বাজেটকে অর্থনীতির যাত্রাবিন্দু হিসেবে দেখতে চায় বিএনপি

বিএনপি এবারের বাজেটকে কেবল নির্দিষ্ট অর্থবছরের হিসাবের চেয়ে আগামী দিনের অর্থনীতির সুনির্দিষ্ট পথনির্দেশের যাত্রাবিন্দু হিসেবে দেখতে চায় বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শুক্রবার (২৮ মে) রাজধানীর গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত ‘বাজেট ভাবনা: ২০-২১ অর্থবছর’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে দলের এ অবস্থান তুলে ধরেন মির্জা ফখরুল।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিতভাবে বাজেট-ভাবনা তুলে ধরেন বিএনপি মহাসচিব। তিনি বলেন, ‘বাজেট শুধু সরকারের অর্থ সংগ্রহ ও ব্যয়ের বিষয় নয়। বাজেটে কত আয় ও কত ব্যয় করা হলো তার চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ আর্থিক নীতি। মূলত আর্থিক নীতি নির্ভর করে একটি সরকারের রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের ওপর। সে পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তির বছরে আমরা আগামীর বাংলাদেশকে কোন অর্থনীতির নীতির আলোকে দেখতে চাই, সেটা নির্ধারণ করা অত্যন্ত জরুরি।’

এ প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘আমরা যদি সুনির্দিষ্ট অর্থনৈতিক নীতি ঘোষণা করতে না পারি, তবে দেশের সার্বিক আর্থিক খাত দিশাহীন হয়ে পড়বে। বিএনপি এবারের বাজেটকে কেবল নির্দিষ্ট অর্থবছরের হিসাবের চেয়ে আগামী দিনের অর্থনীতির সুনির্দিষ্ট পথনির্দেশের যাত্রাবিন্দু হিসেবে দেখতে চায়। আর সে লক্ষ্যে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি আগামী বাজেটকে ভবিষ্যতের অর্থনীতির নীতি কৌশল হিসেবে “সুশাসন ও জবাবদিহি নিশ্চিতকরণ অর্থনীতি” প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার হিসেবে দেখতে চায়।’

ফখরুল বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, একটি দেশের অর্থনীতি তখনই সত্যিকার অর্থে জনবান্ধব হয়ে ওঠে যখন সেখানে “সুশাসন ও জবাবদিহিমূলক সরকার” জনগণের অবাধ নিরপেক্ষ ভোটে নির্বাচিত হয়।’

করোনা সংক্রমণের বাস্তবতাকে সামনে রেখে বাজেট পরিকল্পনা জরুরি উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘করোনা সংক্রমণ রোধ করতে না পারলে কোনোভাবেই অর্থনীতি পুনরুদ্ধার করা সম্ভব নয়।’

ফখরুলের অভিযোগ, করোনা সংকট মোকাবিলায় এবং করোনাকালে অর্থনীতিকে সচল রাখতে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণে সরকার চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে। এই ব্যর্থতা এবং এর সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিণতির দায় বর্তমান ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারকেই বহন করতে হবে।’

বিএনপি মহাসচিব তার লিখিত বক্তব্যে শীর্ষ অর্থনীতিবিদের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, ‘করোনাকালের এবারের বাজেট গতানুগতিক বাজেট হওয়া উচিত নয়। করতে হবে বিশেষ সময়ের বিশেষ বাজেট। এর মুখ্য উদ্দেশ্য হবে করোনার প্রভাব মোকাবিলার মাধ্যমে জনগণের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা ও দুর্ভোগ উপশম করা। ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনীতি পুনরুদ্ধার করে স্বাভাবিক গতি ফিরিয়ে আনা। এ জন্য দরকার হবে সহায়ক নীতি সহায়তা।’

তিনি বলেন, ‘অনেকে মনে করেন, করোনার ভয়াবহতা না কমলে গতানুগতিক বাজেট করে কোনও লাভ নেই। লক্ষ্য হওয়া উচিত আগামী ৬ মাসের জন্য একটি অন্তর্বর্তীকালীন বাজেট করা। কারণ, করোনার কারণে পূর্ণাঙ্গ বাজেটের কোনও লক্ষ্যই অর্জিত হবে না।’

এ সময় মির্জা ফখরুলের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু।

FILE-BUDGET-Final