এসব রাজনৈতিক কর্মীদের চাকরবাকরের গুণাবলিও নেই: জাফরুল্লাহ চৌধুরী

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, ‌‌‌‘আমার সাম্প্রতিক বক্তব্যে কিছু রাজনৈতিক স্নেহাস্পদ ব্যক্তি মনঃক্ষুণ্ন হয়েছেন। তাদের চাকরবাকরের সঙ্গে তুলনা করেছি। আমি চাকরবাকরের কাছে ক্ষমা চাইছি। কারণ, এসব রাজনৈতিক কর্মীদের চাকরবাকরের গুণাবলিও নেই। তাদের না কব্জিতে জোর আছে, না মাথা ঘোরাবার অধিকার আছে। চাকরবাকরদের অত্যাচার করার একপর্যায়ে তারা চাকরি ছেড়ে চলে যায়। এই রাজনৈতিক কর্মীদের সে ক্ষমতা বা অধিকার নেই।’

শুক্রবার (১০ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ৩টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের নবগঠিত কমিটির কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। 

উল্লেখ্য, গত ২ সেপ্টেম্বর জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সভায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান পদে তারেক রহমানকে দায়িত্ব দেওয়ার প্রক্রিয়ার সমালোচনা করেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। তিনি বলেন, ‌‘বিএনপির গঠনতন্ত্র মেনে তারেক রহমানকে এই দায়িত্ব দেওয়া হয়নি।’ পরে ৬ সেপ্টেম্বর ঠাকুরগাঁওয়ের কালীবাড়ির নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় জাফরুল্লাহ চৌধুরীর এ বক্তব্যের সমালোচনা করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘জাফরুল্লাহ সাহেবের বয়স হয়ে গেছে। তিনি অত্যন্ত সম্মানিত ও গুণী-জ্ঞানী লোক। কিন্তু বয়স হয়ে গেলে মানুষ কিছু উল্টাপাল্টা কথা বলতেই পারেন। তারেক রহমানকে নিয়ে করা তার মন্তব্যটা যুক্তিসঙ্গত না। তিনি ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছেন, কথা বলছেন। তিনি গণতান্ত্রিক আন্দোলনের একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। তার এ ধরনের মন্তব্য অনভিপ্রেত। এসব মন্তব্য করার ফলে গণতন্ত্রবিরোধী শক্তিরই লাভ হয়। আমি তাকে অনুরোধ জানাবো, যেসব কথায় জনগণ বিভ্রান্ত হয় সেসব কথা যেন তিনি না বলেন। তারেক রহমানই বিএনপির নেতা।’

আজকের অনুষ্ঠানে বিএনপিকে উদ্দেশ করে জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘‌আমি তারেকের বদলে জাইমাকে ক্ষমতা দিতে বলিনি। আমি বলছি, তাকে রাজনীতি শিখতে দেন। সে তরুণ আছে, তাকে রাজপথে আসতে বলেন। রাষ্ট্রের দায়িত্ব নিতে হলে রাজপথে হাঁটতে হয়।’

এ সময় আসিফ নজরুল সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘পৃথিবীর জ্ঞানী-গুণীদের নাম খুঁজে বেড়ালে আসিফ নজরুলের নাম পাওয়া যাবে। আসিফ নজরুলের কক্ষে তালা লাগানো যাবে, কিন্তু মুখে তালা লাগানো যাবে না। আসিফ নজরুলের জ্ঞানের আধারে তালা লাগানো যাবে না। পৃথিবীর যেকোনও বিশ্ববিদ্যালয় আসিফ নজরুলকে অধ্যাপক হিসেবে পেলে গর্বিত হবে। আর আমাদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ন্যক্কারজনক ঘটনা—তার কক্ষে তালা লাগানো হয়েছে।’

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর, গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আইন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুলসহ অনেকে।