জিয়াউর রহমানকে সম্পৃক্ত করতেই ‘নতুন গীত’ গাইছে সরকার: ফখরুল

জিয়াউর রহমানের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে সরকার ‘নতুন গীত’ গাইছে বলে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ‘বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জিয়াউর রহমান সম্পৃক্ত’—ক্ষমতাসীন দলের শীর্ষ পর্য়ায়ের নেতাদের এরকম বক্তব্যের জবাব দিতে গিয়ে সোমবার (২ আগস্ট) এক ভার্চুয়াল আলোচনায় বিএনপি মহাসচিব এ মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, ‘এদের (আওয়ামী লীগ সরকার) কাজ কী? এদের কাজ হচ্ছে সারাক্ষণ বিএনপিকে দোষারোপ করা, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান সাহেবকে কীভাবে হেয় করা যায়, তার চেষ্টা করা। কীভাবে খালেদা জিয়াকে খাটো করা যায়, তার চেষ্টা করা। কীভাবে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার করা যায়, সেই চেষ্টাই তারা করছে।’

ফখরুল বলেন, ‘অত্যন্ত সম্মানিত নেতা শেখ মুজিবুর রহমানের ১৫ আগস্টের যে হত্যাকাণ্ড ১৯৭৫ সালে, আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়া পার্লামেন্টে সব সময়েই এ ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন। আমরা কেউই কোনও হত্যাকাণ্ড সমর্থন করি না। এই হত্যাকাণ্ডের বিচার হয়েছে, বিচার করেছেন আপনারা (আওয়ামী লীগ সরকার)। সেই বিচার করার পরে সবকিছু শেষ হয়ে গেছে। অথচ আপনারা এখন শুরু করেছেন নতুন একটা গীত গাওয়া—জিয়াউর রহমান এটার সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘কোথাও প্রমাণ করতে পারেনি, কেউ না। আজ পর্যন্ত কেউ এই কথা বলে নাই যে জিয়াউর রহমান সাহেব সম্পৃক্ত ছিলেন। জিয়াউর রহমান সাহেব তো তখন ডেপুটি চিফ মার্শাল অ্যাডমিনিস্ট্রেটরও ছিলেন না। তিনি সেনাবাহিনীর উপ-প্রধান ছিলেন মাত্র।’

‘সেনাপ্রধান ছিলেন শফিউল্লাহ সাহেব (কে এম শফিউল্লাহ)। সেই শফিউল্লাহ সাহেব তো গিয়ে খন্দকার মোশতাককে স্যালুট করেছেন, একে খন্দকার সাহেব (বিমান বাহিনী প্রধান) স্যালুট করেছেন, নেভাল চিফ স্যালুট করেছেন। আপনাদের খন্দকার মোশতাক সাহেবের সঙ্গে পুরো ৩১ জনের মন্ত্রিসভা গিয়ে শেখ মুজিবুর রহমান সাহেবের রক্তের ওপর দিয়ে হেঁটে গিয়ে তারা মন্ত্রিত্বের শপথ নিয়েছেন।’

তিনি বলেন, ‘এই হত্যাকাণ্ড তো আপনারা ঘটিয়েছেন, আওয়ামী লীগ ঘটিয়েছে। অন্য কেউ তার সঙ্গে জড়িত ছিল না। যারা করেছে তারা সামরিক বাহিনীর লোক ছিল। তাদের সঙ্গে আপনারা যুক্ত ছিলেন বলেই আপনারা করেছেন।’

‘সুতরাং, ওই মাছ দিয়ে শাক ঢাকার চেষ্টা করবেন না। নিজেদের অপকর্ম ঢাকার জন্যে অন্যকে দোষারোপ করে লাভ নেই। নিজেরা পরিষ্কার হোন, নিজেরা পরিচ্ছন্ন হোন, পরিশুদ্ধ হোন। হত্যার রাজনীতি বাদ দেন এবং সন্ত্রাসের রাজনীতি বাদ দেন, জনগণকে প্রতারণা করার রাজনীতি বাদ দেন। বাদ দিয়ে আপনারা সঠিকভাবে জনগণের যে আকাঙ্ক্ষা, সেই আকাঙ্ক্ষাকে পূরণ করেন। ১৯৭২ সালের সেই সংবিধান মতো কাজ করেন’- যোগ করেন তিনি।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকে কী করেছেন? সব অধিকার খর্ব করে দিয়েছেন বাংলাদেশের মানুষের। যাতে লিখতে না পারেন সংবাদকর্মীরা, সেজন্য ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট করেছেন। এখন কথায় কথায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে লেলিয়ে দেন। তারা ধরে নিয়ে এসে বিভিন্ন রকমের অত্যাচার-নিপীড়ন-নির্যাতন করে, তাদের বিরুদ্ধে মামলা দেয়।’