পদ্মা সেতু নয়, গা-জ্বালা হাজার কোটি টাকা লুটের কারণে: ফখরুল

পদ্মা সেতু নয়, মেগা প্রকল্পের হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশ পাচারের কারণেই ‘গায়ে জ্বালা’ বলে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ‘পদ্মা সেতুর কারণে সারা দেশে মানুষ খুশি হলেও বিএনপি ও তাদের দোসরদের বুকে অনেক জ্বালা সৃষ্টি হয়েছে’ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় বৃহস্পতিবার (২৬ মে) দুপুরে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে বিএনপি মহাসচিব এ মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, ‘আমাদের সরকার তো এখন গদগদ হয়ে গেছে। সারাক্ষণ এখন শুধু পদ্মা সেতু, পদ্মা সেতেু, পদ্মা সেতু নিয়ে বলছে। পদ্মা সেতু তো কারও পৈত্রিক সম্পত্তি দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে না। পদ্মা সেতু এদেশের মানুষের পকেটের টাকা দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে। সমস্যাটা কোথায়? যেটা করতে লাগতো ১০ হাজার কোটি টাকা, সেটা তৈরি করা হচ্ছে এখন ৪০ হাজার কোটি টাকা দিয়ে।’

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আমাদের গায়ে নাকি জ্বালা হচ্ছে। গায়ে জ্বালা তো হচ্ছে। গায়ে জ্বালা হচ্ছে পদ্মা সেতু বলে নয়, আমাদের গায়ে জ্বালা হচ্ছে পদ্মা সেতু থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা লুট করে ওরা বিদেশে সম্পদ করছে। এখানেই আমাদের গায়ে জ্বালা হচ্ছে। কারণ, এটা আমাদের টাকা, আমাদের কষ্টার্জিত টাকা এবং সব মেগা প্রজেক্ট তোমরা এভাবে করছো।’

রাজধানীর মেট্রোরেল প্রকল্পের প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আপনারা নিশ্চয়ই মেট্রোরেল দেখছেন। মিরপুর থেকে যদি দেখেন— কিছুক্ষণ পর পর স্টেশন। এর কোনও প্রয়োজন নেই। আগারগাঁওয়ে একটা, তারপরে শেওড়াপাড়ায় একটা, তারপরে এসে সংসদ ভবনের ওখানে আরেকটা, এরপর ফার্মগেটে একটা।’

তিনি বলেন, ‘এত কাছাকাছি স্টেশন পৃথিবীর আর কোথাও দেখিনি। কারণ কী? একটাই যে, অনেক টাকা পাওয়া যাবে। এদের লক্ষ্য হচ্ছে— দুর্নীতি, এদের লক্ষ্য হচ্ছে লুট, এদের লক্ষ্য হচ্ছে বাংলাদেশকে লুটে নিয়ে যাওয়া।’

মেগা প্রকল্পের নামে সরকার দেশকে ‘ঋণগ্রন্থ’ করে ফেলেছে বলে অভিযোগ করে ফখরুল বলেন, ‘আমাদের দেশকে ঋণের গভীরে নিয়ে গেছে। আমরা পুরোপুরি ঋণগ্রস্ত হয়ে গেছি। আমরা বুঝতে পারছি না, আমরা চাকচিক্য দেখে অনেকে মনে করছি কত কী...?’

‘কালজয়ী রাষ্ট্রনায়ক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বীর উত্তম’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন উপলক্ষে জিয়া পরিষদ এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। সংকলিত এই গ্রন্থের প্রকাশক জিয়া পরিষদের পক্ষে অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস। গ্রন্থটির মূল্য পাঁচশ’ টাকা।

জিয়া পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুসের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম মহাসচিব অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক মাহবুবউল্লাহ, রাষ্ট্র বিজ্ঞানী এম সলিমুল্লাহ খান, অধ্যাপক আবদুল লতিফ মাসুম, অধ্যাপক মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম, অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম, অধ্যাপক মুজিবুর রহমান হাওলাদার, অধ্যাপক আবু জাফর খান, অধ্যাপক কামরুল আহসান, অধ্যাপক এমতাজ হোসেন, আবদুল্লাহ হিল মাসুদ বক্তব্য রাখেন।