সাফ থেকে বাংলাদেশের বিদায়

saff-suzuki-cupটানা তৃতীয়বার সাফ চ‌‌‌াম্পিয়নশিপের গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নিল বাংলাদেশ। ভারতের কেরালার ত্রিবান্দ্রামে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে মালদ্বীপের কাছে ৩-১ গোলে হেরে টানা দ্বিতীয় পরাজয়ে এবারের সাফ থেকে ছিটকে পড়ল বাংলাদেশ। এ জয়ে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করল মালদ্বীপ।

বাংলাদেশ প্রথম একাদশে আফগানিস্তানের বিপক্ষে খেলা ম্যাচের একাদশে চারটি পরিবর্তন আনেন কোচ মারুফুল হক। নাসিরুল ইসলাম, নাসিরুদ্দিন চৌধুরি, ইয়ামিন মুন্না ও সোহেল রানার পরিবর্তে মাঠে নামেন, ওয়ালি ফয়সাল, রায়হান হাসান, তপু বর্মন ও জামাল ভূঁইয়া। 

খেলার নয় মিনিটে মালদ্বীপের ফরোয়ার্ড আসাদ উল্লাহ বল নিয়ে ঢুকে পড়েন বাংলাদেশ রক্ষণভাগে, ইয়াসিন খানকে পাশ কাটিয়ে তিনি বলের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন। গোলরক্ষক শহিদুল আলম সোহেল বল ক্লিয়ার করেন। বাংলাদেশের প্রথম সুযোগটি আসে ১১ মিনিটে, উইঙ্গার জাহিদ হোসেন তার গতিকে কাজে লাগিয়ে ডান প্রান্ত দিয়ে চলে আসেন মালদ্বীপ গোলমুখে, তবে মাটি কামড়ানো শটটি আছড়ে পড়ে সাইড নেটে।

 এরপর ম্যাচে বেশ কিছুক্ষণ আধিপত্য বিস্তার করে বাংলাদেশ। ২৬ মিনিটে ওয়ালি ফয়সালের বাঁ প্রান্ত থেকে করা ক্রসে হেড করেছিলেন জাহিদ হোসেন। লক্ষ্য ছিল ফাঁকায় দাঁড়ানো সাখাওয়াত হোসেন রনি। বলটি হয়তো জালেও যেতে পারতো, কিন্তু তা আঘাত হানে সাইড পোস্টে। এরপরের সুযোগটি নষ্ট করেন সাখাওয়াত হোসেন রনি, ২৮ মিনিটে হেমন্ত ভিনসেন্টের বল খুঁজে পেয়েছিল রনিকে। রনি অফসাইড ট্র্যাপ এড়ান তবে মালদ্বীপ গোলরক্ষক ইমরান মেহাম্মদ এগিয়ে এসে গ্যাপ কমিয়ে দেন। রনি বল মারেন তার শরীরে। ঠান্ডা মাথায় প্লেসিং করলে হয়তো গোলটি হতো কিন্তু তা পরিণত হয় কর্ণারে। 

মালদ্বীপ তখন বেছে নিয়েছে কাউন্টার অ্যাটাকের কৌশল, এরকম একটি পাল্টা আক্রমণইে এগিয়ে যায় তারা। দ্রুতগতির কাউন্টার অ্যাটাকে বাংলাদেশের রক্ষণ দূর্গে হানা দেন মিডফিল্ডার ইমাজ আহমেদ। বক্সের মাঝামাঝি তার বাঁ পায়ের শট আঘাত হানে ডিফেন্ডার ওয়ালি ফয়সালের হাতে। হাত শরীরের বাইরেই ছিল। সঙ্গত কারণেই পেনাল্টির নির্দেশ দেন রেফারি। এগিয়ে আসেন মালদ্বীপের নির্ভরযোগ্য নাম আলি আশফাক। তার পেনাল্টি শটটির গতিপথ ঠিকই আঁচ করতে পেরেছিলেন সোহেল। বলে হাতও ছোঁয়ান তিনি। কিন্তু তা বলের গতিপথ পরিবর্তন করানোর জন্য যথেষ্ট ছিল না। টুর্নামেন্টে নিজ দ্বিতীয় গোল উদযাপন করলেন আশফাক। 

দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই সমতা আনার চেষ্টায় আক্রমণাত্মক মেজাজে খেলতে থাকে বাংলাদেশ। দুই উইংয়ে জাহিদ ও হেমন্ত ভিনসেন্ট বেশকটি আক্রমণের সূচনা করেন। মালদ্বীপও এর মাঝে কয়েকটি ফ্রি কিক আদায় করে নেয় তবে খেলার স্কোরলাইনে পরিবর্তন আসেনি। ৭৩ মিনিটে মামুনুল ইসলামের ফ্রি কিকে ফ্লিক করেছিলেন রনি, ইমরান ঝাঁপিয়ে পড়ে দলকে বাঁচান। শেষ দিকে পুরোপুরি আক্রমণাত্মক মেজাজে চলে যান মারুফ। দুই অ্যাটাকার নাবিব নেওয়াজ জীবন ও সোহেল রানাকে মাঠে নামান। ৮৬ মিনিটে সমতা আনেন হেমন্ত।  মামুনুলের কর্ণার ক্লিয়ার করে মালদ্বীপ ডিফেন্স। হেমন্ত ভিনসেন্টের জোরালো শট মালদ্বীপ ডিফেন্ডার আলী আসাদের মাথায় লেগে জালে জড়ায়। সমতায় ফিরে বাংলাদেশ।

কিন্তু ৮৯ মিনিটে সাফের সেরা গোলের একটি করে আবারও দলকে এগিয়ে দেন নাইজ হাসান। কর্ণারের বলটি পেছনের পা দিয়ে ফ্লিক করে বিশ্বমানের একটি গোল করেন তিনি । আর ৪ মিনিট অতিরিক্ত সময়ের তৃতীয় মিনিটে বাংলাদেশের কফিনে শেষ পেরেকটি ঠুকেন আহমেদ নাশিদ। তার গোলে ৩-১ গোলে হেরে টানা তৃতীয়বারের মতো গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নেয় বাংলাদেশ। 

আগামী সোমবার ভুটানের বিপক্ষে গ্রুপপর্বের শেষ ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। টানা দুই হারে ওই ম্যাচটি শুধু এখন শুধু আনুষ্ঠানিকতা। 


/আরএম/এমআর/