স্বাভাবিক সাংগঠনিক কার্যক্রমে ফিরছে আ. লীগ

আওয়ামী লীগস্বাভাবিক সাংগঠনিক কার্যক্রমে ফিরছে আওয়ামী লীগ। এর অংশ হিসেবে প্রাথমিকভাবে বেশ কিছু কর্মসূচি হাতে নিয়েছে দলটি। দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ইতিমধ্যে নেতাকর্মীদের এসব নির্দেশনা পৌঁছে দিয়েছেন। গত বুধবার (২ সেপ্টেম্বর) দলের সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠকে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের দুই অংশ এবং সম্মেলন হওয়া পাঁচ সহযোগী সংগঠনের পূর্ণাঙ্গ কমিটি আগামী ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে কেন্দ্রে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন তিনি। এছাড়া মেয়াদোত্তীর্ণ জেলা-উপজেলা শাখা সম্মেলনের কার্যক্রম শুরুর নির্দেশও দেন তিনি। পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্বাভাবিক সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করার আহ্বান জানান ওবায়দুল কাদের।

সূত্র জানায়, এ মাসে দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে জেলা-উপজেলার সম্মেলনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। সে লক্ষ্যে ইতিমধ্যে দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্ম ও সাংগঠনিক সম্পাদকদের নিজ নিজ বিভাগের কোন কোন জেলায় সম্মেলন হয়নি তার তালিকা করতে বলা হয়েছে। কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে সেগুলোর তারিখ নির্ধারণ করা হবে। চলতি সপ্তাহের শেষে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে পারে।

আওয়ামী লীগের দফতর সূত্র জানায়, ইতিমধ্যে সম্মেলন না হওয়া জেলাগুলোর নামের তালিকা চূড়ান্ত করা হয়েছে। কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হওয়ার পর যুগ্ম ও সাংগঠনিক সম্পাদকরা নিজ নিজ বিভাগের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে জেলাগুলোর সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ করবেন। পাশাপাশি সম্মেলন উপলক্ষে কর্মী সভা, বর্ধিত সভা এবং প্রতিনিধি সভায় যোগ দেবেন।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, ইতিমধ্যে তারা সাংগঠনিক কার্যক্রম জোরদার করার জন্য অনানুষ্ঠানিক আলোচনা করেছেন। কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকের পর আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হবে।

প্রসঙ্গত, আওয়ামী লীগের ২০১৯ সালের সম্মেলনের আগে সারা দেশে ৭৮টি সাংগঠনিক জেলার মধ্যে মাত্র তিনটি জেলার সম্মেলন করা হয়। কেন্দ্রীয় সম্মেলনের তারিখ হওয়ার পর তড়িঘড়ি ২৯টি জেলা সম্মেলন শেষ করা হয়। এসব জেলায় সম্মেলন হলেও অধিকাংশের পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়নি। সেখানে জেলা কমিটিগুলোর সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের নাম ঘোষণা করা হয়। এবার পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হবে। পাশাপাশি মেয়াদোত্তীর্ণ জেলাগুলোর সম্মেলন করা হবে।

এদিকে সম্মেলন হওয়া পাঁচ সহযোগী সংগঠনও পূর্ণাঙ্গ কমিটি করার তোড়জোড় শুরু করেছে। কৃষক লীগের সভাপতি সমীর চন্দ্র চন্দ বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, তারা খসড়া কমিটি জমা দিয়েছেন। একইভাবে স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবু, যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল, মৎসজীবী লীগের সভাপতি সাইদুর রহমান এবং শ্রমিক লীগের সভাপতি ফজলুল হক মন্টু জানান, তারা প্রত্যেকের সংগঠনের পূর্ণাঙ্গ কমিটি প্রস্তুত করছেন। আর ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবীর জানান, তারা পূর্ণাঙ্গ কমিটির বিষয়ে আলোচনা শুরু করেছেন। দলের সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে দু’একদিনের মধ্যেই এ নিয়ে মতবিনিময় করে পূর্ণাঙ্গ কমিটি জমা দেবেন। আর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক এস এ মান্নান কচি জানান, তারা ছয় মাস আগেই কমিটি জমা দিয়েছেন।

আওয়ামী লীগের সূত্র জানায়, কার্যনির্বাহী সংসদের আসন্ন বৈঠকে জেলা সম্মেলন ও সহযোগী সম্মেলনের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন ছাড়াও অনুপ্রবেশ বিষয়ে আলোচনা হতে পারে। যুব মহিলা লীগের নেত্রী পাপিয়া কাণ্ড, শাহেদ কাণ্ড এবং প্রতারণার অভিযোগ কুয়েতে গ্রেফতার সংসদ সদস্য পাপলু প্রসঙ্গে কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে দলের সভাপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করা হতে পারে।

আসন্ন বৈঠকে কী কী বিষয় নিয়ে আলোচনা হতে পারে—জানতে চাইলে দলটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কর্নেল (অব.) ফারুক খান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ভার্চুয়াল জগত থেকে বের হয়ে কিভাবে স্বাভাবিক সাংগঠনিক কার্যক্রমে ফেরা যায় সেটাই হবে আলোচনার মূল বিষয়। তৃণমূলের সম্মেলন, সহযোগী সংগঠনগুলোর পূর্ণাঙ্গ কমিটি, অনুপ্রবেশ বন্ধসহ বেশকিছু সাংগঠনিক বিষয় নিয়ে কথা হবে। পাশাপাশি দিবসভিত্তিক কর্মসূচিও নেওয়া হবে।