ঘাবড়াবেন না: জাপা এমপিকে প্রধানমন্ত্রী

বিএনপির চরম দুঃশাসন, দুর্নীতি, জঙ্গিবাদ ও ভুয়া ভোটার লিস্ট করে নির্বাচনি বৈতরণী পার হওয়ার খায়েশের কারণে ওয়ান ইলেভেন এসেছিল বলে অভিযোগ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে এমন পরিস্থিতি আর আসবে না বলে আশ্বস্ত করেছেন তিনি। সংসদে সম্পূরক প্রশ্নকারী জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ফখরুল ইমামকে উদ্দেশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ঘাবড়ানোর কিছুই নেই, এটুকু বলতে পারি। ঘাবড়াবেন না, আমরা আছি না? কোনও চিন্তা নেই।

বুধবার (১১ জানুয়ারি) জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তরে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। জাতীয় পার্টির এমপি বর্তমান পরিস্থিতিকে ‘অস্থির’ উল্লেখ করে সম্পূরক প্রশ্ন করেন। এর জবাবে দিতে গিয়ে সংসদ নেতা তাকে এভাবে আশ্বস্ত করেন।

সম্পূরক প্রশ্নে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ফখরুল ইমাম বলেন, আজকাল যে অবস্থা! আজ কিন্তু ১/১১। এই ১/১১-এর ভয়ে কিন্তু আমরা অস্থির। এবং দেশের যা পরিস্থিতি। আমাদের বোঝার যে ক্ষমতা তাতে জানি, আমাদের দেশে প্রজ্ঞাবান নেতা আছেন, ওয়ান ইলেভেন আসবে না। তবু আমার জিজ্ঞাসা, সবপক্ষের মধ্যে রাজনৈতিক সমঝোতার লক্ষ্যে পা বাড়ানোর বোধহয় এখনই সময়। আপনি কী মনে করেন?

জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (ছবি: ফোকাস বাংলা)

জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফখরুল ইমামকে না ঘাবড়ানোর পরামর্শ দেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা সরকারে যখন আছি, জনগণের জানমাল রক্ষা করার দায়িত্ব আমাদের। এমন কোনও শক্তি এখনও তৈরি হয়নি বাংলাদেশে, যে আওয়ামী লীগ সরকারকে উৎখাত করতে পারে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতা দখলকারী কোনও মিলিটারি ডিকটেটরের পকেট থেকে জন্ম নেয়নি। আওয়ামী লীগের জন্ম এ দেশের মাটি ও মানুষ থেকে। কাজেই আমাদের শেকড় অনেক দূর প্রোথিত আছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আইয়ুব খান, জিয়াউর রহমান, এইচ এম এরশাদ, খালেদা জিয়া সবাই আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করতে চেষ্টা করেছিল, কিন্তু পারেনি। আর কোনও দিন পারবে না।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগের বিজয় অনিবার্য জেনে বিএনপি নির্বাচন বর্জন করেছিল। ২০১৮ সালে তারা নির্বাচনে অংশ নিয়ে মনোনয়ন বাণিজ্য করে। একটা সিটে দুই/তিনটা করে নমিনেশন দেয়। একটা আসে লন্ডন থেকে। একটা যায় পুরানা পল্টন অফিস থেকে। আরেকটা গুলশান অফিস থেকে। সকালে একটা, বিকালে একটা, দুপুরে একটা। দলের যোগ্য প্রার্থীদের কাছে লন্ডন থেকে ম্যাসেজ আসে মোটা অঙ্কের টাকা না দিয়ে নির্বাচন করতে পারবে না। ওইভাবে যারা নির্বাচন করতে যায় তারা আর কতক্ষণ নির্বাচনে টিকে থাকে। মাঝপথে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ায়। সরে গিয়ে নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করে। তারা বিভিন্নভাবে প্রচার-অপ্রচার চলিয়ে সেটা তারা প্রশ্নবিদ্ধ করতে পেরেছে- এটা বাস্তব। কিন্তু জনগণের আস্থা-বিশ্বাস এখনও আওয়ামী লীগের ওপর আছে।

তিনি বলেন, ২০১৪-১৫ সালের অগ্নিসন্ত্রাস, মানুষ খুন, মানুষকে পুড়িয়ে মারা। সরকারি ও সাধারণ মানুষের সম্পত্তি নষ্ট করা। এমন কোনও অপকর্ম নেই যা করে সরকার হটানোর চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু এতে জনগণের সায় তারা পায়নি। যারা নির্বাচনকে কলুষিত করেছে, নির্বাচনি প্রক্রিয়াকে ধ্বংস করেছে, মানুষের ভোটের অধিকার ছিনিয়ে নিয়েছে, যারা মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছে, তারাই নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তোলে।

সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেন, প্রতিটি নির্বাচন পর্যালোচনা করলে দেখা যায় একমাত্র আওয়ামী লীগ সরকার আছে বলেই মানুষ ভোটটা শান্তিতে দিতে পারছে। এখানে সরকারের হস্তক্ষেপ করার দরকার নেই। জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে আওয়ামী লীগকে ভোট দেয়। কারণ, তারা জানে আওয়ামী লীগ যে ওয়াদা দেয় তা রাখে। আমরা কথা দিয়ে কথা রাখি।