১৯ আগস্ট রাতে অনুষ্ঠিত এই ওয়েবিনারের বিষয়বস্তু ছিল ‘৭৫-পরবর্তী বাংলাদেশ: বঙ্গবন্ধুর খুনিদের পুনর্বাসন’। সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশনের সহযোগিতায় এবং প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার শাহ আলী ফরহাদের সঞ্চালনায় আয়োজিত ওয়েবিনারের এই পর্বের অতিথি ছিলেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মাদ শাহরিয়ার আলম, গবেষক ও কলামিস্ট সৈয়দ বদরুল আহসান, কলামিস্ট ও সাবেক ছাত্রনেতা সুভাষ সিংহ রায়, অস্ট্রেলিয়ার আরএমআইটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রফেসর শামস রহমান এবং লেখক ও গবেষক হাসান মোরশেদ।
আলোচনায় মোহাম্মদ শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে নিজেকে কখনও সফল পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দাবি করতে পারবো না, যতদিন পর্যন্ত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর শেষ খুনিকে আইনের আওতায় না আনতে পারবো। এটা জাতি হিসেবে বড় গ্লানি, তার চেয়ে বড় গ্লানি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের।’
সৈয়দ বদরুল আহসান হত্যায় জড়িতদের প্রসঙ্গে বলেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকার ১৫ আগস্টের ঘটনাটি জানতো অনেকে মনে করেন। তখন অ্যাম্বেসিতে ফিলিপ চেরির সঙ্গে খুনি চক্র কয়েকবার দেখা করেছে। ফারুক রহমান গাদ্দাফির সঙ্গে দেখা করেছিল। ১৯৭৩ সালেই তার পরিকল্পনা ছিল, একটা কিছু ঘটাবে। তারা লিবিয়ায় গিয়ে আশ্রয় নিয়েছে। তাই এ হত্যাকাণ্ডের ষড়যন্ত্র নিয়ে ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিশন গঠন প্রয়োজন।’ তিনি আরও বলেন, ‘জুলফিকার আলী ভুট্টো ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সকালে তার অফিসের লোকজনকে জিজ্ঞেস করেছিল, ঢাকা থেকে কোনও খবর আছে কিনা? তার মানে সে আগে থেকে জানতো এমন কিছু। এরপরে তারা পাকিস্তান রেডিওতে খবরটি প্রচার করলো, বিশ্ববাসী জানলো সেই ক্যু-এর কথা।’
হাসান মোর্শেদ বলেন, ‘১৯৭৫-এর ১৫ আগস্ট থেকে নভেম্বরের ৩ তারিখ পর্যন্ত বঙ্গবন্ধুর খুনি সামরিক অফিসাররা সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী ছিল। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের এক সপ্তাহের মধ্যে জিয়াউর রহমানকে সেনাবাহিনীর প্রধান করে সামরিক গোষ্ঠী। বঙ্গবন্ধুর খুনিরা দেশ থেকে চলে যেতে চায় যুক্তরাষ্ট্রে কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র তাদের আশ্রয় না দিলে তারা ব্যাংকক হয়ে লিবিয়া চলে যায়।’
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুলের একটি বক্তব্যের জবাবে শামস রহমান বলেন, ‘১৯৭৫ পরবর্তী সময় থেকে ইতিহাস যেভাবে বিকৃত হয়ে আসছে এবং যারা এই বিকৃতির সঙ্গে জড়িত তাদের মুখ থেকে এই ধরনের কথা শোনাটা সমীচীন নয় বলে আমি মনে করি। আমার মনে হয়, তিনি কোনও রকম তথ্য-উপাত্ত জানেন না বা জানার চেষ্টা করেন না বলেই বঙ্গবন্ধু হত্যায় জিয়ার জড়িত থাকার বিষয়টিকে এড়িয়ে গেছেন।’ তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা একটা নীল নকশার অংশ। এই নীল নকশায় জেনারেল জিয়া যেমন জড়িত ছিলেন ঠিক তেমনই মোশতাক জড়িত ছিল, ছিল উচ্চাকাঙ্ক্ষী কিছু সামরিক কর্মকর্তা। ইতোমধ্যে প্রকাশিত বিভিন্ন তথ্য অনুযায়ী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিল।’