যমুনা নদী সংকোচন প্রকল্প অবিলম্বে বাতিলের দাবি বিএনপির

পরিবেশ ও জলবায়ুর জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর ‘যমুনা নদী সংকোচন প্রকল্প’ অবিলম্বে বাতিলের দাবি জানিয়েছে বিএনপি।

মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন দলের স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্ত জানাতে গিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই দাবি জানান।

যুমনা নদীর তীর রক্ষা এবং ঝুঁকি প্রশমনে টেকসই অবকাঠামো শীর্ষক যমুনা নদীকে সংকোচিত করার একটি প্রকল্প করা হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে। প্রকল্পের খরচ ধরা হয়ে ১ হাজার ১০৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকা।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘বাংলাদেশের যুমনা নদী সংকোচিত করবার একটি ভয়াবহ ক্ষতিকর প্রকল্প নিয়ে সোমবার বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সভায় আলোচনা হয়েছে। সভা মনে করে, এই প্রকল্প বাংলাদেশের পরিবেশ, প্রকৃতি, জনগণের জীবিকা, জলবায়ুর মারাত্মক ক্ষতি করবে। এই ধরনের আত্মহননকারী সিদ্ধান্ত বাতিল করার দাবি দাবি জানাচ্ছি।’

তিনি বলেন, ‘যুমনা নদী সংকোচিত প্রকল্প নামে একটি পাইলট প্রকল্প সরকার করছে। ইতোমধ্যে কিছু টাকাও বরাদ্দ করা হয়েছে। এটা একটা ভয়াবহ সুইসাইডাল প্রকল্প। সরকারের সমস্যাগুলো এই জায়গায় যে, যেগুলো প্রয়োজন সেখানে তাদের দৃষ্টি নেই। বুড়িগঙ্গা নদীর দুষণমুক্ত করার কোনও উদ্যোগ নেই, কোনেও প্রকল্প নেই। শীতলক্ষ্যা নদীর দুষণমুক্ত করার কোনও উদ্যোগ নেই, কোনও প্রকল্প নেই। কোথায় যমুনা নদী একটা আবহামান কাল ধরে, হাজার বছর ধরে প্রবাহমান বিভিন্ন নদীর সব আবর্জনা নিয়ে গিয়ে তলিয়ে ফেলছে। পলি তৈরি করছে, সেই নদীকে সংকোচিত করতে চায় কার স্বার্থে।’

তিনি যোগ করেন, ‘স্বার্থ একটাই। এক নম্বর এই যমুনা নদীকে অকোজো করে ফেলা ও দুই নম্বর হচ্ছে— হাজার হাজার কোটি টাকা মেরে তাদের সম্পদ বৃদ্ধি করা। এই প্রকল্প অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। এ বিষয়ে জনগণকে পরিষ্কার ধারণা দিতে হবে।’

বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির কারণ ‘ক্ষমতাসীনদের দুর্নীতি’ বলে অভিযোগ করেন বিএনপির মহাসচিব। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, পায়রা থার্মাল বিদ্যুৎকেন্দ্র, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র ও আদানির বিদ্যুৎ প্রভৃতি বিষয়ে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করার বিভিন্ন তথ্যচিত্র তুলে ধরেন বিএনপি মহাসচিব।

চলতি অর্থবছরের ৬ মাসে রেন্টাল ও আইপিপি কেন্দ্রগুলোতে ৭০ শতাংশ উৎপাদন বন্ধ থাকার পরেও সরকার ক্যাপাসিটি চার্জের পেছনে ২১৬ কোটি ডলার প্রদান করছে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল অবিলম্বে ক্ষতিকর রেন্টাল ও আইপিপি চুক্তি এবং আদানির গ্রুপের সঙ্গে বিদ্যুৎ আমদানির চুক্তি বাতিলের দাবি জানান।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ইসমাইল জবিহউল্লাহ  ও সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক কামরুজ্জামান রতন উপস্থিত ছিলেন।