জাতীয় সংলাপের মধ্য দিয়ে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চাই: ড. কামাল

গণফোরামের প্রতিষ্ঠাতা ও ইমিরেটাস সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেছেন, ‘আমি জাতীয় সংলাপের মধ্য দিয়ে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চাই।’ এসময় সব দলকে নিয়ে জাতীয় সংলাপের মধ্য দিয়ে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজনের কথা জানিয়েছেন তিনি। বর্তমান সংকটময় মুহূর্তে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করে ঐকমত্যের ভিত্তিতে নির্বাচন আয়োজনের পরামর্শও দিয়েছেন অন্যতম এই সংবিধান প্রণেতা।

মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের আব্দুস সালাম হলে গণফোরাম আয়োজিত বিশেষ জাতীয় কাউন্সিল ২০২৩ পরবর্তী পূর্ণাঙ্গ কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা ও বিদ্যমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।   

ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘আমি জাতীয় সংলাপের মধ্যদিয়ে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চাই। সেটা হলে আমরা বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেবো। আমরা চাইছি, দেশের জাতীয় ঐক্যকে আরও সুসংহত করা, সবার সঙ্গে আলোচনা করে একটা ঐকমত্যে আসা এবং তারপরে সবাইকে নিয়ে যেন নির্বাচনে যাওয়ার কথা চিন্তা করা উচিত। এই চেষ্টা আমরা করে যাবো।’

দেশের অবস্থা ভয়াবহ উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘জনগণ ঐক্যবদ্ধ হলে এই অবস্থা থেকে দেশকে রক্ষা করা সম্ভব। ঐক্যের গুরুত্ব আমরা সবসময়ই দিয়ে থাকি। নীতি, আদর্শকে কেন্দ্র করে ঐক্য। সেই ঐক্যের ভিত্তিতে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে দেশকে বাঁচাতে যা করা দরকার আমরা তা করে যাবো।’

বিদেশি হস্তক্ষেপে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির পরিবর্তন হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমাদেরই চেষ্টা করে যেতে হবে। দেশের এই পরিস্থিতিতে আমাদের মধ্য থেকেই একটা পরিবর্তনের চেষ্টা করে যেতে হবে।’

সংবাদ সম্মেলনে মফিজুল ইসলাম খান কামালকে সভাপতি এবং ডা. মো. মিজানুর রহমানকে সাধারণ সম্পাদক করে গণফোরামের ১০১ সদস্যের কমিটি ঘোষণা করা হয়। কমিটিতে ড. কামাল হোসেনকে ইমেরিটাস সভাপতি হিসেবে রাখা হয়েছে। 

সংবাদ সম্মেলনে দলের নবনির্বাচিত সভাপতি মফিজুল ইসলাম খান কামাল বলেন, ‘জাতির বিবেক ড. কামাল হোসেন আনুষ্ঠানিকভাবে আমাদের সংগঠনের সঙ্গে দৈনন্দিন কার্যকলাপে উনি যুক্ত থাকতে পারছেন না। এই জন্যেই আমরা উনাকে ইমিরেটাস সভাপতি হিসেবে রেখেছি, উনি সেটা গ্রহণ করেছেন। আমরা আশা করি, সবসময় উনার কাছ থেকে পরামর্শ পাবো এবং আমাদের প্রয়োজনে অবশ্যই উনার কাছে যাবো।’

নির্বাচন যাওয়ার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমরা নির্বাচনে যাবো কী যাবো না, সেটা ভাবছি। আমরা পরিস্থিতি দেখছি, পরে আমরা আমরা সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিবো যে আমরা কি করব। তবে গণফোরাম নির্বাচন বিমুখ না, নির্বাচনমুখী রাজনৈতিক দল। যদি আমরা দেখি পরিস্থিতি সহায়ক তাহলে আমরা অবশ্যই নির্বাচনে যাবো। আর তা না হলে আমরা যাবো না, সেটা পরে জানাবো আপনাদের সম্মেলন করে।’

দলের সাধারণ সম্পাদক ডা. মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘সমাবেশ, অবরোধ ও হরতাল; এগুলো দেশের মানুষের সাংবিধানিক অধিকার। এই অধিকারের উপর যেভাবে দমন-পীড়ন হচ্ছে এটা আমরা সমর্থন করি না। তফসিল ঘোষণার এক সপ্তাহ আগে দেশের যে পরিস্থিতি তাতে শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের পরিবেশ আমরা দেখছি না। সাংবাদিকরাই যেখানে নিরাপদ না এখন সেখানে প্রার্থী এবং ভোটারদের নিরাপত্তা নিয়ে আমরা শঙ্কিত।’

এসময় সংবাদ সম্মেলনে দলের অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।