মুসলিম লীগকে সম্বোধন করা চিঠি সিপিবিকে পাঠালো ইসি, ‘ক্ষুব্ধ’ নেতারা

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে আগের সংলাপ অংশ না নেওয়া ৮টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলকে আলোচনার জন্য চিঠি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) অনানুষ্ঠানিক এই চিঠি (ডিও) পাঠানো হয়। এই তালিকায় থাকা বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টিকে (সিপিবি) পাঠানো চিঠিতে বাংলাদেশ মুসলিম লীগ (বিএমএল) নেতাদের আমন্ত্রণের তথ্য রয়েছে। এ ঘটনায় ক্ষুদ্ধ সিপিবি।

শুক্রবার (৩১ মার্চ) রাতে এ বিষয়ে সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বৃহস্পতিবার রাতে চিঠি পেয়েছি। সিইসির নিজ হাতে সই করা এই চিঠি কাকে পাঠানো হয়েছে, সেটিই বুঝতে পারছি না আমরা। এতে আমরা ক্ষুব্ধ, যা প্রকাশের ভাষা নেই। নির্বাচন কমিশন যে রাজনৈতিক দলগুলোকে চিঠি পাঠানোর ব্যাপারে উদাসীন, এখানে তার প্রমাণ আমরা দেখলাম।’

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের সই করা এই চিঠি সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্সের বরাবর পাঠানো হয়। কিন্তু চিঠির ভেতরে সিপিবি নেতাদের জায়গায় বিএমএলের নেতাদের সঙ্গে আলোচনার কথা উল্লেখ রয়েছে।

চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে মতামত ও পরামর্শ গ্রহণের লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ আয়োজন করা হয়েছিল। আপনার দলসহ কয়েকটি দল সেই সংলাপে অংশগ্রহণ করেনি। তবে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল হিসেবে বাংলাদেশ মুসলিম লীগের (বিএমএল) নেতাদের সঙ্গে আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বিষয়ে আনুষ্ঠানিক না হলেও অনানুষ্ঠানিক আলোচনা ও মতবিনিময় হতে পারে। বর্ণিত কারণাধীনে আমি নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে আপনাকে আপনার দলের নেতাদেরসহ নির্বাচন কমিশনে সাদর আমন্ত্রণ জানাচ্ছি।’

এ প্রসঙ্গে রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, ‘এর মধ্য দিয়ে বোঝা যায়, নির্বাচন কমিশন কীভাবে চলছে। তাদের যদি ন্যূনতম চিন্তা থাকতো, আন্তরিকতা থাকতো…। নির্বাচন কমিশনের সংস্কার নিয়ে আমরা যদি কিছু কথা বলতে চাই, ওনারা পড়াশুনা করে এবং তাদের কাছে থাকা আমাদের পুরনো ফাইলগুলো পড়ে বলতে পারতো যে, অতীতে আপনারা এই দিয়েছেন, আমার এইটুকু বুঝতে পেরেছি, আর এইটুকু পারিনি।’  তিনি বলেন, ‘চিঠির বিষয়টি আসলে তাদের বালখিল্যতা ছাড়া আর কিছুই না।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইসি সচিবালয়ের সচিব মো. জাহাংগীর আলম বলেন, ‘চিঠি প্রিন্টে কোনও ভুল হতে পারে। এমনটি হলে তা সংশোধন করে আবার চিঠি দেওয়া হবে।’

এর আগে গত ২৩ মার্চ বিএনপিকে সংলাপে আমন্ত্রণ জানিয়ে অনানুষ্ঠানিক চিঠি দিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। ইসির পক্ষ থেকে লিখিতভাবে বিএনপির অবস্থান জানতে চাওয়া হয়েছিল। তবে দলটি ইতোমধ্যে জানিয়ে দিয়েছে— তারা ইসির সঙ্গে আলোচনায় বসবে না। চিঠিরও আনুষ্ঠানিক কোনও জবাব দেবে না।

গত বছরের জুলাই মাসে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করেছিল ইসি। বিএনপিসহ ৯টি রাজনৈতিক দল ওই সংলাপ বর্জন করেছিল। বাকি ৮টি দলের মধ্যে রয়েছে- বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), বাংলাদেশ মুসলীম লীগ-বিএমএল, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি), লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি)।