বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের হারিয়ে দিলো আয়ারল্যান্ড

আরেকবার ইংল্যান্ডকে হারালো আয়ারল্যান্ড। ইংল্যান্ডকে পেলেই দৈত্য বধের স্বাদ জেগে ওঠে আইরিশদের। তার প্রমাণ আবারও পাওয়া গেলো। ভাগ্য ভালো যে এক ম্যাচ হাতে রেখে ওয়ানডে সিরিজটা নিশ্চিত করে ফেলেছিল ইংলিশরা। কারণ শেষ ম্যাচে সবকটি উইকেট হারিয়ে ৩২৮ রানের পাহাড় গড়েও রক্ষে হয়নি বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের। রোমাঞ্চের জন্ম দিয়ে আইরিশরা ম্যাচ জিতেছে ৭ উইকেটে। তাতে সিরিজ নিষ্পত্তি হয়েছে ২-১-এ।

অবশ্য সিরিজ না জিতলেও ওয়ানডে সুপার লিগ হওয়ায় একটু হলেও লাভ হয়েছে আয়ারল্যান্ডের। লিগ শুরুর যাত্রায় ১০ পয়েন্ট পেয়ে গেছে তারা। আবার এই ইংল্যান্ডের বিপক্ষেই ওয়ানডেতে জয়ের স্বাদ পেয়েছে দ্বিতীয়বার। প্রথমবার ২০১১ বিশ্বকাপে একইভাবে রান তাড়া করে জিতেছিল আয়ারল্যান্ড। এবার তারা সেই জয়কেও পেছনে ফেলেছে। ওই ম্যাচটিতে ইংল্যান্ড করেছিল ৮ উইকেটে ৩২৭ রান। ইংল্যান্ড এবার করেছে ৩২৮। ওয়ানডেতে রান তাড়ার হিসেবে আইরিশদের এই জয়টিই এখন সর্বোচ্চ।

অ্যাজিয়াস বোলে ৩২৯ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ৫০ উইকেটে প্রথম উইকেটের পতন ঘটে আইরিশদের। এর পরেই শুরু স্টার্লিং-বালবার্নির বিধ্বংসী জুটি। সবচেয়ে বেশি বিধ্বংসী ছিলেন পল স্টার্লিং, ১২৮ বলে ১৪২ রানের নান্দনিক ইনিংস উপহার দিয়েছেন। তাতে ছিল ৯টি চারের মার ও ৬টি ছয়। ১১২ বলে ১১৩ রান করেছেন অধিনায়ক অ্যান্ড্রু বালবার্নি। দ্বিতীয় উইকেটের এই জুটিই ছিল মূল রসদ। ২১৪ রান আসে এখান থেকে।

স্টার্লিং যখন বিদায় নেন তখন প্রয়োজন ছিল ৬৫ রান। তার ১৫ রান পরে বিদায় নেন বালবার্নিও। এর পরেও পা হড়কায়নি সফরকারীরা। ইংল্যান্ডের জয়ের সুযোগ থাকলেও স্থিতধী মনোভাবের পরিচয় দিয়েই জয়ের দিকে এগিয়ে গেছে আয়ারল্যান্ড। শেষ ওভারে তাদের প্রয়োজন ছিল ৮ রান। কিন্তু কেভিন ও’ব্রায়েন ও হ্যারি টেক্টর অপরাজিত ৫০ রানের জুটি গড়েই ৪৯.৫ ওভারে নিশ্চিত করেছেন জয়। 

জয়ের পর জেমস ভিন্স আফসোস করতেই পারেন। কারণ ৯৫ ও ১৩৯ রানে স্টার্লিংয়ের ক্যাচ ফেলে দিয়েছেন তিনি। টেক্টরের ক্যাচও ১৯ রানে ফেলেছেন টম ব্যান্টন।

অথচ ইংল্যান্ডের শুরু দেখে বোঝার উপায়ই ছিল না এমন কিছু হতে পারে। ৪৪ রানে তিন উইকেট পতনের পর অধিনায়ক ইয়ন মরগানের ৮৪ বলে করা ১০৬ রান হোয়াইটওয়াশেরই সুবাস দিচ্ছিল স্বাগতিকদের। মরগানের ১০৬ ও ব্যান্টনের ৫৮ রানে তখন স্কোরবোর্ডে জমা পড়ে আরও ১৪৬ রান। এই দুজনের দ্রুত বিদায়ের পরই হঠাৎ বিপর্যয় নেমেছিল ইংলিশ শিবিরে। ২৬ রানে বিদায় নিয়েছেন ৪জন। যে দলটির স্কোর ২৭ ওভারে ৩ উইকেটে ছিল ১৯০ রান, সে দলটিই ২১৬ রানে হারিয়ে বসে ৭ উইকেট!  কিন্তু বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন বলেই হাল ছেড়ে দেওয়ার দল ছিল না ইংলিশরা। শেষ দিকে ডেভিড উইলির ৫১ ও টম কারানের অপরাজিত ৩৮ রানের সুবাদে ৪৯.৫ ওভারে ৩২৮ রানের পাহাড়ে চড়ে ইংল্যান্ড।

ম্যাচসেরা আয়ারল্যান্ডের পল স্টার্লিং ও সিরিজ সেরা ইংল্যান্ডের উইলি।