অনেক দিন পর বেগম জিয়ার মুখে হাসি দেখেছি: মির্জা ফখরুল

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বর্তমান শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আমি গতকাল (বৃহস্পতিবার) রাতে ম্যাডামকে দেখতে হাসপাতালে গিয়েছিলাম। দেখে আমার খুব ভালো লেগেছে। অনেক দিন পর তার মুখে হাসি দেখেছি, যেটা এই কয়দিন ছিল না। একেবারেই ছিল না।’

শুক্রবার (২১ মে) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে মহিলা দল আয়োজিত এক সভায় তিনি এসব কথা বলেন। মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কবি আব্দুল হাই শিকদার, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

ফখরুল বলেন, ‘আমাদের দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ফ্যাসিস্ট সরকারের নির্মম অত্যাচার, নির্যাতনে দীর্ঘ তিন বছর কারারুদ্ধ হয়ে আছেন। তিনি এখন অত্যন্ত অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।’

তিনি বলেন, ‘সবাই জানেন বেগম জিয়া করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। পোস্ট কোভিডে অনেক জটিলতা দেখা দেয়, শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। আমি তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও হাসপাতালের চিকিৎসকদের কাছে অত্যন্ত কৃতজ্ঞ, যারা সম্পূর্ণ আন্তরিকতা নিয়ে তার চিকিৎসা করছেন। প্রতিদিন তার মেডিক্যাল বোর্ড করছেন, প্রতিদিন তার চিকিৎসা মনিটর করছেন।’

খালেদা জিয়ার হার্ট ও কিডনি এফেক্টেড

খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার কথা জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, ‘গতকাল চিকিৎসকদের কাছ থেকে জেনেছি, তার শরীরে টেম্পারেচার নেই, শ্বাসকষ্ট নেই। কিন্তু পোস্ট কোভিড জটিলতায় তার হার্ট ও কিডনি এফেক্টেড। এটা নিয়ে চিকিৎসকরা অত্যন্ত উদ্বিগ্ন, চিন্তিত।’

বিদেশে চিকিৎসার আবেদন প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, ‘দুর্ভাগ্য আমাদের, তার পরিবারের পক্ষ থেকে যখন বিদেশে চিকিৎসার জন্য আবেদন করা হয়েছিল, যদিও সরকার তাতে সাড়া দেয়নি। চিকিৎসকরা বলছেন, উন্নত দেশে এ ধরনের চিকিৎসার ব্যবস্থা আছে, যেগুলোর মাধ্যমে তার চিকিৎসা সম্ভব, যেটা এই দেশে নেই। সেই কারণে বারবার করে তার পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে। দুর্ভাগ্য আমাদের সরকার আবেদনে সাড়া দেয়নি।’

‘তারা মনে করে, বেগম জিয়া যদি দেশের বাইরে যান, তাহলে আবার তিনি তাদের বিরুদ্ধে কাজ শুরু করবেন। ভয়টা কেন, ভয়টা এ কারণেই, এ দেশের জনগণের যে নেতা, সেটা তিনি। তিনি গণতন্ত্রের শেষ আশ্রয়স্থল’ বলে উল্লেখ করেন মির্জা ফখরুল।

প্রসঙ্গত, গত ১১ এপ্রিল করোনা পরীক্ষায় পজিটিভ রিপোর্ট আসে খালেদা জিয়ার। ১৫ এপ্রিল সিটিস্ক্যান করান তিনি। পরে অক্সিজেনজনিত সমস্যা দেখা দিলে ২৭ এপ্রিল রাতে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। ২৮ এপ্রিল ব্যক্তিগত ও এভারকেয়ার হাসপাতালের চিকিৎসকদের সমন্বয়ে ১০ সদস্যের মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়। ৩ মে শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা দেখা দিলে সেদিন বিকালে করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) স্থানান্তর করা হয় খালেদা জিয়াকে। পরে তাকে বিদেশে উন্নত চিকিৎসার সুযোগ দিতে ৫ মে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে লিখিত চিঠি দেন তার ভাই শামীম এস্কান্দার। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৬ মে খালেদা জিয়ার করোনা পরীক্ষা নেগেটিভ আসে।

আরও পড়ুন-

হাসপাতালে ২৩ দিন, খালেদা জিয়ার অবস্থা স্থিতিশীল

খালেদা জিয়ার বিদেশযাত্রা নিয়ে নতুন হিসাব-নিকাশ