স্বাধীন গণমাধ্যমকে স্তব্ধ করতেই সাংবাদিকদের বিএনপির হুমকি: সজীব ওয়াজেদ জয়

প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছেন, জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে তাদের সমর্থনে না দাঁড়ালে পরিণতি সম্পর্কে সাংবাদিকদের প্রতি প্রকাশ্যে বিএনপির হুমকি, স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে সন্ত্রস্ত করার জন্য পরিকল্পিত, যা গণমাধ্যমের প্রতি চরম অবজ্ঞারই বহিঃপ্রকাশ।

সজীব ওয়াজেদ জয় শনিবার এক টুইটবার্তায় বলেন, সংবাদপত্রের স্বাধীনতার প্রতি চরম অবজ্ঞা প্রদর্শন করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এখন নতুন করে সাংবাদিকদের ওপর হামলা শুরু করেছে।

তিনি গত কয়েক বছর ধরে সাংবাদিকদের ওপর হামলা, টকশো সঞ্চালকদের গালিগালাজ, নারী উপস্থাপকদের নিয়ে নারী বিদ্বেষী মন্তব্য এবং জনসভা থেকে শীর্ষ নেতৃত্ব কর্তৃক সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ক্রমাগত হুমকি প্রদানসহ অতীতের বেশ কয়েকটি সংবাদ প্রতিবেদনসহ একটি ভিডিও প্রতিবেদন তুলে ধরেন।

সম্প্রতি বিএনপির মিডিয়া সেল তাদের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে প্রকাশ্যে একটি হুমকি দিয়ে বলেছে, ‘আমরা সাংবাদিকদের ওপর কড়াকড়িভাবে বন্ধনী আরোপ করছি: কারা আছে গণতন্ত্রের সঙ্গে আর কারা স্বৈরাচারীদের সঙ্গে।’

জয় বলেন, গণতন্ত্রে মুক্ত গণমাধ্যম সরকার ও বিরোধী দল উভয়কেই জবাবদিহি করার স্বাধীনতাকে মূর্ত করে, কিন্তু বিএনপির নির্দেশনা গণমাধ্যমকে স্বাধীনভাবে কাজ করা থেকে স্তব্ধ ও আতঙ্কিত করতে চায়।

তিনি বলেন, গণতন্ত্রে গণমাধ্যমের শক্তি এই ধারণার মধ্যে রয়েছে যে সাংবাদিকদের শাসক দল বা বিরোধী উভয়ের কাউকেই ছাড় দেওয়া উচিত নয়।

কিন্তু বিএনপির মিডিয়া সেলের এই প্রত্যক্ষ হুমকি দলের চরম অসহিষ্ণু চেহারা প্রকাশ করে এবং বিএনপি ক্ষমতায় এলে গণমাধ্যমের প্রতি হুমকি সৃষ্টি করে, যেমনটি তারা ২০০১-০৬ সালে করেছিল।

সম্প্রতি বিএনপির শীর্ষ নেতারা সমালোচনামূলক প্রশ্নের মুখে নারী সঞ্চালকদের ওপর হামলা চালিয়েছেন। এর আগে এক সিনিয়র সাংবাদিক একটি টকশোতে প্রকাশ করেন যে বিএনপি-জামায়াত ক্যাডাররা সাংবাদিকদের বাসে পেট্রোল বোমা ও বাস পোড়ানোর ভিডিও ফুটেজ সরবরাহ করেছে এবং এ ধরনের জঘন্য ফুটেজ সম্প্রচারের জন্য জোর দিয়েছে।

এদিকে এসব চ্যানেলের জনপ্রিয়তা বাড়লেও বয়কটের পর দর্শক সংখ্যা কমে গেছে বলে দাবি করে কয়েকটি গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়েছে বিএনপি নেতারা।

এ ছাড়া সাংবাদিকদের ওপর বিএনপি নেতাকর্মীদের হামলার একাধিক ঘটনাও সামনে এসেছে, কিন্তু কোনও কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

নির্বাচনের আগে দলের নেতিবাচক কভারেজ বন্ধ করার প্রয়াসে গণমাধ্যমের ওপর চলমান ‘আক্রমণের’ জন্য সিনিয়র সাংবাদিকরাও দলের কঠোর সমালোচনা করেছেন।

এছাড়া, মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস গণমাধ্যমের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়ে যে মন্তব্য করেছেন, তার প্রশংসা করে বিএনপি নেতারা সাংবাদিকদের মার্কিন নিষেধাজ্ঞার হুমকি দিচ্ছেন বলেও বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।