X
শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫
২১ আষাঢ় ১৪৩২

মব বন্ধ না করে কীভাবে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে: প্রশ্ন মান্নার

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
০৫ জুলাই ২০২৫, ১৮:৩০আপডেট : ০৫ জুলাই ২০২৫, ২১:০৯

দেশে যেভাবে মব চলছে, তা বন্ধ করতে না পারলে কীভাবে সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন হবে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না। তিনি বলেন, তিন টার্মে দেশে নির্বাচনের নামে যা হয়েছে, তাতে মানুষের সামনে মুখ দেখানোর উপায় নেই। পৃথিবীর কাছে আমাদের সম্মান নষ্ট হয়েছে। যদি এই সরকার ভালো নির্বাচন করে যেতে পারে, দেশের সম্মান বাঁচবে। তবে পাটগ্রামে, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়, বরিশালে যেভাবে মব চলছে— সেটা বন্ধ করতে না পারলে সুষ্ঠু নির্বাচন কীভাবে হবে?

শনিবার (৫ জুলাই) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে নাগরিক ঐক্য আয়োজিত ‘সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ ২০২৫ কতটুকু সুরক্ষা দেয়’ শীর্ষক সেমিনারে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন ।

তিনি বলেন, ঐকমত্যের বৈঠকগুলোতে আমি আগে নিয়মিত যেতাম, এখন মনে হয়— গিয়ে লাভ নেই। অনেক বিষয়েই এমন মতভেদ তৈরি হয়েছে। আমি জানি না, কীভাবে নিষ্পত্তি হবে। ঐকমত্য না হলে তো প্রফেসর ইউনূস বলেছেন, কিছু চাপিয়ে দেবেন না। তাহলে সংস্কার কীভাবে হবে? এক বছরে কিছুই পারেননি। বড় দল বা মাঝারি দল আপত্তি করলে, সেখানেও যেতে পারেন না। এই পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বড় সংস্কার একটা ভালো নির্বাচন।

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি বলেন, সংস্কার নিয়ে এত কথা হচ্ছে। আমি যদি জিজ্ঞেস করি— বলুন তো ভাই, কোন সংস্কারটা এই সরকার করেছে? সরকার কিন্তু বলতে পারবে না। বলবে, আলোচনা শেষ হয়নি, ঐকমত্য গড়ে ওঠেনি— তাহলে এক বছরে কিছুই করেননি।

তিনি আরও বলেন, সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ নিয়ে আমরা আপত্তি করছি। আজকের এই সেমিনারে যারা বক্তৃতা করেছেন, তারা বাংলাদেশের প্রায় সব রাজনৈতিক কণ্ঠস্বরের প্রতিনিধিত্ব করেন, তারা সবাই এটি নিয়ে আপত্তি করছেন। এখনও সময় আছে, যে অধ্যাদেশ করেছেন, এটি সংশোধন করুন। আর না করলে না করে যেতেই পারেন, তবে পরে এটি ঠিক করা হবে।

সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, বাংলাদেশের মানুষ ভাষা আন্দোলনে জীবন দিয়েছে, স্বায়ত্তশাসন, গণঅভ্যুত্থান, একত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধ, নব্বইয়ের ছাত্র আন্দোলন এবং ২৪-এর জুলাই-আগস্টের আন্দোলনসহ বিভিন্ন আন্দোলনে অনেকে জীবন দিয়েছে। এত জীবন দেওয়ার পর এখনও অসঙ্গতি নিয়ে আলোচনা হয়, এটা কেন হবে? আর কত জীবন দেবে এ দেশের মানুষ। আর কত লড়াই করবে এ দেশের মানুষ। মানুষ প্রাইমারি স্কুল থেকে হাইস্কুলে ওঠে, হাইস্কুল থেকে কলেজে যায়, কলেজ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে যায়, আস্তে আস্তে মানুষ উন্নত হয়। আস্তে আস্তে মানুষের পরিবর্তন হয়, ইতিবাচক পরিবর্তন। আর আমরা বারবার যেন সাপ-লুডুর মতো অনেকদূর আগে যাই। আবার সাপে কাটলে নিচে চলে আসি। আবার আগানোর চেষ্টা করি। এটা গ্রহণযোগ্য নয়।

তিনি বলেন, যারা আইন প্রয়োগের দায়িত্বে তারা যদি আইন প্রয়োগে কোনও ভুল করে, ইচ্ছাকৃত ভুল এবং তারা যদি অন্যায়ভাবে আইনের ব্যত্যয় ঘটিয়ে জনগণের ওপর নিপীড়ন চালায়, তাদের শাস্তির বিধান কোথায়? সংস্কার নিয়ে আলাপ হচ্ছে— সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান, আমাদের যে সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানগুলো বিশাল ক্ষমতার অধিকারী যারা, তাদের কী হবে? হয় তারা পদত্যাগ করবে কিংবা তাদেরকে অবসর দেওয়া হয়। কিন্তু একজন সাধারণ মানুষ একটা দেশের বা অন্য একটা মানুষের কতই বা ক্ষতি করতে পারে। কিন্তু যারা বড় বড় পদে বসে আছে, যারা বড় বড় দায়িত্ব পালন করছে, তারা তো এই দেশ এবং দেশের মানুষের অনেক বড় ক্ষতি করতে পারে।

তিনি আরও বলেন, প্রত্যেকটা প্রতিষ্ঠানের ব্যাপারে এই যে সুরক্ষা আইন, এসব আইনের যারা কার্যকর করবে, যারাই ক্ষমতার অধিকারী হবে রাষ্ট্রের মাধ্যমে, তাদের প্রত্যেককেই দায়বদ্ধ এবং জবাবদিহির আওতায় রাখা। আর সে কারণে তারা যদি তাদের দায়িত্ব পালনটা অবহেলা করে, কিংবা অপরাধমূলক কোনও কাজে যুক্ত হয়, তাহলে তাদের যেন শাস্তি হয়। সেই বিধান যেন প্রত্যেক আইনে থাকে এরকম একটা দাবিও আমাদের থাকা দরকার। আর না হলে আইনের ভাষা যত সুন্দরই করি, আমাদের যত আকাঙ্ক্ষা, আমাদের আইনের লিপিবদ্ধ কাগজ দিয়ে সাধারণ মানুষের কল্যাণ হবে না।

/এসএ/এপিএইচ/
সম্পর্কিত
গেজেটভুক্ত হলে শাপলা প্রতীক আমাদের প্রাপ্য: নাগরিক ঐক্য
মানুষের কাছে ভোট দেওয়ার মতো নির্ভরযোগ্য বিকল্প বিএনপি ছাড়া অন্যটি নেই: মান্না
‘কেউ যদি এখনকার আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে বেইমানি করে, তার বিরুদ্ধে লড়াই হবে’
সর্বশেষ খবর
শিক্ষা ও স্বাস্থ্য দখল করেছে জামায়াত: গয়েশ্বর চন্দ্র
শিক্ষা ও স্বাস্থ্য দখল করেছে জামায়াত: গয়েশ্বর চন্দ্র
‘জনবান্ধব ও মানবিক পুলিশ গড়তে সংস্কারের বিকল্প নেই’
গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা‘জনবান্ধব ও মানবিক পুলিশ গড়তে সংস্কারের বিকল্প নেই’
সারা দেশে গ্রেফতার আরও ১৫৪২
সারা দেশে গ্রেফতার আরও ১৫৪২
আগামী সপ্তাহেই হতে পারে গাজায় যুদ্ধবিরতি: হামাসের ‘ইতিবাচক’ সাড়ার পর ট্রাম্প
আগামী সপ্তাহেই হতে পারে গাজায় যুদ্ধবিরতি: হামাসের ‘ইতিবাচক’ সাড়ার পর ট্রাম্প
সর্বাধিক পঠিত
৯ ধরনের মামলার আগে মধ্যস্থতার বাধ্যবাধকতা: বিচারপ্রার্থীদের ভোগান্তি কমবে?
৯ ধরনের মামলার আগে মধ্যস্থতার বাধ্যবাধকতা: বিচারপ্রার্থীদের ভোগান্তি কমবে?
জামায়াতের অনুষ্ঠানে ‘সৎ’ লোককে ভোট দিতে বলা পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা
জামায়াতের অনুষ্ঠানে ‘সৎ’ লোককে ভোট দিতে বলা পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা
আই উইল বি আ মাদার: জায়েদ খানকে তিশা
আই উইল বি আ মাদার: জায়েদ খানকে তিশা
জুলাই অভ্যুত্থানের প্রথম অংশ অবশ্যই মেটিকুলাসলি ডিজাইনড: মাহফুজ আলম
জুলাই অভ্যুত্থানের প্রথম অংশ অবশ্যই মেটিকুলাসলি ডিজাইনড: মাহফুজ আলম
ছেলের বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে আ.লীগ নেতা বাবাকে গ্রেফতারের দাবিতে বিক্ষোভ
ছেলের বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে আ.লীগ নেতা বাবাকে গ্রেফতারের দাবিতে বিক্ষোভ