আন্দোলনে বিএনপির নেতা কে, জানতে চান ওবায়দুল কাদের

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে আন্দোলনের প্রস্তুতি নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপি নেতারা। তবে এই নির্বাচন এবং নির্বাচনকে ঘিরে আন্দোলনে বিএনপির শীর্ষ নেতা কে থাকবেন- তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, ‘বিএনপিকে প্রশ্ন করতে চাই এবং বলতে চাই। আগামী নির্বাচনে আপনাদের নেতা কে? আন্দোলনে আপনাদের নেতা কে? কাকে ঘিরে আন্দোলন করবেন? কাকে ঘিরে সরকার গঠন করবেন? আমরা বলে দিচ্ছি- আমাদের নেতা হচ্ছেন শেখ হাসিনা।’

সোমবার (২৭ সেপ্টেম্বর) আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে দলটির সভাপতি শেখ হাসিনার ৭৫তম জন্মদিন উপলক্ষে কৃষি ও সমবায় উপ-কমিটি আয়োজিত আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে এসব কথা বলেন তিনি।

বিএনপি নেতাদের উদ্দেশ করে সড়ক পরিবহন ও রেলপথমন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনার বিকল্প একজন নেতা আপনারা দেখান। একজনকে দেখাবেন... পলাতক, দণ্ডিত আসামি। তিনি আপনাদের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী। এটা কি বাংলাদেশের মানুষ গ্রহণ করবে? মানুষ এত বোকা নয়। মানুষ জানে বিএনপিকে ভোট দিয়ে লাভ নাই। বিএনপি আগামী নির্বাচনে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার জন্য বিভিন্ন দলকে ডাক দিয়েছেন। গতবারও ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে একটা ঐক্য করেছিলেন। সেই ঐক্যের ফলাফলও এই দেশের মানুষ দেখেছে।’
 
কাদের বলেন, ‘আগামী বছর যখন একে একে মেগা প্রকল্পগুলো উদ্বোধন হবে, তখন বিএনপি চোখে সর্ষে ফুল দেখবে। বাংলাদেশের ভোটের রাজনীতি বড় জটিল। মানুষ এখন উন্নয়ন চায়। মানুষ এখন চরিত্রবান লোককে ক্ষমতায় দেখতে চান। তিনি হলেন একমাত্র শেখ হাসিনা।’

দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের কর্মীরা অনেকেই বলেন- মূল্যায়ন হয়নি, কিছু পায়নি। এই ধরনের হাহাকার শুনতে পায়। একটু বঙ্গবন্ধু পরিবারের দিকে চেয়ে দেখুন। বঙ্গবন্ধু যখন জেলে ছিলেন; কীভাবে এই পরিবার চলেছে, কীভাবে বেগম মুজিব একটা পরিবারকে আগলে ধরেছেন; সেই ইতিহাস পড়ুন। ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিন। সততার রাজনীতির বিরল দৃষ্টান্ত বঙ্গবন্ধুর পরিবার। এই থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে। শেখ হাসিনা ছেলে-মেয়েদের দিয়ে বিকল্প কোনও পাওয়ার হাউস বা হাওয়া ভবন নির্মাণ করেননি। তিনি তাদের জ্ঞানে গরিমায়, মেধায়-পড়াশোনায় সমৃদ্ধ করেছেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের আমি বলবো, হাহাকার করছেন কেন? বাংলাদেশে এখন উপার্জনে, বেঁচে থাকার অনেক পথ, অনেক দুয়ার শেখ হাসিনা খুলে দিয়েছেন। টাকা-পয়সার দিকে চোখ দিয়ে লাভ নেই। বঙ্গবন্ধু পরিবারের দৃষ্টান্ত অনুসরণ করুন। নেত্রীর দিকে তাকান। টাকা পয়সা সম্পদের দিকে তাকাবেন না। আমার অবাক লাগে কিছু কিছু মানুষ আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়েছে। শুধু টাকা আর টাকা। সম্পদ আর সম্পদ। দেশে সম্পদ, বিদেশে সম্পদ। এদের এই বেপরোয়া লোভ লালসার যেন কোন শেষ নেই। আমি মাঝে মাঝে ভাবি জীবন উপভোগের জন্য এদের আর কত টাকা দরকার? কত সম্পদের দরকার। 

সবাইকে আদর্শের রাজনীতি করার আহ্বান জানিয়ে কাদের বলেন, বেঁচে থাকার জন্য টাকা ও সম্পদ বানানোর প্রয়োজন নেই। দুনিয়া থেকে চলে গেলে এগুলো কে খাবে? এত টাকা এত সম্পদের কি প্রয়োজন। মিনিমাম যেটুকু প্রয়োজন সচ্ছলতার জন্য, সেইটুকু অর্জন করেন।  

আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের শেখ হাসিনার সততা থেকে শিক্ষা নেওয়ার আহ্বান করেন কাদের। বলেন, ‘যার টাকা পয়সার প্রতি যার লোভ নেই। বাংলাদেশের বহু গরিব মানুষ শেখ হাসিনার সাহায্যে চলে। বহু অসুস্থ মানুষকে চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দেন। 

এই দেশের রাজনীতিতে পঁচাত্তর পরবর্তীকালের সবচেয়ে ঝুঁকিময় জীবন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, বারবার ষড়যন্ত্রের রাজনীতির শিকার হয়েছেন তিনি। তার জীবনের ওপর বারবার আঘাত করা হয়েছিল। অন্তত ২০ বার হত্যার চেষ্টা হয়েছিল। এখনও ষড়যন্ত্রের বুলেট তার পিছু ছাড়েনি। কিন্তু শেখ হাসিনা ভয়কে জয় করেছেন। পিতা বঙ্গবন্ধুর মতো ভয়কে জয় করে, হাসিমুখে সকল ষড়যন্ত্র মাড়িয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন অকুতোভয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। 

কৃষি ও সমবায় উপ-কমিটির চেয়ারম্যান মির্জা আব্দুল জলিলের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব ফরিদুন্নাহার লাইলীর পরিচালনায় আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম।