বৃক্ষরোপণে বিশুদ্ধ হোক পরিবেশ’ শীর্ষক ওয়েবিনারে অংশ নিয়ে বক্তারা এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন৷ কমিটির সভাপতি ড. খন্দকার বজলুল হকের সভাপতিত্বে এতে জুমের মাধ্যমে আলোচনায় অংশ নেন— আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কর্নেল (অব.) ফারুক খান, তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, বাংলাদেশ সেন্টার ফর অ্যাডভান্স স্টাডিজের নির্বাহী পরিচালক ড. আতিক রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্যোগ বিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের পরিচালক ড. অধ্যাপক মাহবুবা নাসরিন, আওয়ামী লীগের সিরাজগঞ্জ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবে মিল্লাত, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি এ এম আমিন উদ্দিন প্রমুখ।

তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর সবুজায়নের ডাক পৃথিবীব্যাপী সাড়া ফেলেছে। দেশে যেমন তার দৃঢ় ও সুযোগ্য নেতৃত্বে পরিবেশ রক্ষার জন্য কাজ হচ্ছে, তেমনি বিশ্বও তা গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে। তার এসব উদ্যোগ বিশ্বে স্বীকৃতিও পেয়েছে। এর উৎকৃষ্ট প্রমাণ হলো পরিবেশ রক্ষায় অবদানের কারণে তার একাধিক পুরস্কার প্রাপ্তি।’ তিনি বলেন, ‘‘জলবায়ু পরিবর্তনের সব উপাদান বাংলাদেশে দৃশ্যমান। পরিবেশ রক্ষায় ২০১৫ সালে জাতিসংঘের সর্বোচ্চ পুরস্কার ‘চ্যাম্পিয়ন অব দ্য আর্থ’ পুরস্কারে তিনি মনোনীত হয়েছেন।’ ১৯৮১ সালে শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর পর ১৯৮৩ সালে তিনি দুই বছরব্যাপী বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালন করেন বলে উল্লেখ করেন ড. হাছান।

তথ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘সে সময়ে তার যে স্লোগান ছিল সেটি এখনও আছে। সেটি হচ্ছে একটি করে ভেষজ, বনজ এবং ঔষধি গাছ লাগান। ৩০-৪০ বছর আগে বনে প্রচুর গাছ ছিল। কিন্তু এখন আপনারা দেখবেন বসতি এলাকায়ও প্রচুর গাছ রয়েছে। এটি সম্ভব হয়েছে শেখ হাসিনার সামাজিক বনায়ন আন্দোলন ডাকের কারণে। বৃক্ষরোপণকে তিনি একটি সামাজিক আন্দোলনে রূপান্তর করেছেন।’ করোনাভাইরাস পরবর্তী পরিস্থিতিতে প্রকৃতির অবস্থা তুলে ধরে আওয়ামী লীগের সাবেক বন ও পরিবেশ বিষয়ক এই সম্পাদক বলেন, ‘এখনকার যে প্রকৃতি সেই প্রকৃতি অনেক নির্মোহ-নির্মল। কারণ, এই সময়ে প্রকৃতি তার আপন নিজস্বতায় বিকশিত হতে পারছে। এটিই প্রমাণ করে আমরা স্বাভাবিক অবস্থায় প্রকৃতির ওপর এরকম অত্যাচার করি।’

আলোচনায় অংশ নিয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কর্নেল ফারুক খান বলেন, ‘শুধু গাছ লাগালে চলবে না, গাছ রক্ষা করতে হবে। কোভিড-১৯-এর সময়ে প্রমাণিত হয়েছে পরিবেশের সব থেকে বড় ক্ষতি করি আমরা। তিনি আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক লক্ষ্য স্পষ্ট। তিনি পরিষ্কার করে বলেছেন, আমরা পরিবেশ রক্ষায় যা করার করছি এবং যা প্রয়োজন তা করবো। আমাদের যারা বিশেষজ্ঞ রয়েছেন, তাদের কাছ থেকে আমাদের আরও বেশি বেশি করে অভিজ্ঞতা নিতে হবে।’

ফারুক খান বলেন, ‘আমি আহ্বান জানাবো তাদের এগিয়ে আসার। পাশাপাশি জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক মঞ্চে পরিবেশ নিয়ে যে কাজ করেছি, সে কার্যক্রমগুলো বেশি করে তুলে ধরতে হবে, যেন বাংলাদেশ পরিবেশ রক্ষায় একটি রোল মডেল হিসেবে স্বীকৃতি পায়। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান উপকূল রক্ষায় বনায়ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছিলেন। এরপর যারা ক্ষমতা দখল করেছিল, বিএনপি-জামায়াতের মতো দলগুলো, তারা পরিবেশ নিয়ে কখনও ভাবেনি। পরে যখন জননেত্রী শেখ হাসিনা আবারও ক্ষমতায় আসলেন, তিনি পরিবেশকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছেন। প্রতিবছর একটি আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে গাছ লাগানো শুরু করেন। এমনকি এটা শুধু আনুষ্ঠানিকতায় সীমাবদ্ধ থাকে না৷ সারা দেশে তার কার্যক্রম ছড়িয়ে দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী এটাকে এতটাই গুরুত্ব দিয়েছেন যে, আমাদের যে ডেল্টা প্ল্যান সেখানেও বৃক্ষরোপণকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।’