তবুও ফুটবল: বেলারুশ, বুরুন্ডি, নিকারাগুয়ার পর তাজিকিস্তান

শুরু হয়ে গেল তাজিকিস্তানের ফুটবল মৌসুমচীন থেকে ইউরোপ, ইউরোপ থেকে আমেরিকা, বাকি এশিয়া, আফ্রিকা… গোটা পৃথিবী। প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের ভয়াল থাবায় মনুষ্য সভ্যতাই স্তব্ধ হয়ে পড়েছে। জীবনই যেখানে অচল, সেখানে খেলাধুলার জায়গা কতটুকু? পৃথিবীর কোথাও খেলাধুলা নেই, সব স্থাপনায় তালা, সামনে নির্ধারিত সব ক্রীড়া প্রতিযোগিতাই স্থগিত হয়ে গেছে। খেলোয়াড়েরাও আর সবার মতো করোনাভাইরাসের সঙ্গে প্রতিরোধ যুদ্ধ করছেন ঘরে অন্তরীণ থেকে।

না, কথায় একটু ভুল থেকে গেলো। পুরো পৃথিবীর খেলাধুলাই বন্ধ নয়। সারা বিশ্ব যখন করোনা আতঙ্কে নিশ্বাস ফেলছে, ফুটবল খেলা চলছে চারটি দেশে। বেলারুশ, নিকারাগুয়া আর বুরুন্ডিতে আগে থেকেই ফুটবল চলছিল। আজ এই তিন দেশের সঙ্গে যোগ দিলো মধ্য এশিয়ার দেশ তাজিকিস্তান। ফুটবলের সুবাদে ৯০ লাখ মানুষের দেশটির সঙ্গে বাংলাদেশের মৈত্রীর বন্ধন খুব দৃঢ়। রাজধানীর দুশানবের যে স্টেডিয়ামে আজ লিগ চ্যাম্পিয়ন ইশতিকলল ও রানার্সআপ খুজান্দ মৌসুম সূচনাকারী সুপার কাপ ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছে, সেই সেন্ট্রাল রিপাবলিকান স্টেডিয়ামে গিয়ে বাংলাদেশ দলও হরহামেশাই ফুটবল খেলে।

আজ সুপার কাপ ম্যাচ দিয়ে নতুন ২০২০ মৌসুম শুরু, কাল রবিবার ১০ দলের তাজিক লিগের উদ্বোধন হবে এখানেই। প্রথম দিনেই তিনটি ম্যাচ। করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে সতর্ক থাকতে লিগের সব ম্যাচই হবে দর্শকশূন্য বদ্ধ স্টেডিয়ামে।

সারা বিশ্বেই করোনার সংক্রমণ ছড়িয়েছে। পাশের দেশ উজবেকিস্তানেই ২০৫ জন করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে। তাজিকিস্তানে এখনও পর্যন্ত করোনা সংক্রমণের খবর পাওয়া যায়নি। এটাই তাজিক ফুটবল ফেডারেশনকে (এফএফটি) কাল বিলম্ব না করে পূর্বনির্ধারিত সূচিতে লিগ শুরু করে দিতে অনুপ্রাণিত করেছে। প্রায় সারা বিশ্বেই খেলাধুলা নেই, এর মধ্যে ফুটবল শুরু হলো, এতে তাজিক ফুটবলের জনপ্রিয়তা বাড়বে- রয়টার্সের কাছে উচ্ছ্বাসই প্রকাশ করেছেন  তাজিক ফুটবল ফেডারেশনের এক কর্মকর্তা। কারণ বিদেশি স্পোর্টস চ্যানেলগুলির কাছে সম্প্রচারসত্ব বিক্রির প্রস্তাব আসবে এবং তারা হয়তো সানন্দেই চুক্তি করতে পারবেন। তবে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নভুক্ত দেশটির ওই ফুটবল কর্মকর্তা এটাও বলেছেন, ‘এত আগেভাগেই নিশ্চিত করে যদিও কিছু বলা যায় না।’ 

করোনাপীড়িত সময়ে ফেডারেশনের মৌসুম শুরু করার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন টানা ছয় মৌসুম ধরে লিগ চ্যাম্পিয়ন ইশতিকলরের কোচ ভিতালি লেভশেঙ্কো, ‘স্রষ্টাকে ধন্যবাদ যে তাজিকিস্তানে করোনাভাইরাস নেই। আর সেজন্যই আমরা শুরু করতে পারলাম নতুন মৌসুম।’ দর্শকশূন্য মাঠে খেলা হবে, তাই করোনা কোনও প্রভাব ফেলবে না বলেই মনে করেন গত মৌসুমে ইশতিকললকে ঘরোয়া ‘ট্রেবল’ জেতানো কোচ।

এবারের তাজিক লিগে নিবন্ধিত বিদেশি খেলোয়াড়ের সংখ্যা ৪২। এদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ২০ জন প্রতিবেশী দেশ উজবেকিস্তানের খেলোয়াড়। সংখ্যায় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১০ জন ফুটবলার ঘানার। বিদেশি খেলোয়াড়দের মধ্যে করোনা-আতঙ্ক কাজ করছে। তবে ইশতিকললের উজবেক গোলকিপার মামুনুর ইকরামভের ভয়টা বেশি  তার দেশকে নিয়ে, পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনদের নিয়ে, ‘আমার মনটা উদ্বিগ্ন। আমার দেশবাসী, আমার পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনদের জন্য চিন্তা হচ্ছে। উজবেকিস্তানে ২০৫ জন করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে।’