বাংলাদেশের মাছের ঝোল অনেক মিস করি: ওয়াসিম

Wasim-Akram১৯৯২ বিশ্বকাপে পাকিস্তানকে শিরোপা জেতাতে ভূমিকা রেখে মহা তারকা বনে গেছেন ওয়াসিম আকরাম। এর তিন বছর পরই ঢাকা লিগে তাকে উড়িয়ে আনে আবাহনী। ক্রিকেট খেলতে এসে বাংলাদেশের মানুষের আতিথেয়তা ও ক্রিকেট সংস্কৃতি দেখে রীতিমত চমকে গিয়েছেন  ‘সুইং অব সুলতান’।

বিশ্বকাপ জেতার ৩ বছর পর বর্তমান অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালই তাকে অনেকটা জোর করে আবাহনীর হয়ে খেলতে নিয়ে আসেন। তামিমের ফেসবুক আড্ডায় সেসব অতীতের স্মৃতিচারণ করেছেন ওয়াসিম আকরাম।

তখন আবাহনীর হয়ে তিনি দুই ম্যাচ খেলেছিলেন। ব্রাদার্স ইউনিয়নের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচ খেলার পর আরেক ঐতিহ্যবাহী মোহামেডানের বিপক্ষেও খেলেছেন। প্রথম ম্যাচে ৩ উইকেট নেওয়ার সেই স্মৃতি ওয়াসিমের কাছে এখনও উজ্জ্বল, ‘প্রথম ম্যাচের স্মৃতি আমার স্পষ্ট মনে আছে। শেষ ব্যাটসম্যান বোল্ড হলেও আদতে বলটি ছিল নো। বলটা স্টাম্পে লেগে ফাইন লেগ দিয়ে সীমানার দিকে চলে গেলেও ফিল্ডার বল না ধরে উদযাপন শুরু করেছিল। ফিল্ডার ভেবেছিল আমরা ম্যাচ জিতে গিয়েছি। তাইতো ও উদযাপন করতে আমার দিকে ছুটে এসেছিল।’

মঙ্গলবার রাতে তামিম ইকবালের ফেইসবুক লাইভ আড্ডায় সাবেক তিন তারকা আকরাম খান, মিনহাজুল আবেদীন নান্নু ও খালেদ মাসুদ পাইলটও ছিলেন। সেই আড্ডারই বিশেষ অতিথি ছিলেন ওয়াসিম আকরাম। তার সময়কার সাবেক তিন ক্রিকেটারকে দেখে শুরুতেই সবার সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন পাকিস্তানের এই কিংবদন্তি।

ওয়াসিমের কাছে তামিমের শুরুতে প্রশ্ন ছিল, ‘‘ওই সময়তো বাংলাদেশের ক্রিকেট অতটা জনপ্রিয়তা ছিল না। কিন্তু তার পরও কেন বাংলাদেশে খেলতে এসেছিলেন?’ উত্তরে ওয়াসিম বলেছেন, ‘প্রথমত আমি দেখতে চেয়েছিলাম বাংলাদেশের ক্রিকেট কতটা জনপ্রিয়।  অর্থনৈতিক বিষয়টিও বড় ব্যাপার ছিল। আমার মনে আছে কামাল ভাই (বর্তমান অর্থমন্ত্রী মোস্তাফা কামাল) আমাকে হুট করেই আমন্ত্রণ করেন। উনি আমাকে চেপে ধরেন যে, ‘তোমাকে অবশ্যই মোহামেডানের বিপক্ষে আবাহনীর হয়ে খেলতে আসতে হবে।’’

ঢাকা লিগের প্রথম ম্যাচে ব্রাদার্সের বিপক্ষ খেলতে নেমেই এদেশের ক্রিকেটের প্রতি মানুষের উত্তেজনা কতটা সেটা টের পান এই কিংবদন্তি, ‘তামিম তুমি বিশ্বাস করবে না, প্রথম ম্যাচ যেটা খেলতে নামলাম, পুরো মাঠ দর্শকে পরিপূর্ণ। আমি দেখে মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলাম। আমি এর আগে ভারত, শ্রীলঙ্কা ও আমাদের দেশের ক্রিকেটারদের মুখে ঢাকার ক্লাব ক্রিকেটের কথা শুনেছি। পরিবেশ, উত্তেজনা….এসব। কিন্তু ঢাকার ক্লাব ক্রিকেট সেবারই প্রথম দেখেছি। সত্যিই মুগ্ধ হওয়ার মতো বিষয়।’

শুধু দর্শকদের উন্মাদনা দেখেই মুগ্ধ হননি ওয়াসিম। ক্রিকেট খেলতে এসে এদেশের মানুষের আতিথেয়তা ও ক্রিকেট সংস্কৃতি দেখে রীতিমত চমকেও গেছেন। প্রেমে পড়ে যান এদেশের খাবারেরও। প্রায় দুই যুগ আগে খাওয়া মাছের ঝোলের স্বাদ তিনি আজও ভুলতে পারেননি, ‘এদেশের মানুষ, খাবার সবকিছুকেই আমি নতুন করে আবিষ্কার করতে চাইতাম। এই দেশের মানুষ, খাবারের প্রতি আমার আকর্ষণ ছিল। আমি বাংলাদেশের মাছের ঝোল অনেক মিস করি।’