‘ইউএমসেলস-ইউএপি স্প্রিং স্কুল-২০২২’ অনুষ্ঠানের সমাপ্তি

সাভারের বিরুলিয়ায় ‘আইন ও সামাজিক ন্যায়বিচার’ স্লোগানে ‘ইউএমসেলস-ইউএপি স্প্রিং স্কুল-২০২২’ অনুষ্ঠানের সমাপ্তি হয়েছে। গত ১৮ সেপ্টেম্বর শুরু হয়ে ২২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলা ওই অনুষ্ঠানে ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে আইন ও সামাজিক ন্যায়বিচারের ওপর বিভিন্ন বিষয়ে ব্যবহারিক জ্ঞান প্রদান করেন দেশের স্বনামধন্য ব্যক্তিত্বরা। এতে অংশ নেন বাংলাদেশের বিভিন্ন পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট ৫০ জন ছাত্র-ছাত্রী।

বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে রয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়, ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিক (ইউএপি)। এসব বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালিত ইউএম সেইলস এলএলএম প্রোগামের স্কলারশিপ-প্রাপ্ত এলএলএমের ছাত্র-ছাত্রীরা রয়েছেন। তাদের মধ্যে কিছুসংখ্যক ইন্ডিয়ান ও ভুটানি ছাত্র-ছাত্রীও এ আয়োজনে অংশ নিয়েছেন।

অনুষ্ঠানে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান বলেন এক্সেস টু জাস্টিস বা ন্যায় বিচার চাওয়ার অধিকার নিয়ে কথা বলেন। তিনি বলেন, এক্সেস টু জাস্টিস মানে হলো ফরমাল বা ইনফরমাল প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সর্ব সাধারণের ন্যায় বিচার চাইতে সক্ষম হওয়া। অর্থাৎ সমাজের অনগ্রসর জনগণসহ সর্বস্তরের মানুষের জন্য ফরমাল লিগ্যাল সিস্টেম বা নিয়ম মাফিক আইনি প্রক্রিয়া সর্বক্ষেত্রে সমানভাবে সচল রাখা। কারণ এক্সেস টু জাস্টিসের উদ্দেশ্য হলো সুন্দর সমাজ বিনির্মাণ, মানুষের অভিব্যক্তি শ্রবণ করা ও মানুষের সমস্যার সমাধান করা। অথচ আমরা প্রতিনিয়ত সমাজের দুর্বল বা দলিত জনগোষ্ঠীর ন্যায় বিচার চাওয়ার ক্ষেত্রে নানা ধরনের প্রতিবন্ধকতা দেখতে পাই।

ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিকের (আইন ও মানবাধিকার বিভাগ)সহযোগী অধ্যাপক এবং বিভাগীয় প্রধান ড. চৌধুরী ইশরাক আহমেদ সিদ্দিকী বলেন,জনগণের সাংবিধানিক প্রাপ্ত অধিকারগুলো বিভিন্ন আইন তৈরির মাধ্যমে সীমিত করে ফেলা হচ্ছে। যার পরিপ্রেক্ষিতে উচ্চ আদালত তার বক্তব্যে সরকার বা প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষকে উদ্দেশ করে বলেন, কাউকে তার বিচলন অধিকার থেকে বাধা দিতে হলে অবশ্যই তা সুনির্দিষ্ট আইনের স্পষ্ট ব্যাখ্যার মাধ্যমে কারণ দর্শিয়ে দেওয়া যেতে পারে, অন্যথায় নয়।

আইন ও শালিস কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক মো. নূর খান মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের কিছু বাস্তব চিত্র দেখা যায়। মানুষ স্বাধীনভাবে মত প্রকাশ করতে গিয়ে পুলিশসহ প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষের দ্বারা বিভিন্ন ধরনের হয়রানির শিকার হয়।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন ব্র্যাকের ভাইস চেয়ারপারসন অ্যান্ড অ্যাডভাইজর টু দ্য চেয়ারপারসন ড. আহমেদ মুশতাক রাজা চৌধুরী, ইকুয়ালিটি অ্যান্ড রাইটস ডিফেন্ডার অ্যান্ড সোস্যাল অ্যানালাইস্ট মিসেস শীফা হাফিজা,বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মো. শাহনেওয়াজ, বুয়েটের ডিপার্টমেন্টে অব ক্যামিকেল ইন্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. সাইয়েদা সুলতানা রাজিয়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফেকাল্টি অব ল অধ্যাপক ড. নাকীব মো. নাছরুল্লাহ,সাবেক সচিব ড. মাহফুজুল হক প্রমুখ।

অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন ইউএপির আইন ও মানবাধিকার বিভাগের প্রধান সহযোগী অধ্যাপক ড. চৌধুরী ইশরাক আহমেদ সিদ্দীকী।

অনুষ্ঠানের আয়োজন করে সাউথ এশিয়ান ইনস্টিটিউট অব অ্যাডভান্সড লিগ্যাল অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস স্টাডিজ (সেইলস), সেন্টার ফর ল গভরর্নেন্স অ্যান্ড পলিসি (সেলগেপ) এবং ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিক (ইউএপি)।