আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারকে রোগ থেকে মুক্তির ওষুধ দিতে হবে: গয়েশ্বর

জনগণকে আন্দোলনের মধ্য দিয়ে সরকারকে রোগ থেকে মুক্তির ওষুধ দিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।

শুক্রবার (৩ মার্চ) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদসহ প্রচার সম্পাদক কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীমের নিঃশর্ত মুক্তি, স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলামসহ পেশাজীবী নেতাদের নামে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং দৈনিক দিনকালসহ বন্ধ মিডিয়া খুলে দেওয়ার দাবিতে পেশাজীবী সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

এই সমাবেশের আয়োজন করে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ (বিএসপিপি)।

সমাবেশে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘আমরা আজকে দানবের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করছি। দানবের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করে মুক্তি পাওয়ার কোনও সুযোগ নেই। অতীত তাই বলে। পত্রিকা বন্ধ করা এই সরকারের পার্মানেন্ট রোগ। চিকিৎসকরা এই রোগ থেকে তাদের মুক্তি দিতে পারবে না। জনগণকে আন্দোলনের মধ্য দিয়ে সরকারকে এই রোগ থেকে মুক্তির ওষুধ দিতে হবে।’

বর্তমান সরকার কখনোই অন্যের মত প্রকাশকে সহ্য করতে পারে না মন্তব্য করে তিনি আরও বলেন, ‘যারা বহু মত, বহু পথ স্বীকার করে না, আর যাই হোক, তারা গণতান্ত্রিক নয়। তারা যখনই ক্ষমতায় আসে, তখনই গণতন্ত্রের নামে ফ্যাসিবাদ ও স্বৈরাচার রাষ্ট্র ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করার প্রচেষ্টা চালায়।’

গয়েশ্বর বলেন, ‘যারা লুটপাটে জড়িত, প্রশাসনে দুর্নীতি করে, ঘুষ খায়— তারাই আজকে এ দেশে নিরাপদ। এই চক্রের প্রধান বর্তমান প্রধানমন্ত্রী। দেশের অর্থনীতি লুট হওয়ার কারণে আজকে জনগণের অর্থ ব্যাংকে নেই। ব্যাংকগুলো দেউলিয়া হওয়ার পথে। মানে বন্ধ হয়ে যেতে পারে। তাতে আমানতকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কিন্তু গচ্ছিত টাকা ভাগাভাগি হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আজকে সব জিনিসের দাম বাড়বে না কেন? যেখানে গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বেশি, সেখানে তো সব জিনিসের দামই বাড়বে। গ্যাস এবং বিদ্যুৎ সব উৎপাদন ব্যবস্থার সঙ্গে সম্পৃক্ত। সুতরাং, আজকে কৃষিপণ্য ও সারের দাম বাড়বে। সরকার বলছে, ভর্তুকি দেওয়া যাবে না, দাম সমন্বয় করা হবে। অর্থ্যাৎ বিদ্যুৎ খাতে যে দুর্নীতি হয়েছে, সেটি সমন্বয় করা হচ্ছে জনগণের পকেট মেরে।’

নেতাকর্মীদের মুক্তি ও মামলা প্রত্যাহারের দাবি এখন মুখ্য নয় মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘এই সরকারকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা থেকে প্রত্যাহার করার দাবিই আমাদের মুখ্য হওয়া দরকার। এই সরকারকে সরাতে হবে এবং একটি সুষ্ঠু অবাধ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণের প্রতিনিধির সমন্বয়ে একটি সরকার গঠন এই দেশের জন্য অপরিহার্য। হত্যা, বিচার এবং তদন্ত প্রতিবেদন কখনোই প্রকাশ পাবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত এই সরকারের পতন না হবে।’

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘এই সরকার জাতীয়তাবাদী, দেশপ্রেমিক ও গণতান্ত্রিক নয়। যেহেতু সরকার গণতান্ত্রিক নয়, সেহেতু তারা জনগণের কথা তোয়াক্কা করে না।’

বিএসপিপির আহ্বায়ক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেনের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব কাদের গণি চৌধুরীর সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন— অধ্যাপক সিদ্দিকুর রহমান, অধ্যাপক শামসুল আলম সেলিম, কৃষিবিদ গোলাম হাসিব, অ্যাবের সদস্য সচিব অধ্যাপক জি কে এম মোস্তাফিজুর রহমান, ড্যাবের যুগ্ম আহ্বায়ক ডা. মোসাদ্দেক হোসেন ডাম্বেল প্রমুখ।