সমাবেশে বাধা, রবিবার প্রতিবাদ জানাবে নাগরিক ঐক্য

রাজধানীর ভাটারায় পুর্বনির্ধারিত সমাবেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও ক্ষমতাসীনদের তরফে বাধা দেওয়ার অভিযোগ করেছে নাগরিক ঐক্য। শুক্রবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বিকালে রাজধানীর ভাটারায় একশ’ ফিট সড়কে এ সমাবেশ হওয়ার কথা ছিল। এদিন সন্ধ্যায় রাজধানীর সেগুনবাগিচায় আয়োজিত  সংবাদ সম্মেলনে প্রতিবাদ জানিয়ে আগামী রবিবার বিক্ষোভ সমাবেশের কর্মসূচি দিয়েছে নাগরিক ঐক্য।

নাগরিক ঐক্যের পক্ষ থেকে করা সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, ‘রাজধানীর  ভাটারায় ১০০ ফিট রাস্তায় নাগরিক ঐক্য ঢাকা মহানগর উত্তর আয়োজিত জনসভা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের হামলায় পণ্ড হয়েছে। ওই কর্মসূচির অনুমতির জন্য ভাটারা থানায় আবেদন করা হয়। থানা থেকে ডিসির সঙ্গে যোগাযোগ করার কথা বলা হলে সেখানে যোগাযোগ করা হয়। জনসভার আগের দিন যোগাযোগ করা হলে জানানো হয় যে, এই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট থানায় অবহিত করা হয়েছে। সঙ্গত কারণেই আমরা এই বক্তব্যকে অনুমতি ধরে নিতে পারি।’

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ‘জনসভাকে কেন্দ্র করে ভাটারাসহ পুরো রাজধানীজুড়ে পোস্টার লাগানো, লিফলেট বিতরণ এবং মাইকিং করা হয়। অথচ জনসভার দিন সকালে পুলিশ মঞ্চ ভেঙে দেয় এবং নাগরিক ঐক্যের নেতাকর্মীদের ওপরে হামলা চালায়। এতে নাগরিক ঐক্যের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এবং ঢাকা মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব আব্দুর রাজ্জাক সজীব মারাত্মকভাবে আহত হন। তার মাথায় আঘাত করা হয়েছে। তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।’

‘জনসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বিশেষ অতিথি হিসেবে আ স ম আব্দুর রব, সাইফুল হক, জোনায়েদ সাকি, হাসনাত কাইয়ূম, শহীদুল্লাহ কায়সার বেলা ৩টার দিকে সভাস্থলে যাওয়ার পথে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের বাধায় ভাটারার রোজমেরি রেস্টুরেন্টে অবস্থান নেন। এক পর্যায়ে নেতারা নিচে নেমে আসেন। তখন  আওয়ামী লীগের কর্মীরা মিছিল করে জয় বাংলা স্লোগান দিয়ে নেতাদের ওপরে হামলা করেন।’

‘এসময় নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্নার ওপর হামলা চালাতে লাঠিসোঠা নিয়ে অগ্রসর হয়। এ পর্যায়ে নাগরিক ঐক্যের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মোহিদুজ্জামান, জেএসডির শামসুল আলম নিক্সন এবং শফিকুল ইসলাম আহত হন বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।

দলের পক্ষ থেকে বলা হয়, নাগরিক ঐক্যের জনসভা ছিল মহান একুশে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে। বাঙালির চেতনার একুশ উপলক্ষে কোনও কর্মসূচিতে অনুমতির প্রয়োজন হওয়ার কথা নয়।

এদিকে, নাগরিক ঐক্যের সমাবেশ করতে না দেওয়ায় এর সমালোচনা করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

শুক্রবার রাতে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘নাগরিক ঐক্যের শান্তিপূর্ণ জনসভার ওপর আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর হামলা বর্বরতা ও ন্যাক্কারজনক কাপুরুষতা। এই হামলা নিঃসন্দেহে পূর্বপরিকল্পিত। সভা-সমাবেশ ইত্যাদি সংবিধান স্বীকৃত মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার। কিন্তু আওয়ামী সরকার নিজেদের অস্তিত্বের প্রশ্নে এতটাই বেসামাল যে, তারা সংবিধান স্বীকৃত এই অধিকার মেনে নিতে চায় না।’

বিএনপির মহাসচিবের দাবি, এ ঘটনায় আবারও প্রমাণিত হলো— সর্ষে পরিমাণ মাটিও আর সরকারের পায়ের নিচে অবশিষ্ট নেই।