বিএনপিই দেশের প্রথম কিংস পার্টি: তথ্যমন্ত্রী

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বাংলাদেশে সরকারের ছত্রচ্ছায়ায় গঠিত প্রথম দল বা কিংস পার্টি হচ্ছে বিএনপি। কারণ, জিয়াউর রহমান ক্ষমতা দখল করে সরকার গঠন করেছিলেন। তারপর সরকারের ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট বিলিয়ে ছিলেন এবং সেই উচ্ছিষ্ট বিলিয়ে দল গঠন করেছিলেন।

বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর) বিকালে সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে মতবিনিময়কালে সাংবাদিকরা রাজনীতিতে কিংস পার্টি নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি এ কথা বলেন। তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তথ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, রাজনীতিতে নাগরিক সমাজ ও বুদ্ধিজীবীদের ভূমিকা প্রসঙ্গে হাছান মাহমুদ বলেন, নাগরিক সমাজ সময়ে সময়ে যেসব কথাবার্তা বলে সেগুলো আমরা গুরুত্ব সহকারে দেখি। কিন্তু আজ দেশজুড়ে এক মাসের বেশি সময় ধরে যে অগ্নিসন্ত্রাস, অনেক মানুষ এই অগ্নিসন্ত্রাসের বলি হয়েছে, আগুনে ঝলসে গেছে। গতকালও সারা দেশে ১০টি গাড়ি পোড়ানো হয়েছে। এগুলো তখনই বন্ধ হবে যখন সারা দেশের মানুষ আওয়াজ তুলবে এবং সেই আওয়াজটা আমরা যারা সচেতন নাগরিক, সাংবাদিক সমাজ ও নাগরিক সমাজ তাদের পক্ষ থেকে আসা প্রয়োজন। কিন্তু নাগরিক সমাজের কোনও বিবৃতি নাই, কোনও বক্তব্য নাই। এটি খুবই দুঃখজনক।

তিনি বলেন, আমি মনে করি নাগরিক সমাজ বা বুদ্ধিজীবী বলে পরিচিত যারা সময়ে সময়ে বিবৃতি দেয়, আর এখন নিশ্চুপ, তাদের চিহ্নিত করা প্রয়োজন। এরা সুবিধাবাদী এবং এদের মুখোশ উন্মোচিত হয়েছে। আমি সাংবাদিকদেরও অনুরোধ জানাবো এদের চিনে রাখার জন্য।

বিএনপি অংশ না নিলে নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে কিনা এ প্রশ্নে হাছান মাহমুদ বলেন, একটি দল নির্বাচনে না এলে সেই নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না, এমন তো সংবিধানে লেখা নাই। পৃথিবীর কোনও আইনেও লেখা নাই। বাংলাদেশে বহু নির্বাচন হয়েছে, যেখানে বহু দল অংশ নেয়নি। যেমন, ১৯৭০-এর নির্বাচনেও অনেক বড় নেতার নেতৃত্বাধীন দল অংশগ্রহণ করেনি, কিন্তু মানুষের ব্যাপক অংশগ্রহণ ছিল এবং সেই নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হয়েছে।

বিএনপি থেকে সবাই পালিয়ে যাচ্ছে

বিএনপি সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর মন্তব্য ‘আওয়ামী লীগ দল ভাগানোর রাজনীতি করছে’। এ প্রসঙ্গে মন্ত্রী হাছান বলেন, আসলে বিএনপি থেকে সবাই পালিয়ে যাচ্ছে। কেন্দ্র থেকে শুরু করে উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত নেতারা বিএনপি থেকে পালিয়ে যাচ্ছে। বিএনপি নেতাদের কাছে আমার প্রশ্ন, এই দলটা কেন করেন, যে দল আপনাদের সংসদ নির্বাচন, উপজেলা বা জেলা পরিষদ নির্বাচন তো দূরের কথা, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের নির্বাচনও করতে দেয় না?

তিনি বলেন, একসময় রিজভী সাহেবরা দেখবেন যে উনারা কয়েকজন ছাড়া আর কেউ নাই, ছোট হয়ে আসছে পৃথিবী। কারণ, বিএনপির এই অপরাজনীতির সঙ্গে বিএনপির নেতারাই একমত নয়। রিজভী সাহেবের মতো কিছু মানুষ আছে- ইয়েস স্যার, হ্যাঁ স্যার, জি স্যার। তারাই তারেক রহমানের নির্দেশনা মেনে এই অগ্নিসন্ত্রাসের আহ্বান জানাচ্ছে। এই অপরাজনীতি থেকে তাদের বের হয়ে আসা প্রয়োজন।

অন্যান্য দেশের উদাহরণ দিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে হাঙ্গেরির নির্বাচনে একটি বড় দল অংশ নেয়নি, ইউরোপের আরও কয়েকটি দেশে এ রকম হয়েছে, কিন্তু সেই নির্বাচনগুলো গ্রহণযোগ্য হয়েছে। দেশেও কয়েক মাস আগে সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপিসহ তার মিত্ররা, এমনকি তৃণমূল বিএনপি বা অন্যান্য যেসব দল আজ অংশগ্রহণ করছে তারাও অংশ নেয়নি। এরপরও জনগণের ব্যাপক অংশগ্রহণ ছিল। সে কারণে ওই নির্বাচন নিয়ে কোনও প্রশ্ন নাই। এবার অনেকের প্রার্থিতা বাতিল হওয়ার পরও প্রতি আসনে প্রায় সাত জন করে প্রার্থী আছে। গ্রামগঞ্জে নির্বাচনের উৎসব শুরু হয়ে গেছে। সুতরাং দেখতে পারবেন আগামী ৭ জানুয়ারির নির্বাচনেও জনগণের ব্যাপক অংশগ্রহণ থাকবে।