সমাবেশকে কেন্দ্র করে বিএনপি কর্মীদের উচ্ছ্বাস    

বিএনপির গণসমাবেশ শুরু হওয়ার আগেই কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে গেছে রাজধানীর গোলাপবাগ মাঠ। পরে আশপাশের এলাকাতেও ছড়িয়ে পড়েন বিএনপির নেতাকর্মীরা। দলটির নেতাদের দাবি, ঢাকার গণসমাবেশে কয়েক লাখ মানুষের সমাগম হয়েছে। বিএনপির গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে সারা দেশের নেতাকর্মীদের মধ্যেই এক ধরনের উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা গেছে। এই সমাবেশ থেকেই সরকার পতনের লাগাতার আন্দোলনে নামবে বলে মনে করছেন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা নেতাকর্মীরা।

শনিবার (১০ ডিসেম্বর) সকাল থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত সরেজমিনে আরামবাগ, কমলাপুর রেলস্টেশন, টিটিপাড়া ছাড়িয়ে খিলগাঁও ফ্লাইওভার পর্যন্ত এবং সায়েদাবাদ ফ্লাইওভারের ওপর বিএনপি নেতাকর্মীদের অবস্থান। এছাড়া সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে শুরু করে যাত্রাবাড়ী দয়াগঞ্জ ও মানিকনগর এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছেন তারা।

বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, খুলনা, যশোর, রাজশাহী, মানিকগঞ্জ, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জসহ আশপাশের বিভিন্ন জেলাগুলো থেকে হাজার হাজার নেতাকর্মী ঢাকা মহানগরীয় গণসমাবেশ অংশ নিচ্ছেন।

বিএনপির-সমাবেশ-3

বাসে তল্লাশি ও বন্ধ থাকার কারণে ট্রেনে চড়ে আসছেন বেশিরভাগ নেতাকর্মী। গত দুই দিন থেকে কমলাপুর রেলস্টেশন কড়াকড়ি থাকলেও সমাবেশের দিন সকাল থেকে চেকপোস্ট ঢিলেঢালা থাকে। আর নেতাকর্মীরা কমলাপুর থেকে আলাদা আলাদা ভাবে বের হওয়ার পরে রাস্তায় এসে একত্র হয় তারা। পরে সেখান থেকে মিছিল নিয়ে সমাবেশে স্থলে আসে বিএনপি নেতাকর্মীরা।

ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা অবস্থান নিয়েছে। কমলাপুরের টিটিপাড়া মোড়েও পুলিশের এপিবিএন'র ১৫০ থেকে ২০০ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া যাত্রাবাড়ী, পল্টন, আরামবাগ, কমলাপুর, মতিঝিল ও রাজধানী মার্কেট সহ পাশের এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।

এছাড়া সমাবেশকে ঘিরে র‌্যাবের হেলিকপ্টার টহল এবং গোয়েন্দা সংস্থার একাধিক টিম কাজ করছে মাঠে। জয়পুরহাটের সাবেক সংসদ সদস্য ও জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোস্তফা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, আমরা শেখ হাসিনার পতন ছাড়া রাস্তা থেকে যাবো না। বিএনপির নেতাকর্মীরা এখন আর মামলা হামলা ও মৃত্যুর ভয় পায় না।

তিনি বলেন, ‘বিএনপি কোনও সহিংসতা রাজনীতি করবে না। আমরা গণতান্ত্রিক উপায়ে একটি সরকারকে পতন ঘটিয়ে ছাড়বো।’

এই সমাবেশ থেকে আপনারা কী আশা করেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এই সমাবেশ থেকে আমরা স্পষ্ট নির্দেশনা চাই নেতাদের কাছ থেকে।’

বিএনপির-সমাবেশ-২

বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ফয়সল আলিমের সঙ্গে কথা হয় বাংলা ট্রিবিউনের। তিনি বলেন, ‘নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের দিকে যাওয়ার কোনও উদ্দেশ্য নেই বিএনপি নেতাকর্মীদের। আমরা এক দফা বাস্তবায়নের জন্যই মাঠে নেমেছি, আমরা মাঠে থাকবো। আজকে এই গণসমাবেশ থেকে আমাদের রূপরেখা দেওয়া হবে।’

‘এই দেশে শুধু আওয়ামী লীগ না, বিএনপিও আছে। আওয়ামী লীগের জানা উচিত এই দেশে বিএনপি এখনও হারিয়ে যায়নি' সমাবেশে এসে এভাবে নিজের প্রতিক্রিয়া জানান কুমিল্লা নাঙ্গলকোট থেকে আসা যুবদল নেতা রফিকুল ইসলাম।

অভিযোগের সুরে তিনি বলেন, ‘আমরা চাইলে তাদের অনেক কিছুই করতে পারি, কিন্তু এতদিন কিছুই করি নাই বলিও নাই। এরা কথায় কথায় পুলিশ নিয়ে আসে, লোকজনকে ধরে নিয়ে যায়, মিথ্যা মামলা দেয়। এদের জ্বালায় বাঁচা মুশকিল, আজকের পর মনে হয় না তাদের অত্যাচার নিপীড়ন সহ্য করবো! হাই কমান্ড থেকে যে নির্দেশ আসে আমরা সেটার অপেক্ষায় বসে আছি।’