সকালে মারধরের শিকার গয়েশ্বর, দুপুরে আপ্যায়ন করালো ডিবি

ঢাকার প্রবেশমুখগুলোতে বিএনপি ও তাদের যুগপৎ আন্দোলনের দলগুলোর ‘অবস্থান কর্মসূচিতে’ যাত্রাবাড়ীর মাতুয়াইলে মারধরের শিকার হন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। পরে সেখান থেকে গাড়িতে করে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। তবে বিকাল হতে না হতেই বিএনপির এই নেতাকে দলীয় কার্যালয়ে নিজেদের গাড়িতে করে নামিয়ে দিয়ে যান ডিবির কর্মকর্তারা।

এর আগে ডিবি কার্যালয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশিদের সঙ্গে দুপুরের মধ্যাহ্নভোজে অংশ নিতেও দেখা যায় গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে। ডিবি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, মধ্যাহ্নভোজে ছিল নানা পদের খাবার। ছিল বেশ কিছু ফলের আইটেমও। খাবার আনা হয়েছে প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেল থেকে।

হারুন অর রশিদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমরা বিএনপি নেতা গয়েশ্বরকে সেভ করার জন্য নিয়ে এসেছিলাম। এখন পুলিশের একটি গাড়িতে করে তাকে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।’

মধ্যাহ্নভোজ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা ভিআইপি রাজনীতিবিদদের যে মর্যাদা, সেটা তাদের দিয়ে থাকি। গয়েশ্বর রায়কেও ধোলাইখাল থেকে সেফ করে ডিবি কার্যালয়ে এনেছি। তাকে দুপুরে আপ্যায়ন করানো হয়েছে। তারপর পুলিশের গাড়ি দিয়ে তাকে কার্যালয়ে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।’

‘আপ্যায়নের এই ছবিই প্রমাণ করে ডিবিতে কখনও নির্যাতন করা হয় না’, বলেও দাবি করেন হারুন অর রশিদ।  

এদিকে কার্যালয়ে পৌঁছে সাংবাদিকের সঙ্গে আলাপকালে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘সংঘর্ষের সময় আমার মাথা ফেটে গেছে, আমি রক্তাক্ত হয়ে পড়েছি। পরে কোমর থেকে নিচ পর্যন্ত বেধড়ক পিটিয়েছে। সেখান থেকে পুলিশ ধরে নিয়ে রাজারবাগের পুলিশ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়েও নেওয়া হয়েছিল। এখন অফিসে নামিয়ে দিয়ে গেলো।’

মধ্যাহ্নভোজে ছিল নানা পদের খাবার। (ছবি: সংগৃহীত)

শারীরিক অবস্থা এখন কেমন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ইনজুরি হওয়ার পর সুস্থ হতে সময় লাগবে। এখন স্যালাইন দিতে হবে।’

এর আগে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর মাতুয়াইলে অবস্থান কর্মসূচির সময় বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে আহত হন গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। এরপর ঘটনাস্থল থেকে পুলিশের গাড়িতে করে তাকে মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।

পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী, শনিবার (২৯ জুলাই) সকালে মাতুয়াইল হাসপাতালের সামনে বিএনপির কয়েকশ’ নেতাকর্মী রাস্তা অবরোধ করে বসে পড়েন। দুপুর পৗনে ১২টার দিকে পুলিশ তাদের উঠিয়ে দিতে গেলে সংঘর্ষ হয়।

সরেজমিন দেখা যায়, বিএনপির কয়েকশ’ নেতাকর্মী রাস্তা অবরোধ করে বসে পড়লে সেখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীরও কয়েকশ’ সদস্য এসে উপস্থিত হন। একপর্যায়ে তারা বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর টিয়ারশেল ছুড়তে থাকেন। এ সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর আহত হন। মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি। এই সময় বিএনপির কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের কয়েক দফা পাল্টাপাল্টি ধাওয়া চলে।