‘আক্রমণ হওয়ার পর পুলিশ এসে বলে আপনারা চিন্তা করবেন না’

দেশের সাম্প্রতিক ‘সাম্প্রদায়িক হামলার পেছনে পুলিশের ভূমিকাকে দায়ী করেছে বিএনপি। দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, দেশের বিভিন্ন মন্দিরে হামলার পর পুলিশ এসেছে।  আক্রমণ হওয়ার পর পুলিশ এসে বলে ‘আপনারা চিন্তা করবেন না’।

কুমিল্লা ও রংপুরে সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনার পর স্থানীয় এলাকা সরেজমিন ঘুরে এসেছেন গয়েশ্বর চন্দ্র রায়সহ দলের কয়েকজন নেতা। পরিদর্শনের পর দলীয় বক্তব্য তুলে ধরতে সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি। সোমবার (২৫ অক্টোবর) রাজধানীর নয়াপল্টনে সংবাদ সম্মেলনে দলের অবস্থান তুলে ধরেন গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।

তিনি বলেন, ‘আমি রংপুরে গিয়েছিলাম। সেখানে হিন্দুরা বলেছেন, হামলার পর পুলিশ এসেছে। কুমিল্লার একটি মন্দিরে তিনবার আক্রমণ হয়েছে। প্রতিবারই পুলিশ আক্রমণের পরে এসেছে।’

তিনি জানান, মন্দিরে আগুন, ভাঙচুরের ঘটনায় এখনও আতঙ্ক কাটেনি। প্রশাসন গুরুত্ব না দেওয়ায় ৬ থেকে ৭ ঘণ্টাব্যাপী তাণ্ডব চালায় দুষ্কৃতকারীরা। এখনও বিচ্ছিন্নভাবে বিভিন্ন জায়গায় মন্দিরের প্রতিমা ভাঙচুর হচ্ছে।’

এর আগে,  রবিবার (১৭ অক্টোবর) অনুষ্ঠিত স্থায়ী কমিটির বৈঠকে দেশের বর্তমান ‘সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের ঘটনা’র পরিপ্রেক্ষিতে দুটি কমিটি গঠন করে বিএনপি। এরমধ্যে একটি কমিটি দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের নেতৃত্বে উপদ্রুত এলাকাগুলোর ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের সঙ্গে দেখা করে সহমর্মিতা প্রকাশ করেছে। দ্বিতীয় আরেকটি কমিটি সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজলের নেতৃত্বে ঘটনাগুলোর তদন্ত করছে।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র অভিযোগ করেন, সারাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনায় হওয়া মামলাগুলোতে বিএনপি নেতাকর্মীদের টার্গেট করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘সঠিকভাবে অনুসন্ধান করলে দেখা যায়, হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা-মন্দির ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় প্রত্যক্ষভাবে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা জড়িত। কিন্তু তাদের সামনে না এনে যারা নিরীহ-শান্তিপ্রিয়, তাদের নামে মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘এসব ঘটনায় সরকার একটা উদ্যোগ নিয়েছে, তা হলো অনেক মামলা। মামলা দিয়ে হামলাকারীদের বিচার করার কোনও উদ্যোগ সরকারের নেই। তাদের উদ্যোগ হচ্ছে—এই সুযোগে মিথ্যা মামলা দিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের গ্রেফতার-হয়রানি করার একটা নীলনকশা। এই অবস্থায় সুস্পষ্টভাবে বলা যায়, সরকার পরিকল্পিতভাবে বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাদের হেনস্তা করার জন্য সুযোগ নিচ্ছে।’

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী, বরকতউল্লাহ বুলু, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী প্রমুখ।