করোনায় আটকে আছে আ.লীগের সহযোগী সংগঠনগুলোর পূর্ণাঙ্গ কমিটি

আওয়ামী লীগকরোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে আটকে গেছে সম্মেলন হওয়া আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনগুলোর পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন। প্রতিটা সংগঠনের সম্মেলনের সাত থেকে সাড়ে সাত মাস পার হলেও একটিরও পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা হয়নি। করোনার এই সংকট না কাটা পর্যন্ত সে সম্ভাবনাও দেখছেন না সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরা।
গঠনতন্ত্র অনুযায়ী আওয়ামী লীগের সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম দুই বছর মেয়াদি এসব সংগঠনের নেতাকর্মীরা বলছেন, নির্ধারিত মেয়াদের সাত মাস চলে গেছে। কবে কমিটি হবে, তাও তারা বুঝতে পারছেন না। পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে সুযোগ পাওয়ার আশায় থাকা নেতারা এ নিয়ে হতাশ এবং আতঙ্কিত। কেননা আগামীতে নির্ধারিত সময়ে সম্মেলন হলে আর বাকি থাকে ১৩ মাস। করোনার এ কাল কবে কেটে যাবে, কবে কমিটি হবে, আর কতদিন পরিচয়হীন থাকতে হবে আর পদ পেলেই বা কয়দিন দায়িত্ব পালন করতে পারবেন, তা নিয়ে শঙ্কিত তারা।

প্রসঙ্গত, গত বছরের ৬ নভেম্বর কৃষক লীগ, ৯ নভেম্বর জাতীয় শ্রমিক লীগ, ১৬ নভেম্বর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্মেলন হয়। যুবলীগের জাতীয় কংগ্রেস হয় ২৩ নভেম্বর, ২৯ নভেম্বর মৎস্যজীবী লীগ এবং স্বেচ্ছাসেবক লীগের মহানগর দক্ষিণ ও উত্তর যথাক্রমে ১১ ও ১২ নভেম্বর সম্মেলন হয়। এগুলোর মধ্যে শ্রমিক লীগ ভ্রাতৃপ্রতিম এবং বাকিগুলো সহযোগী সংগঠন। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী যুবলীগের ১৫১, স্বেচ্ছাসেবক লীগের ১৫১, কৃষক লীগের ১১১, মৎস্যজীবী লীগের ১১১, জাতীয় শ্রমিক লীগের ৩৫, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের ১০১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি।

তবে এসব সংগঠনের শীর্ষ নেতারা কেউ বলছেন, তারা কমিটি জমা দিয়েছেন, আবার কেউ বলছেন, তারা চূড়ান্ত কমিটি প্রস্তুত করেছেন। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির কারণে জমা দিতে পারেননি।

জানতে চাইলে, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সহ-প্রচার সম্পাদক ওবায়দুল হক খান  বলেন, পূর্ণাঙ্গ কমিটি না থাকায় সবাই অনিশ্চয়তায়। কমিটি ঘোষণা করা হলে যার যার দায়িত্ব বুঝে নিয়ে সবাই কাজ করতে পারতেন।

শ্রমিক লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হুমায়ূন কবীর বলেন, পূর্ণাঙ্গ কমিটি হলে সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধি পাবে। সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে পারবেন।

জানা যায়, যুবলীগ বাদে প্রতিটি সংগঠন কমিটির খসড়া করে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য সাংগঠনিক নেত্রী আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে জমা দিয়েছেন। কৃষক লীগের সভাপতি সমীর চন্দ্র চন্দ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবু, শ্রমিক লীগের সভাপতি ফজলুল হক মন্টু এবং মৎস্যজীবী লীগের সহ-সভাপতি মুহাম্মদ আলম জানান তাদের পূর্ণাঙ্গ কমিটি জমা হয়েছে। আর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, তাদের কমিটিও চূড়ান্ত। জমা দেওয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন তারা।

পূর্ণাঙ্গ কমিটি কবে নাগাদ হতে পারে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রহমান বলেন, করোনার কারণে জনসমাগম হয় এমন কর্মসূচি পরিহার করতে হচ্ছে। সামাজিক দূরত্ব মেনে চলতে হচ্ছে সবাইকে। সে কারণে এ নিয়ে আলোচনা হয়নি। তবে যত দ্রুত সম্ভব এ নিয়ে আলোচনা সাপেক্ষে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।