এই সরকার এনজিও পরিচালনা করেছে, দেশ পরিচালনার অভিজ্ঞতা নেই: আলাল

দায়িত্ব নেওয়ার পর যে কাজগুলো করা উচিত ছিল- কোনোটাকে অগ্রাধিকার দেওয়া, কোনোটাকে মধ্যবর্তী রাখা, কোনোটাকে একটু দূরবর্তী রাখা, এই বিবেচনা এই সরকারের মধ্যে কারও নেই। তারা সবাই এনজিও পরিচালনা করেছেন, কারও দেশ পরিচালনার অভিজ্ঞতা নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল।

রবিবার (১৩ অক্টোবর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে জাতীয়তাবাদী প্রচার দল আয়োজিত ‘আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস উপলক্ষে বিএনপির ভূমিকা' শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, ‘আজ আমাদের প্রধান উপদেষ্ট থ্রি জিরোর কথা বলেছেন। একটা হচ্ছে শূন্য কার্বন, একটা দারিদ্র, আরেকটা বেকারত্ব। কিন্তু কার্বন নিংসরণ যেখানে হয় তারাই তাকে নোবেল দিয়েছে। এই সরকারের সবাই এনজিও পরিচালনা করেছেন, দেশ পরিচালনার অভিজ্ঞতা কারও নেই। দেশ পরিচালনার বেশি অভিজ্ঞতা আছে বিএনপির। বিএনপির কাছ থেকে তাদের অভিজ্ঞতা নেওয়ার প্রয়োজন ছিল। তাহলে ফেনী-সিলেটের বন্যার পর উত্তরাঞ্চলে বন্যার আগাম কিছু আমরা করতে পারতাম।’

তিনি বলেন, ‘এই সরকারের কিছু উপদেষ্টা ঘুম থেকে ওঠে সরকারের অংশ হয়ে গেছে। তারা বন্যায় সেই ধরনের তৎপরতা দেখাননি, যা অত্যন্ত দুঃখজনক। যেটা আজ কষ্টের সঙ্গে বলতে হচ্ছে। আমরা মনে করি জবাবদিহির যে জায়গা সেটা বিএনপির মধ্য রয়েছে, সেটা আমরা ধারাবাহিকভাবে প্রমাণ করে যাচ্ছি।’

আলাল বলেন, ‘দেশ যদি ভালো থাকে, আমি যদি গ্রামের একজন চৌকিদার-দফাদার হই তাহলে সম্মানটা হবে রাষ্ট্রপতির মতো। দেশ যদি খারাপ থাকে তাহলে রাষ্ট্রপতির সম্মান হচ্ছে ঝাড়ুদারের মতো। এই কথাটা মনে রেখে ওনারা যাতে দেশ পরিচালনায় যাদের অভিজ্ঞতা আছে তাদের পরামর্শ নেন, তাহলে এটা জাতীয় স্বার্থে বিবেচনা হবে। তা না হলে মনের দুঃখে গান গাইতে হবে-তুমি কী সেই আগের মতোই আছো, নাকি অনেকখানি বদলে গেছো।’

তিনি বলেন, ‘ভৌগোলিক অবস্থান থেকে বাংলাদেশকে বলা হয় গাঙ্গেয় উপদীপ। গঙ্গা-যমুনা-ব্রক্ষ্মপুত্রের ত্রিমুখী অবস্থানের মধ্যে বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থান। এই কারণে বাংলাদেশ হয়েছে ভাটির দেশ। পাশ্ববর্তী দেশ ভারত, চীন, নেপাল, ভুটান এগুলো হচ্ছে উজানের দেশ। যে কারণে আমাদের ক্ষণে ক্ষণে দুর্যোগে পড়তে হয়। এই দুর্যোগ আরও বেশি দেখা যায় যখন বৃহৎ শক্তি প্রতিবেশী দেশ ভারত তাদের ইচ্ছা অনুযায়ী গরমের দিনে আমাদের শুকিয়ে মারে আর বর্ষার দিনে ডুবিয়ে মারে।’

যুবদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, ‘তাদের (ভারতের) যুক্তি হচ্ছে বাঁচার জন্য তারা এটা করে। সেক্ষেত্রে আপনি কোনও বড় লেনদেন করতে পারবেন না আন্তর্জাতিক নদী বণ্টন আইন অনুযায়ী। ভারতের সঙ্গে পানির নায্য হিস্যা আমরা আজ পর্যন্ত করতে পারিনি। পাইনি বলে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বিষয়টি উপস্থান করেছেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। ফারাক্কা সমস্যা নিয়ে তিনি প্রথম জাতিসংঘে বিচার চেয়েছিলেন। তারপর ভারত কিছুটা নমনীয় হয়েছিল। ফারাক্কার অনুমোদন দিয়ে গিয়েছিলেন মরহুম শেখ মুজিবুর রহমান। তখন কথা ছিল ৪৫ দিন পরীক্ষামূলক চলবে। কিন্তু শেখ মুজিবুরের সরকার এতো উদাসীন ছিলেন যেটা ৪০-৪৫ বছরেও শেষ হয়নি। যেটার বড় ভিকটিম হচ্ছে বাংলাদেশ।’

জাতীয়তাবাদী প্রচার দলের সভাপতি মাহফুজ কবির মুক্তার সভাপতিত্বে এতে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু প্রমুখ।