‘বড় শিক্ষা’ হয়েছে জোকোভিচের

জোকোভিচের আত্মোপলব্ধি -টুইটারভিডিওটি বারবার, হাজারবার দেখেও কেউ নোভাক জোকোভিচের ‘অপরাধের ইচ্ছা’ খুঁজে পাবেন না। প্রতিপক্ষ পাবলো কারেনো বুস্তার বিপক্ষে প্রথম সেটে পিছিয়ে পড়ে নিজের ওপরই ক্ষুব্ধ ছিলেন। কোর্ট বদলের সময় পেছন দিকে একটা বল মেরে দেন। ব্যস, ওটাই অব্যর্থভাবে লেগে গেল লাইন জাজের গলায়। দুই হাঁটু ভেঙে ভদ্রমহিলা পড়ে যান লাইনের বাইরে।

ইচ্ছাকৃত অপরাধ নয়, তবে আইন ভঙ্গ হয়েছে। আর এটা তো যে-সে প্রতিযোগিতা নয়, গ্র্যান্ড স্লাম, ইউএস ওপেন। বিশ্বের এক নম্বর পুরুষ টেনিস খেলোয়াড়, প্রতিযোগিতার শীর্ষ বাছাই খেলছেন চতুর্থ রাউন্ডে। কিন্তু ১৮তম গ্র্যান্ড স্লাম জিততে আসা সার্বিয়ান তারকাকে ভিন্ন কারণে পত্রপাঠ বহিষ্কার হতে হলো ইউএস ওপেন থেকে!

শুধু টেনিস কেন, বিশ্ব ক্রীড়াঙ্গনকেই তুমুল নাড়িয়ে দেওয়া এই ঘটনার পর কেটে গেছে আটটি দিন। জোকোভিচের হাতে শিরোপা উঠতে দেখার অপেক্ষায় থাকা টুর্নামেন্ট পেলো নতুন চ্যাম্পিয়ন-ডমিনিক টিম। ২৭ বছর বয়সী এই অস্ট্রিয়ান যখন তার প্রথম গ্র্যান্ড স্লাম হাতে ফটো সেসন করে বেড়াচ্ছেন, জোকোভিচ খেলছেন এটিপি টুর্নামেন্ট ইতালিয়ান ওপেনে।

করোনার কারণে পাঁচ মাস পিছিয়ে শুরু হওয়া রোমের এ প্রতিযোগিতায় প্রথম রাউন্ডে ‘বাই’ পেয়েছেন।  প্রথম ম্যাচে তার সামনে পড়তে পারেন ‘ওয়াইল্ড কার্ড’ নিয়ে আসা ইতালিয়ান খেলোয়াড় সালভাতোরে কারুসো অথবা বাছাইপর্ব উত্তীর্ণ কেউ। রোমের যে পাঁচতারকা হোটেলে আছেন জোকোভিচসহ অন্য পুরুষ খেলোয়াড়েরা, সেটির অবস্থান এক পাহাড় চূড়ায়। সেখান থেকে পুরো শহরটি দেখা যায় শান্ত চোখে। কিন্তু জোকোভিচ এখান থেকে যেন মনের চোখ দিয়ে ফিরে তাকালেন ইউএসওপেনের দিকে। সোমবার সাংবাদিকদের বলেছেন, ইউএস ওপেন থেকে বিরাট একটা শিক্ষা হয়েছে যা সারাজীবন তার মনে থাকবে। `শারীরিক পরিশ্রমের পাশাপাশি মানসিকভাবেও আমি কাজ করে চলেছি। কোর্টের ভেতরে বা বাইরে আমি নিজেকে সেরা হিসেবে পেতে চাই যা আমি ছিলাম সবসময়’- জোকোভিচকে এভাবে উদ্ধৃত করেছে সংবাদ সংস্থা এপি।

৩৩ বছর বয়সী সার্বিয়ান জানেন ঘটনাটা ‘অপ্রত্যাশিত এবং অনিচ্ছাকৃত’, কিন্তু নিয়মটাও জানেন বলে নিজের দোষ এড়িয়ে যাননি, ‘আপনি যখন একটি বল ওভাবে মারবেন, কোর্টের যেকারও গায়ে ওটা লাগার চান্স থাকে। আইনটা পরিষ্কার। সুতরাং আমি শাস্তি মেনে নিয়েছি। আমাকে ওসব ভুলে এগিয়ে যেতে হতো, সেটাই আমি করছি।’ কিন্তু ঘটনাটি আসলে কখনও ভুলতে পারবেন জোকোভিচ? কখনও নয়, তিনি নিজেই বলেছেন, ‘অবশ্যই আমি এটি ভুলে যেতে পারি না। আমার মনে হয় না কখনও পারবো, কারণ এটা এমন এক ঘটনা যা আপনার সারাজীবনের স্মৃতির মধ্যে থেকে যাবে।’