ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের রক্তের সম্পর্ক ও রক্তের বাঁধন। তাই জীবন দিয়ে, রক্ত দিয়ে এই অসম সম্পর্কের দায় শোধ করতে হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক।
বৃহস্পতিবার (১৬ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবের আব্দুস সালাম হলে মাওলানা ভাসানীর ঐতিহাসিক ফারাক্কা লংমার্চ দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
সাইফুল হক বলেন, ‘সীমান্তে হত্যা হচ্ছে, আর প্রতিদিন আমরা বলছি— বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্ক এখন সর্বোচ্চ শিখরে। ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের রক্তের সম্পর্ক, রক্তের বাঁধন।’
তিনি বলেন, ‘তারা (ভারত) এই রক্তের বাঁধনের জন্য প্রতিদিন সীমান্তে বাংলাদেশিদের হত্যা করে। জীবন দিয়ে, রক্ত দিয়ে এই অসম সম্পর্কের দায় শোধ করতে হচ্ছে। এটা খুবই লজ্জার খুবই অপমানের। নিজেদের স্বদেশী হত্যার শিকার হচ্ছে, তার উপযুক্ত প্রতিবাদ পর্যন্ত হয় না। আমরা এখানে লাশ ফেরত পাবো কিনা, এটার জন্য পতাকা বৈঠক হয়। এটা খুব লজ্জার, দুঃখের এবং অপমানের।’
‘বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি ওবায়দুল কাদের ঘোষণা করে দিয়েছেন’, মন্তব্য করে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘আমাদের দেশের পররাষ্ট্রনীতি বলে কিছু নেই। তাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কোনও কাজ নেই। দিল্লি আছে আমরা আছি। আমেরিকার দিল্লিকে দরকার, দিল্লিরও আমেরিকাকে দরকার। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি ওবায়দুল কাদের সাহেব পরিষ্কার করে ঘোষণা করে দিয়েছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘এরকম একটা পররাষ্ট্রনীতিতে চলা মানে হচ্ছে— বাংলাদেশ, যে রাষ্ট্র রক্ত দিয়ে অর্জন করা হয়েছে, একটা সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আজকে সেই রাষ্ট্রকে দাসত্বের দিকে পরিষ্কারভাবে ঠেলে দিয়ে আবার ঘোষণা করা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান পরিণতি। ৫৪ বছরে এসে রাজনৈতিক দিক থেকে সার্বভৌমত্বের দিক থেকে আমরা দাসত্বের কবলে পড়েছি। বাংলাদেশের মানুষকে আজকে মওলানা ভাসানী যেভাবে এদেশের মানুষের আত্মমর্যাদা, এদেশের সব মানুষের অধিকার ও মর্যাদা নিয়ে কথা বলেছেন, সেই জায়গা থেকে আমাদের নতুন করে আন্দোলন করতে হবে। বাংলাদেশকে রক্ষা করার জন্য, আমাদের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করার জন্য, আমাদের রাজনৈতিক ব্যবস্থাকে ওই জায়গায় নিয়ে যেতে হবে।’
ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলুর সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব আবু ইউসুফ সেলিমের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন— বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক মাহবুবউল্লাহ, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের হাসনাত কাইয়ুম, জেএসডির তানিয়া রব, ভাসানী অনুসারী পরিষদের বাবুল বিশ্বাস এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আসিফ নজরুল প্রমুখ।