বন্যাদুর্গত শিক্ষার্থীদের বেতন-ফি মওকুফে ছাত্র ফ্রন্টের স্মারকলিপি

বন্যাদুর্গত শিক্ষার্থীদের বেতন ফি মওকুফে ছাত্রফন্টের স্মারকলিপিবন্যাদুর্গত শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন রক্ষায় এক বছরের বেতন-ফি মওকুফ, বিনামূল্যে শিক্ষা উপকরণ সরবরাহ এবং ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পুনঃর্নিমাণ ও সংস্কারের দাবি জানিয়েছে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট। সোমবার (২৮ আগস্ট) দুপুর সাড়ে ১২টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত সমাবেশে এ দাবি জানানো হয়। সমাবেশ শেষে সচিবালয়ে শিক্ষামন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপিও পেশ করে ছাত্র ফ্রন্টের প্রতিনিধি দল।
সমাবেশে ছাত্রফ্রন্ট নেতারা বলেন, ‘গত এক মাস ধরে প্রবল বন্যায় বাংলাদেশের প্রায় অর্ধেক জেলা প্লাবিত হয়েছে। এর আগে গত মে মাস থেকে সিলেটের হাওর অঞ্চলে বন্যা এবং পরবর্তীতে পার্বত্য অঞ্চলে পাহাড় ধসে বহু মানুষের প্রাণহানিসহ নানাবিধ ক্ষতি হয়েছে। এবারের বন্যায় প্রায় ৭৫ লক্ষ মানুষ সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রায় ১৫০ জন মানুষ মারা গিয়েছেন। লাখ লাখ গরীব মানুষ তাদের নিজেদের বাড়িঘর থেকে উচ্ছেদ হয়ে পানির মধ্যে মাচা তুলে বা নৌকায় আশ্রয় নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।’

বান্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের পরিসংখ্যান তুলে ধরে সমাবেশে বলা হয়, সরকারি হিসেবে পাঁচ লাখের বেশি ঘর-বাড়ি বিনষ্ট হয়েছে। অনেক জায়গা এখনও পানির নিচে তলিয়ে আছে। এলজিইডি এর হিসাব অনুযায়ী, পল্লী অবকাঠামোর প্রাথমিক ক্ষতি ধরা হয়েছে ছয় হাজার কোটি টাকা। শিক্ষার্থীদের স্বাভাবিক জীবনে ফেরা কঠিন হয়ে পড়েছে। চার হাজারেরও বেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ আছে। অনেক স্কুল-কলেজ বন্যায় ভেসে গেছে। কয়েক লক্ষ শিক্ষার্থীর বই-খাতা-কলমসহ শিক্ষাউপকরণ বন্যার পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

সংগঠনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক স্নেহাদ্রি চক্রবর্ত্তী রিন্টুর সভাপতিত্বে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশ পরিচালনা করেন প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক ইভা মজুমদার। বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ডা. জয়দীপ ভট্টাচার্য এবং সুস্মিতা রায় সুপ্তি।

বন্যার্ত মানুষদের সহযোগিতায় সরকারের ব্যর্থতার কথা উল্লেখ করে নেতারা বলেন, ‘আমরা লক্ষ্য করছি, এরকম দুর্যোগেও জরুরি তৎপরতা নিয়ে সরকার যথাযথ ভুমিকা পালন করেনি। ত্রাণ সরবরাহ ও পুনর্বাসন প্রচেষ্টা নিতান্ত দুর্বল। পর্যাপ্ত আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়নি। ওষুধ ও বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের উদ্যোগও প্রয়োজনের তুলনায় সামান্য। একইভাবে এসব অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ আশঙ্কা জাগানোর মতো। কিন্তু সরকার এসব ব্যাপারে কোনও মনোযোগ দিচ্ছে না। তারা ব্যস্ত ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের কারণে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে কলহে।’

নেতারা অবিলম্বে বন্যাদুর্গত শিক্ষার্থীদের অন্তত এক বছরের বেতন-ফি মওকুফ, বিনামূল্যে শিক্ষা উপকরণ সরবরাহ এবং ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পুনঃর্নিমাণ ও সংস্কারের দাবি জানান। পরবর্তীতে এসব দাবিতে একটি প্রতিনিধি দল শিক্ষামন্ত্রণালয়ে স্মারকলিপি পেশ করে।