‘জাহানারা ইমামের আন্দোলন আজও প্রাসঙ্গিক’

শহীদ জননী জাহানারা ইমামের ৩১তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজের নেতৃত্বে বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) সকাল ৯টায় মিরপুরস্থ শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে তার সমাধিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করা হয়। 

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন—বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য নিখিল দাস, সদস্য শম্পা বসু, কেন্দ্রীয় বর্ধিত ফোরামের সদস্য মাঈন উদ্দিন চৌধুরী, কেন্দ্রীয় পাঠচক্র ফোরামের সদস্য শাহজাহান কবীর ও ঢাকা নগর কমিটির নেতা রুখশানা আফরোজ আশা, নাসির উদ্দিন প্রিন্স, আনোয়ারুল ইসলাম প্রমুখ।

শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ শেষে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে ফিরোজ বলেন, ‘শহীদ জননী জাহানারা ইমাম যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও ধর্মের রাজনৈতিক ব্যবহার এবং ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করার যে আন্দোলনের সূচনা করেছিলেন, তা আজও প্রাসঙ্গিক। বিগত সরকারের সময়ে কতিপয় যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করলেও ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল ও রাজনীতিতে ধর্মের ব্যবহার নিষিদ্ধ করেনি।’

তিনি বলেন, ‘ধর্মভিত্তিক দলের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে, কে কত বেশি রাজনীতিতে ধর্ম ব্যবহার করবে—তার প্রতিযোগিতায় লিপ্ত শাসক শ্রেণির দলগুলো। স্বাধীনতার ৫৪ বছরে ক্ষমতাসীন বুর্জোয়া দলগুলো পালাক্রমে দেশ পরিচালনা করলেও তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিপরীতে কাজ করেছে।’ 

বাসদের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘গত বছর জুলাই-আগস্টে ফ্যাসিবাদী দুঃশাসনের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার এক গণঅভ্যুত্থানের পর বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের ১০ মাস অতিবাহিত হওয়ার পরও ধর্মান্ধ সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর আস্ফালন সীমা ছাড়িয়েছে। কথিত তৌহিদী জনতার নামে নারীদের পোষাক নিয়ে মোরাল পুলিশিং ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের ওপর নিপীড়ন বেড়ে গেছে।’

বজলুর রশীদ বলেন, ‘ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত, কথিত ধর্ম অবমাননার নামে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের শিক্ষকসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ সাম্প্রদায়িক অপশক্তি দ্বারা আক্রান্ত হচ্ছে। মব সন্ত্রাসে আতঙ্ক বিরাজ করছে, ২ দিন আগেও লালমনিহাটে নরসুন্দর পিতা-পুত্রকে লাঞ্ছনা করেছে উগ্র ধর্মান্ধ গোষ্ঠী।’

তিনি বলেন, ‘দুর্নীতিগ্রস্থ-দুর্বৃত্তায়িত আদর্শহীন বুর্জোয়া রাজনীতি দেশকে আজ চরম অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক দুর্গতি ও দুর্দশার জায়গায় এনে দাঁড় করিয়েছে।’

রাজনীতিতে ধর্মের ব্যবহার ও ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধসহ গণতন্ত্র, ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা ও মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত চেতনার বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম জোরদার করে শহীদ জননী জাহানারা ইমামের স্বপ্ন বাস্তবায়নের সংগ্রাম এগিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানান বজলুর রশীদ ফিরোজ।