ক্যানসারের কাছে হার মানলেন বাংলাদেশের প্রথম অধিনায়ক

আর বেঁচে নেই শামীম কবির। দীর্ঘদিন যুদ্ধ করেও শেষ রক্ষা হলো না বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের প্রথম অধিনায়ক শামীম কবিরের। ক্যানসারের কাছে হার মেনে সোমবার সকালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন তিনি (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। শামীম কবিরের মৃত্যুতে ক্রীড়াঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

ধানমন্ডি ইডেন ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। তার ছেলে দেশের বাইরে অবস্থান করায় দেশে ফিরলে জানাজার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। তবে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে একটি জানাজা হবে বলে জানানো হয়েছে।

শনিবার বোর্ড সভার অনুমোদনক্রমে শামীম কবিরের সকল চিকিৎসা খরচের ব্যয়ভার বহনের ঘোষণা দেয় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। কিন্তু বাংলাদেশের প্রথম অধিনায়ক ক্রিকেট বোর্ডকে সেই সুযোগটিও দিলেন না। সিদ্ধান্তের ৩০ ঘণ্টার ব্যবধানেই তিনি পৃথিবী ছেড়ে চলে গেলেন।

শামীম কবির ইতিহাসের পাতায় ঢুকে যান ১৯৭৭ সালে। ইংল্যান্ডের এমসিসি দল ৩ দিনের প্রস্তুতি ম্যাচ খেলতে বাংলাদেশে এসেছিল। সেই সময়কার ঢাকা স্টেডিয়ামে (এখন বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম) বিদেশি কোনও দলের বিপক্ষে সেটাই ছিল বাংলাদেশ দলের প্রথম ম্যাচ। ওই ম্যাচে বাংলাদেশ দলকে নেতৃত্ব দেন শামীম কবির। আর তাতেই বাংলাদেশ জাতীয় দলের প্রথম অধিনায়ক হিসেবে ইতিহাসের পাতায় ঢুকে যান তিনি।

ক্রিকেট মহলে শামীম কবির নামে পরিচিতি পেলেও তার আসল নাম আনোয়ারুল কবির। জন্ম ১৯৪৫ সালে, নরসিংদীর বনেদি জমিদার পরিবারে জন্ম। পূর্ব পাকিস্তানের হয়ে তার প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে অভিষেক হয় ১৯৬১ সালে। খেলেছেন ’৬০-এর দশকের মাঝামাঝি পর্যন্ত। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে প্রথম ফিফটি (৬৪) ১৯৬৪ সালে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হয়ে পিআইএর বিপক্ষে। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে শামীম কবিরের সর্বোচ্চ ইনিংসটি ছিল ৮৯ রানের। পূর্ব পাকিস্তান সবুজ দলের হয়ে সেটা খেলেছিলেন পূর্ব পাকিস্তান রেলওয়ের বিপক্ষে।

ঢাকার ক্লাব ক্রিকেটে ঠিকানা ছিল আজাদ বয়েজ ক্লাব। শুধু খেলোয়াড় হিসেবেই তার ক্রিকেট জীবনের ইতি ঘটেনি, খেলোয়াড়ি জীবন শেষে সম্পৃক্ত হয়েছিলেন বিসিবিতেও। ১৯৮২ ও ১৯৮৬ সালের আইসিসি ট্রফিতে পালন করেন বাংলাদেশ দলের ম্যানেজারের দায়িত্ব। ক্রীড়াঙ্গনে অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ১৯৯৯ সালে পেয়েছেন জাতীয় পুরস্কারও।